১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বিভিন্ন স্থানে অবাধে বালু উত্তোলন

ভাঙন তীব্র করে তুলেছে

-

বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের নদী ও খালে একশ্রেণীর অর্থগৃধণু অবিবেচক মানুষ বেপরোয়াভাবে বালু উত্তোলনে মেতে উঠেছে। ফলে বিশেষ করে বছরের এই সময়ে ভাঙন হয়ে উঠেছে ভয়াবহ। এতে প্রতিদিন বহু বসতবাটি, ফসলি জমি, গাছপালা, রাস্তাঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও কাঠামো পানিতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এই লোভী ব্যবসায়ীদের বেশির ভাগই রাজনৈতিকভাবে প্রতাপশালী এবং পরিবেশ ও জনস্বার্থের বিষয়ে অপরিণামদর্শী। প্রতিনিয়ত পত্রপত্রিকায় ভাঙন ও বালু তোলা নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন ও ফিচার ছাপা হলেও প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ তেমন চোখে পড়ে না।
একটি জাতীয় দৈনিকে নমুনা হিসেবে নেত্রকোনার সোমেশ্বরী নদী থেকে ফ্রি স্টাইলে বালু উত্তোলন এবং এর ফলে জনজীবনে সৃষ্ট দুর্গতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এমন দৌরাত্ম্য ও দুর্ভোগ দেশের প্রায় সর্বত্র। প্রধানত ক্ষমতার প্রশ্রয়ে এবং কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার সুযোগে কিছু লোকের কারসাজিতে এ সঙ্কটের জন্ম ও বিস্তার।
আলোচ্য প্রতিবেদনে দেশের উত্তর-পূর্ব জনপদের গুরুত্বপূর্ণ নদী সোমেশ্বরীর ভাঙন কিছুতেই না থামার প্রধান কারণ হিসেবে এ নদীর দুই কিলোমিটার জুড়ে কয়েক হাজার ড্রেজার দিয়ে প্রতিদিন বালু তোলাকে দায়ী করা হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ সূত্রে জানানো হয়, নদী থেকে বালু এবং সেই সাথে কয়লা ও পাথর অপরিকল্পিত উপায়ে উত্তোলনে সোমেশ্বরীর দু’তীর ভেঙে যাচ্ছে। পানি কমার সাথে সাথে স্রোতের তীব্রতা যায় বেড়ে। ফলে কয়েক বছরেই ভিটামাটি হারাতে হলো কয়েক শ’ পরিবারকে। পাউবো কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বিজয়পুরে বিজিবির ফাঁড়ি থেকে দুর্গাপুর পৌরসভার শিবগঞ্জ বাজার পর্যন্ত নদীর দু’তীর ভাঙছে সারা বছর। পাঁচ বছরের ভাঙন গ্রাস করেছে বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বৃক্ষসম্পদ, ধর্মীয় ও ব্যবসায়প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, বহু গ্রামের ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এই নদীর ভাঙনরোধে এ মুহূর্তে জরুরি উদ্যোগ নেয়া না হলে আরো সাতটি গ্রাম হারিযে যেতে পারে। দুর্গাপুর সদরের কোনো কোনো এলাকার অধিকাংশই নদীতে চলে গেছে। ফলে অন্তত দেড় শ’ পরিবার হারিয়েছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। মসজিদ-এতিমখানা-গোরস্তানও বিলীন হয়ে গেছে ভাঙনের কবলে। এলাকার ভাগ্যহত বাসিন্দাদের কেউ কেউ জমি ও বাড়ি হারিয়ে অন্যের দয়ায় কোনো মতে বেঁচে আছেন। যাদের ভিটে এখনো টিকে আছে, তা কখন নদী গ্রাস করে নেয়, সে দুশ্চিন্তায় তাদের দিন কাটছে। অচিরেই টেকসই বাঁধ দেয়া না হলে অনেক কৃষক ও ব্যবসায়ীকে আবাদি জমি কিংবা দোকানপাট হারিয়ে পথে বসতে হবে। ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রেমন্ড আরেং বলেন, ‘ভাঙনের দরুন বাঁচা যাচ্ছে না, ৩-৪ বার বাড়িঘর সরিয়ে নিলেও। অবৈজ্ঞানিক পন্থায় বালু পাথর-কয়লা তোলা হলে উপজেলা শহরও হুমকির মুখে পড়বে।’ এলাকাবাসী বাঁশের বেড়া দিয়ে ভাঙনরোধের চেষ্টা চালাচ্ছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ‘সোমেশ্বরীর তিনটি পয়েন্টে সাড়ে তিন শ’ মিটার জুড়ে ৪০ লাখ টাকার জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ দেয়া হয়েছে। এখন ভাঙন আবার শুরু হয়েছে। স্থায়ী বাঁধের জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।’
আমাদের প্রত্যাশা, সোমেশ্বরীসমেত দেশের সব নদী ও খালের ভাঙনরোধ এবং অপরিকল্পিত বালু-পাথর-কয়লা তোলা বন্ধ করতে অবিলম্বে সরকার কার্যকর ও কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এ জন্য নিয়মিত নজরদারি ও ত্বরিত পদক্ষেপের বিকল্প নেই।


আরো সংবাদ



premium cement
মাতৃভূমি রক্ষা করা আমাদের প্রধান কর্তব্য : সেনাপ্রধান ব্রিটিশ হাই কমিশনারের সাথে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ১ হাজার টাকার জন্য পেশাদার ছিনতাইকারীরা খুন করে ভ্যানচালক হারুনকে দেশের মানুষ পরিবর্তন চায় : মতিউর রহমান আকন্দ টানা ১১ জয়ে ডিপিএলের প্রথম পর্ব শেষ করলো আবাহনী দেশে করোনায় আরো একজনের মৃত্যু উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনের অংশ নিতে মানা সবল-দুর্বল ব্যাংক একীভূত করার কাজ শেষ হতে কত দিন লাগবে? জনগণের শক্তির কাছে আ'লীগকে পরাজয় বরণ করতেই হবে : মির্জা ফখরুল টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় মেরিনা তাবাসসুম বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেয়ার অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল কাদের

সকল