২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
২৩২ কোটি টাকার নির্মাণকাজ ১৭ মাস বন্ধ

অবিলম্বে সেতুটি নির্মাণ করুন

-

কুড়িগ্রামে নির্দিষ্ট সময়ের পর দুই মাস পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুর কাজ। ফলে অদূরস্থ পুরনো ও নড়বড়ে, শতবর্ষী রেলসেতু দিয়ে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে ভারী যানবাহন চলছে। অথচ যেকোনো মুহূর্তে সেখানে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নয়া দিগন্তের ভুরুঙ্গামারী সংবাদদাতার পাঠানো খবরে এ তথ্যগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
জানা যায়, ২০১৮ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের কার্যনির্বাহী কমিটির (একনেক) এক বৈঠকে অনুমোদন করা হয়েছিল ভুরুঙ্গামারী উপজেলার স্থলবন্দর সোনাহাটগামী সড়কে দুধকুমার নদের ওপর একটি সড়ক সেতুর নির্মাণকাজ। সে মোতাবেক, ৬৪৫ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ২৩২ কোটি টাকা। সেতুর ১৩টি স্তম্ভ বা পিলার থাকার কথা। তা ছাড়া, দুই পাশে দুই হাজার ৩২০ মিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়ক এবং ৮১৪ মিটার তীররক্ষা বাঁধ তৈরি করার কথা রয়েছে। ২০১৯ সালের ২২ জুলাই যথারীতি সেতুর কাজ শুরু হয়ে যায়। সংযোগ রাস্তা ও বাঁধসমেত সেতু তৈরি করার কথা ছিল গত ২২ জানুয়ারির মধ্যে। কিন্তু সে সময় পার হয়ে আরো দুই মাস অতিক্রান্ত হলেও এক প্রান্তেও সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি আজো। শুধু পূর্ব প্রান্তে বাঁধের কাজ চলতে দেখা গেছে। এ দিকে সড়কে কোনো সেতু না থাকায় শতবর্ষ পুরনো রেলসেতুর ওপর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু ব্রিটিশ আমলের এ সেতু যে কোনো সময়ে ভেঙে গিয়ে মানুষের প্রাণহানি ঘটাতে পারে।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প পরিচালক বলেছেন, পিলার স্থাপনের আগে পাইলিং করতে হয়, যাতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে ভারী যন্ত্রপাতি। সমস্যা হলো, দুধকুমার নদের তলদেশের বালু চিকন। এ বালু ভারী যন্ত্রপাতির চাপ বহন করতে পারছে না। এ কারণে পাইলিং করার সময়ে ধস নেমেছে। এ অবস্থায় পাইলিং করা সম্ভব নয় এবং ১৭ মাস বন্ধ রয়েছে সেতুর নির্মাণকাজ। সংযোগ সড়ক তৈরি করা যাচ্ছে না জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন না করায়। তদুপরি পূর্ব তীরে বাঁধের কাজ শেষ হচ্ছে না।
ব্যবসায়ীসহ এলাকার বাসিন্দারা মনে করেন, নির্মাণকাজে যত সময় লাগবে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও দফতরের ‘ততই লাভ’। কেননা তখন তারা বারবার এ কাজের বরাদ্দ বা বাজেট বাড়ানোর সুযোগ পাবেন। এ জন্যই তারা বিভিন্ন অজুহাতে সেতুর নির্মাণকাজে অন্যায়ভাবে বিলম্ব ঘটাচ্ছেন। তাদের বক্তব্যমাফিক, সেতুর কেবল ডিজাইন ঠিক করতে দীর্ঘ ১৭ মাস লাগে না। সোনাহাট স্থলবন্দর আমদানি ও রফতানিকারক সমিতির সভাপতি জানিয়েছেন, নতুন সেতুর কাজ সম্পন্ন করার আগেই পুরনো রেলসেতুটা ভেঙে গেলে ব্যবসায়ীসহ এই এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতি বিষম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এ দিকে সওজের একজন প্রকৌশলীর বক্তব্য পাইলিং-এর সময়ে মিহি বালুতে যন্ত্রপাতি ও মাটি দেবে যায়। তাই সেতুর নকশার পর্যালোচনা প্রয়োজন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। ডিসি বলেছেন, জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে।
অবিলম্বে এ সেতু নির্মাণ করে জনদুর্ভোগ মোচন করা হবে বলে এলাকার মানুষ আশা করছে।


আরো সংবাদ



premium cement