২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান

পর্যায়ক্রমে খুলে দেয়া যেতে পারে

-

আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে সীমিত পরিসরে স্কুল-কলেজ চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী জানান, ফেব্রুয়ারিতে স্কুল খুলে দেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। এরপর এ বিষয়ে প্রস্তুতি শুরু হয়। আর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, আগামী মাস (ফেব্রুয়ারি) থেকে সীমিত পরিসরে শুধু পরীক্ষা গ্রহণের জন্য কিছু স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া হবে। তবে ফেব্রুয়ারিতে সব শিক্ষার্থীর ক্লাস শুরু হবে না। এ ক্ষেত্রে চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সিলেবাস শেষ করতে কয়েক ধাপে ক্লাস শুরু করা হবে। অন্যদের নিয়মিত ক্লাস শুরুর বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত বছর ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ওই মাসের ১৭ তারিখ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। পরে সে ছুটি বেশ কয়েক দফায় বাড়িয়ে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে। জানা গেছে, এই ছুটিও বাড়তে পারে। ফলে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কবে নাগাদ পুরোদমে পাঠদান শুরু হবে তা এখনো অনিশ্চিত। তবে দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর শুধু পরীক্ষার্থীদের জন্য সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হচ্ছে এটাও আশার কথা।
বাস্তবতা হলো, মহামারীর কারণে দীর্ঘ দিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অন্য দিকে অনলাইন কিংবা দূরশিক্ষণের মাধ্যমে সব শিক্ষার্থীকে নিয়মিত পঠনের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। এ দিকে বিশ্বব্যাপী শিক্ষা কার্যক্রমের ওপর পরিচালিত গবেষণায় সম্প্রতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পক্ষে মত দিয়েছে ইউনিসেফ। সংস্থাটি বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাপকভাবে করোনা সংক্রমণের তথ্য খুব কমই আছে। এ অবস্থায় বিদ্যালয়গুলো খোলার বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়া এবং শিশুদের যথাসম্ভব নিরাপদ রাখতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে। দেশেও স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার দাবি জোরালো হচ্ছে। শিক্ষাসংশ্লিষ্ট মহলের অভিমত, যেহেতু দেশের অভ্যন্তরে করোনাপূর্ব আগের মতো সব কিছু চলছে; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও শর্তসাপেক্ষে খুলে দেয়া যেতে পারে। দৃষ্টান্ত হিসেবে বলা হচ্ছে, কওমি মাদরাসার শিক্ষাকার্যক্রম ফের শুরু করার পর করোনা সংক্রমণের মাত্রা বেড়েছে এমনটা শোনা যায়নি। তাই সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও খুলে দেয়া যেতে পারে।
অন্য দিকে দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পড়েছে সঙ্কটে। ইতোমধ্যে ৪০ হাজার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের উপক্রম হয়েছে। গত এক দশকে শিক্ষা খাতে যে অর্জন তা ম্লান হতে চলেছে ১০ মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বহু ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে তাতে সন্দেহ নেই। অথচ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অন্যতম লক্ষ্য গুণগত শিক্ষা, যা ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের অর্জন করতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের অনেক শিক্ষাবিদ মনে করেন, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়টি জোরালোভাবে বিবেচনা করতে হবে। অবশ্য দেশীয় প্রেক্ষাপটে করোনা সংক্রমণের বাস্তবতা আমলে নিয়েই এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে ভেবেচিন্তে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে পরিবেশ নিরাপদ করাও জরুরি। এ ক্ষেত্রে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সবার কথা বিবেচনায় রেখে ঝুঁকি প্রশমন করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে স্বাস্থ্যবিধি।
শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ফের শুরু করলেও অনলাইনে পড়াশোনার ব্যবস্থাও রাখতে হবে। এমনও হতে পারে, সপ্তাহে তিন দিন সশরীরে এবং তিন দিন অনলাইনে ক্লাস নেয়া যেতে পারে। কারণ, শিক্ষা শুধু তথ্য জানার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। নানা প্রকার মিথস্ক্রিয়ায় এটি অর্জিত হয়। এই মিথস্ক্রিয়া শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়েই সম্ভব। বিদ্যালয় শুধু শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করে না, শিক্ষার্থীর নৈতিকতা, আচরণ, সামাজিক মূল্যবোধসহ বিভিন্নভাবে তাকে গড়ে উঠতে সহায়তা করে। তাই বলা যায়, সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার দ্রুত স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় খোলার প্রক্রিয়া শুরুর বিকল্প নেই। এভাবে পর্যায়ক্রমে সব স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে হবে। একই সাথে অভিভাবক ও শিক্ষাসংশ্লিষ্টদের সচেতনতা বাড়াতে বড় ধরনের প্রচারাভিযান এখনই শুরু করা জরুরি।


আরো সংবাদ



premium cement
গাজায় সাহায্য বাড়াতে ইসরাইলকে নির্দেশ আইসিজের দিল্লি হাইকোর্টে কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা খারিজ বস্ত্র-পাট খাতে চীনের বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ জামালপুরে সাব রেজিস্ট্রারকে হত্যার হুমকি মামলায় আ’লীগ নেতা গ্রেফতার গাজায় অনাহার যুদ্ধাপরাধ হতে পারে : জাতিসঙ্ঘ ‘প্রত্যেককে কোরআনের অনুশাসন যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে’ মতলব উত্তরে পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের শেষ ধাপের পরীক্ষা শুক্রবার লম্বা ঈদের ছুটিতে কতজন ঢাকা ছাড়তে চান, কতজন পারবেন? সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করলেন ভুটানের রাজা বছরে পৌনে ৩ লাখ মানুষের মৃত্যু দূষণে

সকল