২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট

বিশ্বব্যাপী আশার সঞ্চার

-

যুুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন জো বাইডেন। অবসান হয়েছে উদ্ভূত উত্তেজনাকর পরিস্থিতির। আমেরিকাসহ বিশ্ববাসীর প্রত্যাশা পূরণে তিনি কতটা সফল হবেন সেদিকেই এখন সবার নজর। বাইডেনকে স্বাগত জানাতে গিয়ে বিশ্বের প্রায় প্রত্যেক প্রান্ত থেকে নেতারা একই ধরনের মন্তব্য করছেন। সেটি হচ্ছে চার বছর পর ওয়াশিংটনে তারা তাদের এক শুভাকাক্সক্ষী আন্তরিক বন্ধু পেতে চলেছেন। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বহির্বিশ্বের সাথে আমেরিকার সম্পর্ক একেবারে খাদের কিনারায় নিয়ে গেছেন। বাইডেন তা আগের জায়গায় ফিরিয়ে নেয়ার পাশাপাশি আমেরিকার সমাজে সৃষ্ট গভীর বিভাজন সারানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বাস্তবে সেটি কতটুকু সম্ভব, সামনের দিনগুলোতে দেখা যাবে।
ট্রাম্প তার বিদায়ী ভাষণে বলেছেন, তিনি নতুন করে আমেরিকাকে যুদ্ধে জড়াননি। ঠিক এ কথাটির মধ্যে বিশ্বব্যবস্থায় আমেরিকার ত্রুটিপূর্ণ অবস্থানের ইঙ্গিত স্পষ্ট। সমসাময়িক ইতিহাসে আমেরিকার সবচেয়ে ভদ্র মানবতাবাদী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ও আমেরিকার যুদ্ধংদেহী অবস্থান বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করে। আধিপত্য বজায় রাখার নীতি থেকে তিনি সরে আসেননি। তাই তার সময়ে আমেরিকান সেনাদের বন্দুকের নলে কিংবা বোমার বিস্ফোরণে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনও অত্যন্ত জনপ্রিয় ও মনবতাবাদী হিসেবে পরিচিত হতে পেরেছেন। তার আমলেও দেশটির একই ধরনের নীতি দেখা গেছে। মাঝে দু’জন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ও তার পুত্র জুনিয়র বুশ আমেরিকার যুদ্ধবাজ নীতিকে জোরালো করেছেন। সাদ্দামের কাছে ভয়াবহ মারণাস্ত্র রয়েছে এমন মিথ্যা অভিযোগে আক্রমণ চালিয়ে ইরাককে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছেন। এই ধারায় আফগানিস্তান, সিরিয়া ও লিবিয়াকে তছনছ করে দেয়া হয়েছে। ট্রাম্পকে একজন মিথ্যুক বর্ণবাদী হিসেবে আখ্যা দেয়া হলেও তার আগের প্রেসিডেন্টরা বহির্বিশ্বে অসংখ্য মানুষ হত্যার জন্য দায়ী। সে দিক থেকে তারা ট্রাম্পের চেয়ে কতটা ভালো এই প্রশ্ন উঠতেই পারে।
আমেরিকা বিশ্বে গণতন্ত্রের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বলে দাবি করে। এখন বিশ্বজুড়েই গণতন্ত্রের হতশ্রী অবস্থা। গণতন্ত্রের নামে বেশির ভাগ দেশে চেপে বসেছে স্বৈরাচার। আমেরিকার সততার প্রশ্নটি এই ক্ষেত্রে বড় দাগে প্রশ্নবিদ্ধ। দেশটি নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থ ও আধিপত্য বিস্তারের জন্য যতটা ভূমিকা রাখে তার খুব সামান্যই গণতন্ত্র পরিচর্চার জন্য ব্যয় করে। নিজেদের স্বার্থে তারা অগণতান্ত্রিক নিপীড়কদেরও আনুকূল্য দিতে কার্পণ্য করে না। অন্য দিকে মানবাধিকারের প্রশ্নেও তারা সোচ্চার। কিন্তু সেখানেও প্রশ্ন আছে। কোনো সরকারকে পছন্দ না করলে সেই দেশের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলা আমেরিকার রাজনৈতিক কৌশল। সেটি এখন সবাই বোঝে। যেমন চীনের ক্ষেত্রে এ অস্ত্রটি তারা প্রয়োগ করছে উইঘুর মুসলমানদের প্রশ্নে। কিন্তু উইঘুরদের মানবাধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না। অন্য দিকে ভারতে ভয়াবহ সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রশ্নে ছাড় দিয়ে যাচ্ছে, কারণ চীনকে দমিয়ে রাখতে বন্ধু হিসেবে ভারতকে তার দরকার। এ ধরনের অবস্থান কোনোভাবে ন্যায্য হতে পারে না।
গণতন্ত্র ও মানবতার রক্ষক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র যে শোরগোল করে সেটি অকৃত্রিম হলে বিশ্বজুড়ে মানুষের মধ্যে এত হাহাকার থাকত না। আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এসব বিষয়ে কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবে রক্ষা করলে নিপীড়িত মানুষের কান্না নিশ্চয়ই কমবে। বিশ্ববাসীর মতো আমরাও আশা করতে চাই, আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট প্রকৃতই ন্যায়ের পক্ষে নিজেদের অবস্থান জোরালো করবেন। জন্ম দেবেন না আর কোনো ইরাক, সিরিয়া বা আফগানিস্তান অথবা ফিলিস্তিন।


আরো সংবাদ



premium cement
আদমদীঘিতে ২৩০ চালকল বন্ধ : বেকার ৭ হাজার শ্রমিক সাকিবে উজ্জীবিত বাংলাদেশের লক্ষ্য সিরিজে সমতা কুলাউড়ায় জঙ্গল থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধার ঈদগাঁওতে মাদককারবারি গ্রেফতার শিক্ষায় ব্যাঘাত : ফেসবুক-টিকটক-ইনস্টাগ্রাম-স্ন্যাপচ্যাটের বিরুদ্ধে ২৯০ কোটি ডলারের মামলা আমতলীতে কিশোরীকে অপহরণ শেষে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ৩ মহানবীকে কটূক্তির প্রতিবাদে লালমোহনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ক্রিমিয়া সাগরে বিধ্বস্ত হলো রুশ সামরিক বিমান জর্ডান আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশী বিচারক এবারের আইপিএলে কমলা ও বেগুনি টুপির লড়াইয়ে কারা সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে সন্ত্রাসনির্ভর হয়ে গেছে : রিজভী

সকল