২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
পিপিইসহ বিপুল বর্জ্য

পরিবেশ রক্ষার উদ্যোগ নিন

-

পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক বর্জ্যরে ব্যবস্থাপনা নিয়ে জোরালো আলোচনা চলছে। বিশেষত পলিথিন বর্জ্য মানবজাতির জন্য শেষ পর্যন্ত এক ভয়াবহ বিপর্যয় নিয়ে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সে জন্য পলিথিন ব্যবহার কমানোর কথা বলা হলেও বাংলাদেশে পলিথিনের ব্যবহার বিপুল পরিমাণে বেড়ে গেছে। এ নিয়ে পরিবেশ সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে সতর্ক করা হলেও সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া নেই। ফলে আমরা চলেছি এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে। এর মধ্যে চলমান করোনাকালে এর ব্যবহার আরো বেড়েছে। করোনা প্রতিরোধের সুরক্ষাসামগ্রীর প্রায় সবই কৃত্রিম পলিমার তন্তু থেকে তৈরি। এসব পিপিই বা সুরক্ষাসামগ্রীর বেশির ভাগ কয়েকবার ব্যবহার করার পর আর ব্যবহার করা যায় না। কোনো কোনোটি মাত্র ওয়ানটাইম ব্যবহারের জন্য তৈরি করা। এ অবস্থায় প্রতিদিন বিপুল বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। এর ব্যবহার কমানো এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা করা না গেলে দেশের পরিবেশে বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনবে।
করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে বাজারে অনেক পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে মাস্ক, ফেসশিল্ড, গাউন, হ্যান্ড গ্লাভস, হেড কাভার, গগলস, সু-কাভার প্রভৃতি। পলিমার থেকে তৈরি হওয়ায় এগুলো পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এর বাইরে এগুলো করোনা ছড়ানোর উপযুক্ত। সে জন্য এগুলো আলাদা করে ব্যবস্থাপনা করার প্রয়োজন রয়েছে। ব্যবহারকারী এবং এসব বর্জ্য সংগ্রহকারী উভয়ের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা দরকার। নেটওয়ার্ক অন ক্লাইমেট চেঞ্জ ইন বাংলাদেশ নামক একটি বেসরকারি সংস্থার জরিপে দেখা যাচ্ছে, মাত্র অর্ধেকের কম ব্যবহারকারী এ বর্জ্য আলাদাভাবে সংগ্রহ করছেন। অন্য দিকে, অর্ধেকের বেশি ব্যবহারকারী এটি অন্যান্য বর্জ্যরে মতোই ফেলে দেন। ঢাকায় করোনা বর্জ্যরে যত্রতত্র ছড়াছড়ি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। আবর্জনা সংগ্রহকারী সিটি করপোরেশনের ভাগাড়গুলোতে এগুলো পাওয়া যাচ্ছে। রাস্তাঘাটে ও উন্মুক্ত জায়গায়ও এ ধরনের বর্জ্য দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। এ দিকে সিটি করপোরেশনের যেসব পরিচ্ছন্নতাকর্মী এগুলো সংগ্রহ করেন তাদের ৬১ শতাংশের বেশি এই বর্জ্যরে ব্যাপারে আজো সঠিক ধারণা রাখেন না।
রাজধানী ঢাকার ৯৭ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ করোনা সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবহার করছে। তাতে বোঝা যায়, এই বর্জ্যরে পরিমাণ কত বিশাল। ওই জরিপে জানা যায়, প্রতি মাসে শুধু রাজধানী শহরে ছয় হাজার টনের বেশি করোনা বর্জ্য জমে। কিন্তু এই বর্জ্য সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত করার জন্য সিটি করপোরেশনের আলাদা কোনো তাগিদ নেই।
পলিথিনের বর্জ্য আমাদের জলাভূমি ধ্বংস করে ফেলছে। ঢাকা শহরের প্রত্যেকটি পানির উৎস পলিথিনে পূর্ণ হয়ে আছে। বৃষ্টি হলেই আমরা এটা টের পাই। কিন্তু এই পলিথিন দীর্ঘ মেয়াদে সমগ্র পরিবেশে ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বিশাল বর্জ্যরে স্তূপ জমার খবর সচিত্র প্রকাশিত হয়েছে। সৈকতের প্রায় দশ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে এ বর্জ্যরে স্তূপ দেখা গেছে। সেখান থেকে শতাধিক অসুস্থ কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ধরনের আবর্জনার কারণ কী, সেটি নিয়ে তদন্ত হয়নি। এটা ব্যবহৃত পলিথিনের কারণে কি না তা অচিরেই খতিয়ে দেখা দরকার।
করোনা সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবহারের ফলে ক্ষতিকর বর্জ্য নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ পাচ্ছে। অনেকে এই বর্জ্যরে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ক্ষতিকর দিকটি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। আমরা মনে করি, পলিথিনসহ পরিবেশের জন্য যত রকম ক্ষতিকর বর্জ্য আছে তার সব নিয়ে সরকারের একটি সামগ্রিক ভাবনা থাকা দরকার। পলিথিনের ব্যবহার যে হারে বেড়েছে, তা আমাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এ ব্যাপারে সরকার যেমন বেখবর সাধারণ মানুষও গাফেল। কিন্তু এর মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের বসবাসস্থলসহ পরিবেশকে একসময় দূষিত করে ফেলবে। তখন এর প্রতিকার করা কঠিন হবে। তবে এখন আমরা পলিথিনের ব্যবহারের ওপর নিয়ন্ত্রণ করে এর দূষণকে কমিয়ে আনতে পারি। সে ব্যাপারে সরকারের জোরালো উদ্যোগ এবং জনগণের সচেতনতা দরকার।


আরো সংবাদ



premium cement
ভর্তি পরীক্ষায় জবিতে থাকবে ভ্রাম্যমাণ পানির ট্যাংক ও চিকিৎসক মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশীরা কারা? কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের ২৫ দিন পর উদ্ধার যুবকের লাশ উদ্ধার ভুয়া সনদ সিন্ডিকেট : কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যানকে ডিবির জিজ্ঞাসাবাদ ঢাকার পয়োবর্জ্য-গ্যাস লাইন পরীক্ষায় কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রয়োজন ৫৩৪ বিলিয়ন ডলার : পরিবেশমন্ত্রী সাকিবকে ডিপিএলে চান বিসিবি প্রধান নির্বাচক কাতারের সাথে যৌথ বাণিজ্য কাউন্সিল গঠনে এফবিসিসিআইয়ের চুক্তি টি-২০ খেলতে সিলেটে পৌঁছেছে ভারতীয় নারী ক্রিকেট দল খুলনায় হিটস্ট্রোকে এক ব্যক্তির মৃত্যু ভারতের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কী বলল যুক্তরাষ্ট্র?

সকল