২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
কাজ নেই, অভাবী মানুষ দিশেহারা

এত বেকার কোথায় যাবেন?

-

একটি জাতীয় দৈনিকে মাত্র দু’দিনের ব্যবধানে দু’টি বিরাট ও সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে একই বিষয়ে। তা হলো, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে নজিরবিহীন অভাব ও বেকারত্ব। চলমান করোনা বিপর্যয়ের কারণে ১৬ কোটি মানুষের এ দেশে অভাবী কর্মহীন মানুষের সংখ্যা এত বেশি যে, তা মোকাবেলা করা দুঃসাধ্য। তা সত্ত্বেও বিশেষত সরকারকে মনে রাখতে হবে, বাজেট-প্রবৃদ্ধি-উন্নয়ন-মহাপ্রকল্প ইত্যাদি সব কিছু অর্থহীন হয়ে যাবে যদি দ্রুত বর্ধমান দারিদ্র্য ও বৈষম্য, অনটন ও কর্মহীনতা নিরসনের লক্ষ্যে আন্তরিকভাবে, যথাসাধ্য উদ্যোগী হওয়া না যায়।
বাংলাদেশে যে ক’টি অতিদরিদ্র জনপদ আছে, তার অন্যতম হলো উত্তরাঞ্চলের বন্যা ও ভাঙনকবলিত এবং মঙ্গাপীড়িত জেলা কুড়িগ্রাম। আলোচ্য দৈনিকটিতে নমুনাস্বরূপ এ জেলার উলিপুর উপজেলার সরেজমিন পরিস্থিতি তুলে ধরে জানানো হয়েছে প্রকট ও ভয়াবহ বেকারত্ব, তথা অসংখ্য মানুষের আয়-রোজগারের অভাবের কথা। গত ২৭ এপ্রিল সেখানে সর্বপ্রথম করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়। তিনি নারায়ণগঞ্জে রিকশা চালাতেন। কর্তৃপক্ষের মতে, করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের অধিকাংশ ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর থেকে বাড়ি ফিরে এসেছেন। এলাকায় কৃষিকাজের তেমন সুযোগ না থাকায় দেশের বহু মানুষ অন্যত্র মজুরি করতে বাধ্য হন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) আওতায় কুড়িগ্রামে কাজ চলছে। জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে এ জেলায় ৫৪ হাজার মানুষ ফিরে এসেছেন যাদের ১১ হাজার উলিপুরের। তারা প্রধানত শ্রমজীবী নি¤œবিত্ত জনগোষ্ঠী। সচেতন নাগরিকরা বলেছেন, বেকারত্বের দরুন কুড়িগ্রামবাসীর অবস্থা আগে থেকেই খারাপ। তদুপরি ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা প্রভৃতি নদীর ভাঙনসহ বিভিন্ন দুর্যোগ এ অঞ্চলে ব্যাপক। এ অবস্থায় এনজিওগুলো তাদের ঋণের কিস্তি আদায় না করাই উচিত।
একই পত্রিকায় দু’দিনের ব্যবধানে প্রকাশিত আরেক প্রতিবেদনের শিরোনাম ‘কাজ নেই, ঢাকা ছাড়ছে মানুষ’। তাদের মধ্যে নি¤œবিত্তের সাথে মধ্যবিত্তও অনেক। রাজধানীতে বছরের পর বছর সপরিবারে থেকেও তারা এখন বাধ্য হচ্ছেন গ্রামে ফিরে যেতে। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎকে আলিঙ্গন করতে হবে তাদের। কয়েক মাস ধরে কোনো আয়-উপার্জন না থাকায় বাসাভাড়া দূরের কথা, দু’বেলা খাওয়ার ব্যবস্থাও তারা করতে পারেননি। এ প্রেক্ষাপটে সংসারের সব জিনিসপত্র নিয়ে এ ভাগ্যহত মানুষেরা ঢাকা ছেড়ে মফস্বলে ফিরছেন দলে দলে। অথচ বাড়িতে গিয়ে কী করবেন, কিভাবে পরিবার চালাবেন, কোথায় উঠবেন, ছেলেমেয়ের পড়াশোনার কী হবে, কোনো নিশ্চয়তা নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাকালে কেবল আর্থিক নয়, একই সাথে মানসিক বিপর্যয়ের শিকার হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। তাদের কর্মসংস্থানের আশু ব্যবস্থা করা না গেলে বিপদ ও বিপর্যয় বাড়বে। অবস্থা যেভাবে খারাপ হচ্ছে দিন দিন, তাতে আগামী দিনে পরিস্থিতি সবার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। ইতোমধ্যে আমরা মহামারী ও বেকারত্ব দেখেছি। এর পরিণামে মন্দা ও দুর্ভিক্ষ, সেই সাথে বন্যা, ভাঙন ও অপরাধের ব্যাপক বিস্তৃতির আশঙ্কা করা হয়েছে।
সরকার এমন বাস্তবতা এখনই উপলব্ধি করে সাধারণ মানুষের যুগপৎ জীবিকা ও জীবন বাঁচানোর লক্ষ্যে চেষ্টার কোনো ত্রুটি করবে না বলে জাতির প্রত্যাশা।


আরো সংবাদ



premium cement
কালিয়াকৈরে ছিনতাইকারীর অস্ত্রের আঘাতে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বাবা-ছেলে আহত কাপাসিয়ায় চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২ রাশিয়ার ২৬টি ড্রোন ধ্বংসের দাবি ইউক্রেনের উত্তর কোরিয়ার সাথে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করতে চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র মাগুরায় বজ্রপাতে ২ যুবকের মৃত্যু মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ‘অস্থায়ীভাবে’ ক্ষমতায় রয়েছে : জান্তা প্রধান গাজীপুরে কাভার্ডভ্যানের চাপায় মোটরসাইকেলচালক নিহত উত্তরপ্রদেশে কারাগারে মুসলিম রাজনীতিবিদের মৃত্যু : ছেলের অভিযোগ বিষপ্রয়োগের দক্ষিণ আফ্রিকায় বাস খাদে, নিহত ৪৫, বাঁচল একটি শিশু ইসরাইলের রাফা অভিযান পরিকল্পনা স্থগিত এগিয়ে নিয়ে গিয়েও জেতাতে পারলেন না ত্রিস্তান

সকল