১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ফাঁস হওয়া প্রশ্নে হচ্ছে ডাক্তার

অবৈধ উপায় আর কত দিন

-

বাংলাদেশে কয়েকটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে বরাবর সবার ধারণা ছিল উঁচু। এখানে পড়াশোনার মানের পাশাপাশি উচ্চ নৈতিক মানও প্রশংসিত ছিল। এসব প্রতিষ্ঠানের একটি ভালো ভাবমর্যাদা বিদেশে ছিল। সে জন্য বিদেশ থেকেও আগ্রহ নিয়ে অনেক শিক্ষার্থী বাংলাদেশে পড়তে আসতেন। বলা যায়, এর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল দেশের চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। স্বাস্থ্য অধিদফতর দুর্নীতির একটি আখড়ার পরিণত হওয়ার খবরটি সবার এখন জানা। সাহেদ ও সাবরিনাদের আনাগোনা মানুষ আগেই টের পেয়েছে। এর পরও এমবিবিএস ডিগ্রি দেয়া মেডিক্যাল কলেজে ভালো শিক্ষার্থীদের ভর্তি হওয়া এবং তাদের উন্নত পাঠদান এগুলোতে কোনো দুর্নীতি হচ্ছে না; এমন বিশ্বাসই মানুষের ছিল। কারণ এগুলোও যদি শেষ হয়ে যায় তাহলে সর্বগ্রাসী দুর্নীতির বাইরে আর কিছু থাকে না। শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদফতরে ভয়াবহ সব দুর্নীতির খবরের মধ্যে জানা যাচ্ছে, মেডিক্যাল প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে আসছে।
২০১৫ সালে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের নিশ্চিত তথ্য দিচ্ছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। একেবারে প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সুমনকুমার দাস এই তথ্য জানাচ্ছেন। তার দেয়া তথ্যমতে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ছাপাখানা থেকে মেডিক্যাল ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। সিআইডি প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। ছাপাখানার এক মেশিনম্যান ও তার এক নিকটাত্মীয় মিলে সারা দেশে একটি চক্র গড়ে তোলেন। সিআইডির দেয়া তথ্যমতে ওই সময় অর্থের জোরে শত শত ছাত্র মেডিক্যাল ও ডেন্টালে ভর্তি হন। তবে এই মূল অপরাধীদের গ্রেফতার করা যায়নি। সিআইডির দেয়া তথ্যমতে মাঠপর্যায়ে একেবারে নিচু স্তরের সরকারি কর্মচারীর যোগসাজশে এটি ঘটেছে। বাস্তবে এ ধরনের কাজের সাথে যে প্রভাবশালী একটি মহল জড়িত তা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। অন্য দিকে, সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা দায়িত্ব নিয়ে এই প্রশ্ন ফাঁসকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পরিবর্তে সেটা আড়াল করার চেষ্টা করেছেন বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। ২০১৫ সালে প্রশ্ন ফাঁসের পরে শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন। ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের কপিও প্রকাশ্যে দেখানো হয়েছিল। তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে স্বাস্থ্য অধিদফতরের দায়িত্বশীলরা প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ গায়ের জোরে উড়িয়ে দেন। আন্দোলনকারী ছাত্রদের দাবি উপেক্ষিত হয়, দুর্নীতি করে অনেকে মেডিক্যালে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়ে যান। সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাচ্ছে, ২০১৭ সালেও মেডিক্যাল ও ডেন্টালের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ ওই সময় প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি অগ্রাহ্য করলে নাগরিক সমাজের উদ্যোগে গণতদন্ত কমিটি করেছিল। ওই তদন্তে তারা ২০১৫ সালের ফলে অনেক অনিয়ম ত্রুটি তুলে ধরেন। ওই সব তথ্যপ্রমাণ সরকারের কাছে কোনো গুরুত্ব পায়নি। এরপর মেডিক্যালের প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে আরো নানা তথ্য ফাঁস হয়েছে। এই ধারণাই এখন মানুষের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে মেডিক্যালে এখন আর ফেয়ার প্রতিযোগিতা হয় না। প্রত্যেক বছরে দুর্নীতির মাধ্যমে অনেকে মেডিক্যালে ভর্তি সুযোগ নিয়ে নিচ্ছে। এভাবে একজন যদি ডাক্তার হন তিনি কী চিকিৎসা দেবেন মানুষকে?
সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে গ্রেফতার হওয়া নি¤œবিত্তের এসব মানুষের কাছ থেকে চেক ও বড় অ্যামাউন্টের অর্থ গচ্ছিত থাকার কথা জানা যাচ্ছে। সিআইডি বলছে, ফাঁস করা প্রশ্নপত্র বিক্রি করে তারা এই বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন। চতুর্থ শ্রেণীর এই মানুষেরা মেডিক্যালে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে শত শত ছাত্রকে অবৈধভাবে ভর্তি করার সুযোগ উপরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আঁতাত ছাড়া করে ফেলবেন এমনটা কেউ বিশ্বাস করে না। আমাদের পুরো চিকিৎসাব্যবস্থায় এখন দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। এ থেকে মুক্তি পেতে হলে বড় ধরনের পরিবর্তন দরকার। এ ধরনের আমূল পরিবর্তনের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু এভাবে আর কতদিন চলবে?


আরো সংবাদ



premium cement
তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বিএনপি : কাদের রৌমারীতে বড়াইবাড়ী সীমান্তযুদ্ধ দিবস পালিত

সকল