২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ফেনীতে নলকূপ প্রকল্পে লুটপাট

সব দুর্নীতি রুখতে হবে

-

আর্সেনিক দূষণ বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটা মারাত্মক সমস্যা। সুপেয় পানি নিশ্চিত করার পথে এটা একটা বিরাট বাধা। কিন্তু বিশেষত ফেনীতে সংশ্লিষ্ট গভীর নলকূপ প্রকল্পের সরকারি কার্যক্রমে দুর্নীতি ও অনিয়মের নানা অভিযোগ রয়েছে। নয়া দিগন্তের ফেনী অফিসের পাঠানো প্রতিবেদনে এ প্রসঙ্গে আরো জানানো হয়েছে, এ ব্যাপারে জনপ্রতিনিধিদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা যায়, ফেনী জেলার তিনটি উপজেলায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের আওতায় ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে চার হাজার ১৮৮টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হচ্ছে। অভিযোগে প্রকাশ, কার্যাদেশের কোনো তোয়াক্কা না করে ঠিকাদাররা ‘ইচ্ছামতো’ এ কাজ করছেন। প্রত্যেক গভীর নলকূপের জন্য সাত হাজার টাকা করে জমা দেয়ার নিয়ম বেঁধে দিয়েছে সরকার। তবে কার্যত আদায় করা হচ্ছে এর দ্বিগুণ থেকে শুরু করে পাঁচ গুণ পরিমাণ অর্থ। তা ছাড়া সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের খাবার বাবদ এবং অন্যান্য অজুহাতে প্রতিটি নলকূপের জন্য তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে বেশি আদায় করা হচ্ছে। সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে সরেজমিন খোঁজ নিয়ে এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। আলোচ্য প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভালুকিয়া গ্রামের এক বাড়িতে প্রকল্পটির ভয়াবহ অনিয়মের চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে। এ বাড়ির একজন বাসিন্দা ঠিকাদারের লোকজনদের ৩৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। একই বাড়ির দু’ভাই যথাক্রমে ৯ হাজার ও ১৫ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন নলকূপের জন্য। কিন্তু ১৫ মাসেও এবং বারবার ধরনা দেয়ার পরও নলকূপ বসানো হয়নি। এক বৃদ্ধের অভিযোগ, অন্তত ৫০ বার গিয়ে নলকূপের ট্যাংক ও মোটর পেলেও বৈদ্যুতিক তার পাওয়া যায়নি আজ পর্যন্ত। বরং তারা দুর্ব্যবহারের শিকার হচ্ছেন। দমদমা গ্রামের এক গৃহবধূ বলেন, ‘বাড়িতে নলকূপের পাইপ বসানো হয়েছে মাসখানেক আগে। কিন্তু আজো মোটর বা ট্যাংক দেয়া হয়নি।’
একজন ইউপি চেয়ারম্যান জানান, আমার ইউনিয়নে দেড় শ’ নলকূপের মাত্র তিনটি বসানো হয়েছে। আরেকজন চেয়ারম্যান বলেছেন, কয়েকটি নলকূপের পাইপ বসানো হলেও একটি নলকূপও চালু করা হয়নি। আর মোটর বা ট্যাংক নেই একটারও। একটি উপজেলার একজন ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের বক্তব্য, ২২টি নলকূপ বসানো হলেও এর বেশির ভাগই অসম্পূর্ণ। জানা গেছে, কোথাও কোথাও ইউপি চেয়ারম্যানদের এড়িয়ে ঠিকাদার নিজেই ‘বাড়তি টাকা’ নিয়ে খেয়াল খুশিমতো কাজ করেছেন। একজন চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, ‘আমি প্রকল্পের তালিকা জমা দেয়ার আগেই ঠিকাদার লোকজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নলকূপ স্থাপন করেছেন। ফলে আমার তালিকাটি বাদ পড়ে গেছে।’
এ দিকে জানা যায়, প্রত্যেক নলকূপের ৭২০ ফুট গভীরতা, ২২০ বর্গমিটার প্লাটফর্ম পাকা হওয়া এবং দেড় ইঞ্চি মোটর ও ৫০০ লিটার ধারণক্ষম ট্যাংক স্থাপন করা বাধ্যতামূলক। দেখা গেছে, কোনো নলকূপে কার্যাদেশ অনুসারে কাজ হয়নি। একেকটি নলকূপ স্থাপনের জন্য বরাদ্দ এক লাখ ১৪ হাজার ৮০০ টাকা। এক সূত্রে জানা গেছে, কাজ শেষ হওয়ার আগেই পুরো বিল দিতে রাজি না হওয়ায় ঠিকাদারের দ্বারা লাঞ্ছিত হলেন সদর উপজেলা প্রকৌশলী। অভিযোগ, ‘ঠিকাদাররা প্রভাবশালী। তাই তাদের অনিয়ম সম্পর্কে জেনেও কর্মকর্তাদের নীরব থাকতে হয়।’ অপর দিকেÑ ঠিকাদারদের কারো কারো বক্তব্য, এক প্রকৌশলী ঘুষ চাওয়ায় কাজ হচ্ছে মন্থরগতিতে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেছেন, লিখিত অভিযোগ না পেলে আমরা কী করতে পারি?
জনগণের প্রত্যাশা, আলোচ্য প্রকল্পসহ সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতি দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে এবং এ ব্যাপারে কোনো অন্যায় প্রভাব বা পক্ষপাত প্রশ্রয় পাবে না।

 


আরো সংবাদ



premium cement
গফরগাঁওয়ে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার তীব্র মাত্রায় হিংস্র হয়ে উঠেছে সরকার : মির্জা ফখরুল মিরসরাইয়ে মৃত্যুর ১৫ দিন পর ব্যাংক কর্মকর্তার কবর থেকে লাশ উত্তোলন দেশে দেড় হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং, দুর্ভোগে মানুষ রংপুরে মহানবী সা:-কে নিয়ে কটূক্তি করায় ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেফতার বাড়ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি, অনলাইনে ক্লাস চালুর চিন্তা বিশ্বের অন্যতম স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনা হবে বাংলাদেশে : ধর্মমন্ত্রী সিলেটে ৪৪ লাখ টাকার ভারতীয় চিনিসহ গ্রেফতার ৪ অবৈধ সম্পদ : এস কে সিনহার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ২৬ জুন টি-টোয়েন্টি র‌্যাংকিংয়ে চাপম্যান-আফ্রিদির উন্নতি থানচিতে ট্রাকে দুর্বৃত্তদের গুলি

সকল