২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বাড়ছে সাইবার অপরাধ

বেশির ভাগ ভুক্তভোগী নারী

-

বর্তমানে মানুষের জীবনযাত্রার অনেকটাই অনলাইন-নির্ভর হয়ে পড়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহার বা অনলাইনে মানুষের অভ্যস্ততা বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে দেশে সাইবার অপরাধও বাড়ছে। সাইবার অপরাধ আমাদের দেশে এক নতুন প্রবণতা। তবে এ ধরনের অপরাধ রোধে একাধিক আইন করা হয়েছে। তার পরও সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। বিশেষ করে নারীরা সাইবার অপরাধের শিকার বেশি হচ্ছেন বলে পুলিশের এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে।
আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সূত্রমতে, সাইবার অপরাধে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ছয় হাজার ৯৯টি মামলা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারের ঘটনা কিছুটা কমলেও এখনো তা আশঙ্কাজনক। বিশেষ করে করোনার প্রাদুর্ভাবে ইন্টারনেটের বহুমাত্রিক ব্যবহার যেকোনো সময়ের চেয়ে বেড়ে যাওয়ায় সাইবার অপরাধীদেরও আনাগোনা বহু গুণে বেড়েছে। সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস (সিসিএ) ফাউন্ডেশনের জরিপে দেখা গেছে, ভার্চুয়াল জগতে দেশের প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে বর্তমানে ১১ ধাপে সাইবার অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। যার মধ্যে চারটি নতুন ধরনের অপরাধ। ধারণা করা হয়ে থাকে, সাইবার অপরাধের শিকার ৮০ শতাংশ ভুক্তভোগী ভয় ও সামাজিক মর্যাদাহানি হতে পারে এমন আশঙ্কায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর শরণাপন্ন হচ্ছেন না।
ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতা না থাকায় খুব সহজে নিজেকে আড়ালে রেখে সাইবার অপরাধ করছে মানুষ। অপরাধীরা বেশির ভাগ সময় থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। অনেকসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ করেও এর কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না। ফলে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে সাইবার অপরাধী চক্র। এ অপরাধের শিকার শুধু সাধারণ মানুষ হচ্ছেন এমন নয়, অনেকসময় দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও এর শিকার হচ্ছেন। আর একটি দিক লক্ষণীয়, পুরুষের তুলনায় নারীরাই বেশি সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন। এক পরিসংখ্যানের তথ্যানুযায়ী, সাইবার অপরাধে ভুক্তভোগীদের প্রায় ৭০ শতাংশই নারী। সিআইডিতেই প্রতিদিন গড়ে সাইবার অপরাধ-সংক্রান্ত ৫০-৬০টি অভিযোগ জমা হচ্ছে। অথচ সাইবার অপরাধ দমনে দেশে চারটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে সাইবার ইউনিট। তবু সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
পুলিশ সদর দফতরের হিসাবে, দেশে সাধারণত ১৩ ধরনের সাইবার অপরাধের ঘটনা ঘটছে। এর মধ্যে রয়েছে পারিবারিক বিদ্বেষ সৃষ্টি, স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া, বন্ধু-বান্ধবের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি, উগ্র ও বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য প্রচার, ইউটিউবে অন্তরঙ্গ ভিডিও ও ছবি আপলোড, ফেক অ্যাকাউন্ট তৈরি, পাসওয়ার্ড বা গোপন নম্বর অনুমান করে আইডি হ্যাক, মোবাইল ব্যাংকিং, ই-কমার্স, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি, অনলাইন এমএলএম (মাল্টি লেভেল মার্কেটিং), অনলাইনে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও অনলাইন গ্যাম্বলিং (জুয়া)। অন্য দিকে, সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, বর্তমানে ভার্চুয়াল জগত ব্যবহারকারীদের মধ্যে ১১ ধাপে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
অপরাধ বিশেষজ্ঞদের অভিমত, সাইবার অপরাধ দমনে আমাদের যে প্রস্তুতি থাকার কথা তা নেই। একই সাথে পর্যাপ্ত রিসোর্স, দক্ষ জনবল এবং প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামোর অভাবও প্রকট। যদিও পুলিশ বিভাগ, সিআইডি এ-সংক্রান্ত কার্যক্রম দেখাশোনা করে থাকে। কিন্তু তাদের সাইবার অপরাধ নিয়ে বিশেষায়িত প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম যথেষ্ট উন্নত নয়। এই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আরো আগেই প্রযুক্তিগত সক্ষমতা গড়ে তোলা উচিত ছিল; কিন্তু তা এখনো সম্ভব হয়ে ওঠেনি। আমরা মনে করি, সাইবার অপরাধ দমনে পুলিশের তরফ থেকে সরকারের কাছে সাইবার থানা গঠনের যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তা দ্রুত বিবেচনায় নিয়ে গঠন করা জরুরি। একই সাথে সাইবার অপরাধ দমনে দরকার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। কেবল তখনই সম্ভব হবে সাইবার অপরাধ কমিয়ে আনা। এ ব্যাপারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদেরও সতর্ক থাকা প্রয়োজন।


আরো সংবাদ



premium cement
গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের পর ২ হাজার ফিলিস্তিনি নিখোঁজ ৯ বছর পর সৌদি আরবে আসছে ইরানি ওমরা কাফেলা দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা : প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের হামলার নিন্দা হেফাজতে ইসলামের ভর্তি পরীক্ষায় জবিতে থাকবে ভ্রাম্যমাণ পানির ট্যাংক ও চিকিৎসক মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশীরা কারা? কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের ২৫ দিন পর উদ্ধার যুবকের লাশ উদ্ধার ভুয়া সনদ সিন্ডিকেট : কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যানকে ডিবির জিজ্ঞাসাবাদ ঢাকার পয়োবর্জ্য-গ্যাস লাইন পরীক্ষায় কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রয়োজন ৫৩৪ বিলিয়ন ডলার : পরিবেশমন্ত্রী সাকিবকে ডিপিএলে চান বিসিবি প্রধান নির্বাচক কাতারের সাথে যৌথ বাণিজ্য কাউন্সিল গঠনে এফবিসিসিআইয়ের চুক্তি

সকল