শতভাগ কাজে লাগাতে হবে
- ০৪ জুলাই ২০২০, ০০:২৮
করোনায় বিশ্ব-অর্থনীতি নড়বড়ে হয়ে গেছে। মহামারীর প্রভাবে বিশ্ব-অর্থনীতিতে বিরাট পরিবর্তন আসছে। এখনই শুরু হয়েছে নতুন অর্থনৈতিক মেরুকরণ ও বিনিয়োগের বহুমুখীকরণ। এ ছাড়া কোভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাবে মানুষের জীবনযাপনের ধরনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। বেড়েছে মাস্ক বা মুখোশের ব্যবহার। মাস্ক ছাড়াও যে পণ্যগুলোর ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে এর মধ্যে আছে মেডিকার্ট রোবট এবং জীবাণুনাশক রিমোট কন্ট্রোল ইউভি-সি সিস্টেম, ভেন্টিলেটর বা অক্সিজেন সরবরাহকারী যন্ত্র, ফেস প্রটেকটিভ শিল্ড, সেফটি গগলস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও থার্মোমিটার। করোনার উৎপত্তিস্থল চীন হওয়ায় দেশটি থেকে পণ্য আমদানিতে অনেক দেশ অনীহা দেখাতে পারে। এতে বাংলাদেশের সম্ভাবনার নতুন দ্বার খুলতে পারে। বিশ্বব্যাপী মাস্ক, পিপিইসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রীর বাজার চীনের দখলে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে চীন বাজার হারানোর শঙ্কায় রয়েছে। পিপিই উৎপাদনের নতুন কেন্দ্রস্থলে পরিণত হতে পারে বাংলাদেশ। এতে এই সঙ্কটকালেও বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থনীতি সচল থাকার এক সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। দেশের গার্মেন্ট খাতের ৪১ লাখ শ্রমিকের বিশাল কর্মিবাহিনীও ভালোভাবে জীবনযাপন অব্যাহত রাখতে পারবেন।
মহামারী পরিস্থিতিতে পণ্যের বৈশ্বিক চাহিদা কমে আসায় মুখ থুবড়ে পড়েছিল দেশের রফতানি খাত, বিশেষ করে তৈরী পোশাকের রফতানি। তবে বিশ্ব মহামারী পরিস্থিতি রফতানি খাতে কিছু সম্ভাবনাও নিয়ে এসেছে। রফতানি তালিকায় যুক্ত করেছে নতুন কিছু পণ্য, বিশেষ করে ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণ (পিপিই) হিসেবে যার চাহিদা অনেক বেড়েছে বিশ্বব্যাপী। করোনার প্রকোপে পশ্চিমা অনেক ব্র্যান্ড বাংলাদেশের গার্মেন্টস থেকে অর্ডার বাতিল করেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন দেশের পোশাক শ্রমিকরা। বেশ কিছু পোশাক কারখানা এ সময় সবচেয়ে প্রয়োজনীয় পিপিই তৈরি করে সঙ্কটকালে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এখন মাস্ক, গ্লাভস ও গাউনের মতো পিপিই তৈরি করে রফতানি করছে বাংলাদেশের পোশাক কারখানা। বিশ্ববাজারে পিপিই’র চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পোশাক কারখানার মালিকরা আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। পশ্চিমা গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী, অনেক তৈরী পোশাক কারখানা এখন পুরোদমে সুরক্ষা উপকরণ উৎপাদনের কাজে নেমেছে। তৈরী পোশাক খাতের অনেক প্রতিষ্ঠান পিপিই পণ্য উৎপাদন সক্ষমতা অর্জন করেছে। তবে এ কথা মনে রাখতে হবে, পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে নতুন এসব পণ্যের মাধ্যমে রফতানিতে বৈচিত্র্য আনতে হবে আমাদের; এতে ক্রেতা আকৃষ্ট করা সহজ হবে। আগামী এক বছর এ ধরনের পণ্যের চাহিদা থেকেই যাবে। ফলে সুরক্ষা উপকরণ, মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট পণ্যগুলো রফতানি ঝুড়িতে নতুন সংযোজন হবে। এ ছাড়া করোনার প্রেক্ষাপটে বিশ্বে খাদ্যশস্যের উৎপাদন কমে যাবে আগামী বছরগুলোতে; বিশ্ব সংস্থার এমন পূর্বাভাসে খাদ্যশস্য রফতানি নিয়েও কাজ শুরু করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ হিসেবে আমাদের চালের রফতানি বাড়তে পারে। আলুর রফতানিও বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে।
যেখানে সমস্যা, সেখানেই সম্ভাবনার বীজ লুকিয়ে থাকে; শুধু খুঁজে নিতে হয়। করোনার কারণে সৃষ্ট নতুন এই সম্ভাবনাকে আমাদের শতভাগ কাজে লাগাতে হবে। এ জন্য চাই সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে তৎপরতা। নতুন বাজার সৃষ্টিতে সরকারের তরফ থেকে শুধু প্রণোদনা দিলেই হবে না, স্বাস্থ্যগত দিক দিয়ে আরো উন্নত হতে হবে আমাদের। কারণ, আমরা যদি ভালোমতো করোনা মোকাবেলা করতে না পারি; তাহলে বিদেশীরা বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিতে আগ্রহী হবে না। নতুন এই সম্ভাবনার সুফল আমরা যদি কাজে লাগাতে না পারি সেটি হবে আমাদের জন্য চরম দুর্ভাগ্যের। সরকার নতুন উদ্যোগ নিয়ে নামতে পারে। বিশেষ করে সম্ভাবনাময় রফতানি পণ্যের তালিকা নিয়ে। সেগুলোর উৎপাদন বাড়ানো ও বিশ্ববাজারে ক্রেতা ধরার জন্য যাবতীয় কর্মকাণ্ড হাতে নিতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা