২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
করোনা সংক্রমণ স্তিমিত হয়নি

অসতর্কতা বিপজ্জনক হতে পারে

-

কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বজুড়ে যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা মানুষের জন্য দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। একের পর এক সংক্রমণ ও মৃত্যুর খবর শুনতে শুনতে আতঙ্কের সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। দম বন্ধ করা পরিস্থিতির মধ্যে আছি আমরা। সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা কমে আসছে। তাতে মানুষ কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে। সবকিছু স্বাভাবিক করে তোলার একটি চেষ্টাও দেখা যাচ্ছে সরকারের কর্মকাণ্ডে। সরকারি চাকুরেদের অফিসে হাজির হতে বলা হয়েছে। যানবাহন চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক। ১৬ আগস্ট থেকে পর্যায়ক্রমে সব আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু হবে। মানুষ খোলা জায়গায় বেরিয়ে মুক্ত হাওয়ায় শ্বাস নিতে শুরু করেছে। কিন্তু সেই মুক্ত হাওয়া ভাইরাসমুক্ত কি না তার নিশ্চয়তা কী?

গণমাধ্যমের খবরে যেসব তথ্য মিলছে তাতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ কমার আভাস খুব একটা পাওয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় মৃত্যুহার কমেনি। বরং ভারতের মতো দেশে সেটি ক্রমবর্ধমান। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল প্রভৃতি দেশে এখনো করোনা মহামারী পুরোমাত্রায় বিদ্যমান। বাংলাদেশের অনেক জায়গায় সংক্রমণ বাড়ার খবর আসছে। কোরবানির ঈদের পর খুলনায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ফের বাড়ছে। গত রোববার সন্ধ্যার পর খুলনা মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবে আগের ২৪ ঘণ্টায় ২৮২টি টেস্টের বিপরীতে ১০৫ জনের পজিটিভ রিপোর্ট আসে। গত ৬ আগস্ট থেকে রোববার পর্যন্ত প্রতিদিনই আগের পাঁচ দিনের চেয়ে শনাক্তের পরিমাণ বেড়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে রোববার সময়কালে করোনায় তিন এবং উপসর্গ নিয়ে আরো দু’জনের মৃত্যু হয়। ঈদের পর চুয়াডাঙ্গায় ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে করোনাভাইরাস। প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে শহর থেকে গ্রামে। আগে সংক্রমণের হার পৌর এলাকা বা শহরে বেশি থাকলেও এখন সেটি প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে পৌঁছেছে। ফলে বেড়েছে সামষ্টিক সংক্রমণ। যশোরের চৌগাছায় স্বাস্থ্য সহকারীসহ নতুন করে আরো ছয়জন  কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। এই প্রবণতা আরো অনেক জায়গায় দেখা যাচ্ছে বলে পত্রপত্রিকায় খবর আসছে। 

কোভিড-১৯ মহামারী যে এখনো স্তিমিত হয়নি এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ দেশে প্রতিদিনের মৃত্যুর পরিসংখ্যান। প্রতিদিনই ৩০-৩৫ জন করে মারা যাচ্ছে। এর মধ্যে এক দিন তো ৫০ জনের মৃত্যু ঘটে। তার পরও স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, করোনার প্রভাব কমছে। ফলে এরই মধ্যে দেশে করোনা পরীক্ষায় মন্থরতা এসেছে। দৈনিক পরীক্ষার সংখ্যা এখন ১০ হাজারের মধ্যে নেমে গেছে। এর অর্থ হলো, আমরা করোনার বিপদটা সেভাবে গ্রাহ্য করছি না। এটি আমাদের জন্য নতুন বিপদ ডেকে আনতে পারে। 

একই সাথে বিশ্বের পরিস্থিতির দিকেও একবার নজর দেয়া দরকার। প্রতিবেশী দেশ ভারতে গত রোববার এক দিনে আক্রান্ত ৬৪ হাজার ৩৯৯ জন। এক দিনে মৃত্যু হয়েছে আরো ৮৬৩ জনের। উপর্যুপরি চার দিন ধরে প্রতিদিন ৬০ হাজারের বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৬৬ জনে একজন কোভিড-১৯ আক্রান্ত। মারা গেছে এক লাখ ৬৫ হাজার। ব্রাজিলে করোনায় মৃত্যু লাখ ছাড়িয়েছে। করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারীতে এ পর্যন্ত বিশ্বের ২১৫টি দেশ ও অঞ্চল আক্রান্ত। বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা দুই কোটি ছুঁই ছুঁই। এখনো উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকায় সংক্রমণ বাড়তির দিকেই। ইউরোপেরও কোনো কোনো এলাকায় নতুন করে রোগটির প্রাদুর্ভাব ঘটছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্বে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষ না ফেরার দেশে চলে গেছে। এ পরিস্থিতিতে সতর্কতার কোনো বিকল্প এখনো নেই। কিন্তু এ ক্ষেত্রে শৈথিল্য দেখা যাচ্ছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।  

ভয়াল এ ভাইরাসে দৃশ্যমান উপসর্গ ছাড়াও কিন্তু মানুষ মরছে। বাংলাদেশেও তেমন পরিস্থিতি দেখা দেবে না এর নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু উপসর্গ বা লক্ষণ প্রকাশ পায়নি এমন করোনা রোগী শনাক্তের কোনো প্রক্রিয়া আমাদের দেশে নেই। তাই উপসর্গহীন করোনায় কত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে সেই হিসাব আমরা হয়তো কখনোই পাবো না।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ধুনটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বৃদ্ধের মৃত্যু বাকৃবির এক্স রোটারেক্টরর্স ফোরামের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠিত পাবনায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড, হিট স্ট্রোকে মৃত্যু ১ দাগনভুঞায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তির ঘটনায় আ’লীগ নেতাকে শোকজ দখলে থাকা ৪ গ্রাম আজারবাইজানকে ফিরিয়ে দেবে আর্মেনিয়া স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে স্ত্রীর আত্মহত্যা! কুলাউড়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে নারীর মৃত্যু যেসব এলাকায় রোববার ১২ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে পলাশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মনা, সম্পাদক রনি তীব্র গরমে আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না বগুড়া পশ্চিম সাংগঠনিক জেলা জামায়াতের উদ্যোগে ভার্চুয়ালি রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সকল