গতবারের পুনরাবৃত্তি নয়
- ১৫ জুলাই ২০২০, ০০:০০
গত বছরের মতো এবারো পানির দরে অর্থাৎ নামমাত্র দামে কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া কেনার জন্য আড়তদার চক্র বা সিন্ডিকেট এখন তৎপর। নানা অপকৌশলে চামড়া কেনার নামে লোক ঠকানোর প্রস্তুতি চলছে। উল্লেখ্য, গতবার সরকারের বেঁধে দেয়া দামে চামড়া না কেনায় বিশেষ করে চট্টগ্রামসহ অনেক স্থানে কোরবানির কাঁচা চামড়ার একটা বড় অংশই অবিক্রীত অবস্থায় থেকে যায়। সে সময় ক্ষোভে-দুঃখে অনেক কোরবানিদাতা, মৌসুমি ব্যবসায়ী এবং মাদরাসা-এতিমখানা কর্তৃপক্ষ রাস্তাঘাট, ড্রেন ও ডাম্পিং স্টেশনে বহু চামড়া ফেলে দেন। এ অবস্থায়, পচে যাওয়া লাখখানেক পশুর চামড়া বন্দরনগরীর ময়লার ভাগাড়ে জমা হয়েছিল। এর দাম চার কোটি টাকা।
পত্রপত্রিকা সূত্রে আরো জানা যায়, মুনাফালোভী ও অর্থগৃধনু আড়তদারদের একটি সিন্ডিকেট সুপরিকল্পিতভাবে তখন চামড়ার দাম কমিয়ে দেয়ায় এতগুলো চামড়া বিনষ্ট হয়েছিল এবং এতে মূলত এতিম-মিসকিনসহ একেবারে গরিবরাই বঞ্চিত হয়। এবারো একই ষড়যন্ত্রের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
‘ক্যাব’-এর চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি নাজের হোসাইন বলেছেন, ‘বহু দিন যাবৎ বিশেষত চট্টগ্রামে কোরবানির চামড়া নিয়ে বিভিন্ন কারসাজি চলছে। ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের একটি চক্র কম দামে চামড়া নিয়ে বিপাকে ফেলে দেয় কোরবানিদাতা ও খুদে ব্যবসায়ীদের। এমন প্রেক্ষাপটে গতবার অনেকে এ চামড়া বিক্রি করতে ব্যর্থ হন। সিন্ডিকেট অবিলম্বে দমন করতে না পারলে ছোট ব্যবাসয়ীদের বঞ্চিত হতে হবে আবার। তখন তারা কোরবানিদাতাদের কাছ থেকে পশুর চামড়া কিনতে চাইবেন না। এতে আবার মূল্যবান বহু চামড়া নষ্ট হয়ে যাবে।’
সাধারণত ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশে বেশির ভাগ চামড়া সংগৃহীত হয়ে থাকে। দেশে এর একটি বড় উৎস চট্টগ্রাম অঞ্চল। প্রতি বছর চট্টগ্রামে কোরবানির সময়ে পাঁচ লাখের বেশি কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করা হয়। একসময়ে এ বাজারে চামড়ার মূল্য ছিল ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকা। কিন্তু গত কয়েক বছর মাঠপর্যায়ে দাম কমতে কমতে চামড়ার বাজারে লেনদেন অর্ধেকে নেমে এসেছে। বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়াও ফেনী-নোয়াখালীর কাঁচা চামড়াও মৌসুমি ব্যবসায়ী ও ফড়িয়াদের হাত ঘুরে চট্টগ্রাম নগরে আসে। এখানকার আতুরার ডিপো, হামজারবাগ, অক্সিজেন প্রভৃতি স্থানে দুই শতাধিক আড়ত রয়েছে চামড়ার। কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের সংগঠনের ১১২ জনসহ মোট ২০০ জনের মতো আড়তদার কোরবানির চামড়া কিনে থাকেন। তারা লবণ মাখিয়ে চামড়া কিছু দিন রেখে পরে বিক্রি করে দেন ট্যানারিতে।
তবে অভিযোগ রয়েছে, একটি সিন্ডিকেট প্রত্যেক বছর ঈদের সময় শেষ মুহূর্তে চামড়ার বাজারে দাম নি¤œমুখী করে তুলছে। মৌসুমি ছোট ব্যবসায়ীরা কিছু আয়ের আশায় শহরের পাড়ামহল্লা এবং মফস্বল এলাকা থেকে চামড়া কিনে আনেন। কিন্তু তখন আড়তে চামড়ার দাম এত কমে যায় যে, বহু চামড়া আর সেখানে বিক্রি করা যায় না। ফলে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যায়। গতবার গ্রাম থেকে দু-তিন শ’ টাকা দরে চামড়া কিনে নগরীর আড়তে মাত্র ৫০ টাকা দামেও বেচতে পারেননি মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। ফলে অনেক জায়গায় চামড়ার স্তূপ জমে ওঠে, যা সরাতে সিটি করপোরেশনকে হিমশিম খেতে হয়েছে। এ দিকে, আড়তদাররা ট্যানারি মালিকদের দায়ী করে বলেছেন, ‘তাদের নির্ধারিত দামেই আমাদের কিনতে হয় কোরবানির চামড়া।’
গত বছরের মতো চামড়ার বাজারে যাতে আর ধস না নামে, এ জন্য প্রশাসন এখনই কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে জনগণ আশা করছে। অন্যথায় মূলত এতিমসহ গরিব জনগোষ্ঠী বঞ্চনার শিকার হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা