২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
হাসপাতালে বিশেষ বরাদ্দে অনিয়ম

করোনাকালের দুর্নীতি ক্ষমার অযোগ্য

-

প্রত্যেকটি সেক্টরে একদল লোক হাঁ করে বসে আছে সরকারি অর্থ দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করার জন্য। মহামারী করোনার ভয়াবহতার মধ্যে মানুষ অন্ততপক্ষে জঘন্য অপরাধ করবে না এমন ধারণাও অমূলক প্রমাণিত হয়েছে। প্রথমে আমরা দেখলাম, করোনাকালে দুস্থ হয়ে যাওয়া মানুষের জন্য বরাদ্দের ত্রাণ গায়েব করে দিচ্ছে। ত্রাণ চোরদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া গেল না। এরপর খোদ করোনা থেকে বাঁচার জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী ক্রয় ও সরবরাহে আরো বেশি করে দুর্নীতি ঘটল। নিম্নমানের সুরক্ষাসামগ্রী দিয়ে মেডিক্যাল কর্মীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলা দেয়া হলো। শেষ পর্যন্ত এখন দেখা যাচ্ছেÑ করোনকালীন স্বাস্থ্যসেবার জন্য বিশেষ বাজেটের অর্থ আত্মসাতের চেষ্টায়ও একদল পিছিয়ে নেই। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে করোনা চিকিৎসায় বিশেষ তহবিলের অর্থ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
করোনাকালে আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগের দুর্বলতা প্রকাশ হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষ মহামারীর মধ্যে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই সময়ে যারা সাধারণ রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের জন্য কোনো চিকিৎসা মিলছে না। আর করোনা রোগীদের চিকিৎসা পাওয়া আরো দুরূহ। করোনার লক্ষণ নিয়ে অনেকে হাসপাতালে হাসপাতালে ছুটে গেছেন। শেষ হাসপাতালের সামনে কিংবা রাস্তায় প্রাণ হারিয়েছেন। এটি একটি দুঃখজনক চিত্র, কিন্তু করোনার মধ্যে আমাদের দেশে নিয়মিত তা ঘটে চলেছে। স্বাস্থ্যব্যবস্থার এ দুর্বলতা বাংলাদেশের ডাক্তারদের অদক্ষতা বা কেবল পেশাদারিত্বের অভাবের কারণে হচ্ছে এমনটা নয়। বরং আমাদের টোটাল স্বাস্থ্য-ব্যস্থাপনার দুর্বলতার কারণে প্রধানত এমনটা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত বাইরে থেকে আসা বিশেষজ্ঞ টিমও এ ব্যাপারে মন্তব্য করেছে। ওই মন্তব্যে আমাদের ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা স্পষ্ট প্রকাশ হয়ে পড়েছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে বিশেষভাবে করোনা চিকিৎসায় ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সংবাদমাধ্যমের খবরে দেখা যাচ্ছেÑ চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর এই জরুরি অবস্থায় দায়িত্ব পালনের জন্য এই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। হোটেলে থাকা-খাওয়া এবং হাসপাতালে আনা-নেয়ার জন্য এই অর্থ খরচ হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া হিসাবে দেখা যাচ্ছেÑ এতেও ভুতুড়ে খরচ। সামাজিক মাধ্যমের তথ্য-উপাত্ত যাচাই করার সুযোগ থাকে না। তবে এ দেশে বেশ কয়েক বছর থেকে যেসব বড় দুর্নীতি হচ্ছে তা প্রকাশে সামাজিক মাধ্যম বড় ভূমিকা রেখেছে। অনেক ভয়াবহ দুর্নীতি কেবল সামাজিক মাধ্যমের সুবাদে প্রকাশ হয়েছে। অন্যথায় দুর্নীতিবাজরা সমাজে এতটাই শাক্তিশালীÑ এসব দুর্নীতি জনসম্মুখে প্রকাশ করার সব পথই তারা বন্ধ করে রাখার সামর্থ্য রাখে। করোনাকালের বরাদ্দ নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের অনিয়ম নিয়ে জাতীয় সংসদে আলোচনা হয়েছে। এ ব্যাপারে জোর তদন্তও চলছে।
সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধানে বের হয়ে আসছে একটি চক্রের কথা। হাসপাতালের কর্মকর্তা ও হোটেল কর্তৃপক্ষের মধ্যে যোগসাজশের মাধ্যমে দুর্নীতি করা হয়েছে। দুর্ভাগ্য, গুটিকয় ব্যক্তির অসাধুতার ভার অন্যদের ওপর চলে আসে। এই দুর্নীতির সাথে ডাক্তারদের কোনো সম্পর্ক নেই। প্রচারণা এমনভাবে উঠেছেÑ ঢাকা মেডিক্যালের একদল ডাক্তার যেন এ দুর্নীতির সাথে জড়িত। ডাক্তারদের লোভী হিসেবে চিত্রিত করা চেষ্টা করা হয়েছে। ডাক্তারদের বিরুদ্ধে সবসময় একটি প্রচারণা চালানো হয়। এতে করে আমাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা আরো কমে যায়। এ অবস্থায় যারা করোনাকালে বিশেষ বরাদ্দ নিয়ে অনিয়ম করেছে, তাদের বিরুদ্ধে স্বচ্ছভাবে তদন্ত হওয়া উচিত। অন্যদের মতো এই ঘটনায় যদি অপরাধী চিহ্নিত না হয় আর তারা ছাড় পেয়ে যায়Ñ তা হবে দুঃখজনক। আমরা মনে করি, এই দুর্যোগকালে যারা দুর্নীতি করতে পারে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া অতীব জরুরি।

 


আরো সংবাদ



premium cement
বান্দরবানের ৩ উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টির জন্য ইস্তিস্কার নামাজে মুসুল্লিদের ঢল বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের চাবিটা মনে হয় পার্শ্ববর্তী দেশকে দিয়েছে সরকার : রিজভী চীনের দক্ষিণাঞ্চলীলের গুয়াংডংয়ে সর্বোচ্চ স্তরের বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি আজমিরীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান গ্রেফতার মুসলিম শ্রমিক হত্যায় হিন্দু নেতারা চুপ কেন : প্রশ্ন হেফাজত নেতা আজিজুল হকের সাভারে বুধবার ১২ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে গাজা ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়কে জনতার অবরোধ ভাঙতে টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি বাংলাদেশ-কাতারের মধ্যে ১০টি সহযোগিতা নথি সই ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি’

সকল