অভিযোজনের নীতি সামনে আসছে
- ০২ জুন ২০২০, ০০:০০
করোনা চিকিৎসায় এখনো কোনো ওষুধ নেই। এর সংক্রমণ রোধ করে বাঁচার চেষ্টা করছে মানুষ। মানুষের চলাচল সীমিত করে দিয়ে করোনার বিস্তার রোধ করার চেষ্টাও তেমন সফলতা পায়নি। জনবহুল দেশগুলোতে লকডাউনের মধ্যে ব্যাপকভাবে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। কঠোর লকডাউন করেও ভারতে দেখা গেল প্রায় দুই লাখ মানুষ আক্রান্ত। দেশভেদে মৃত্যুর হারের কমবেশি রয়েছে। ইউরোপের কয়েকটি দেশে দ্রুত ভাইরাসটি যেমন ছড়িয়েছে, তেমনই অনেক মানুষও মারা গেছে। ভারত পাকিস্তান বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে করোনা টেস্টের সংখ্যা অত্যন্ত সীমিত। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিশ্লেষণের ব্যাপার। সব কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দিয়ে করোনা মোকাবেলা যে একমাত্র সঠিক নীতি নয় সেটিও বোঝা যাচ্ছে। সব কিছু বন্ধ করে দেয়ায় মানুষের রোজগারের ওপর প্রবল আঘাত এসেছে। কিন্তু করোনা মোকাবেলায় সেভাবে কোনো সুফল আসেনি।
বাংলাদেশের এক বিশেষজ্ঞ বলছেন, এ দেশে এরই মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। আমরা যেহেতু যথেষ্ট সংখ্যক টেস্ট করাতে পারিনি, সে জন্য আক্রান্তের প্রকৃত হার নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কিন্তু করোনা মোকাবেলায় গৃহীত আমাদের নীতি পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা এখন সামনে এসেছে।
গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান বিজ্ঞানী বিজন কুমার শীল বাংলাদেশের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ মানুষ ইতোমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে বলে দাবি করেছেন। তিনি এর আগে গণস্বাস্থ্যের পক্ষ থেকে করোনা শনাক্তকরণ কিট উদ্ভাবন করেন। আরো একজন প্রবাসী বাংলাদেশী একই ধরনের কথা বলছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টরেন্টোর সোশ্যাল অ্যান্ড বিহেভিয়েরাল হেলথ সায়েন্টিস্ট শামীম আহমেদ। তার মতে, বাংলাদেশের অনেক মানুষের মধ্যে করোনার সংক্রমণ হয়ে গেছে। মৃদু লক্ষণের কারণে অনেকে বুঝতে পারেননি। তাদের নিজের অজান্তেই রোগ প্রতিরোধক্ষমতা তাদের শরীরের মধ্যে গড়ে উঠেছে। বিজন কুমার শীল একই কথা বলছেন, দেশে আক্রান্ত হওয়া অনেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন; কিন্তু তারা জানেন না। হয়তো তাদের কেউ একটু জ্বরে ভুগেছেন, দুর্বলতা অনুভব করেছেন এটুকুই।
তারা আশা করছেন, দেশে করোনাভাইরাসের তীব্রতাও কমে গেছে। আগামী এক মাসের মধ্যে পরিস্থিতির আরো উন্নতি হবে।
প্রকৃতপক্ষে করোনায় প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। ইউরোপের বড় বড় দেশে ভাইরাসটি যেভাবে আঘাত হেনেছে সেটি ভয়াবহ। তাদের উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থা এ কঠিন অবস্থা মোকাবেলায় হিমশিম খেয়ে গেছে। তার পরও তারা আক্রান্ত মুমূর্ষু মানুষের সেবা করতে পিছপা হয়নি। প্রায় সবাই হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন। আমাদের দেশের জনসংখ্যা ওই সব দেশের তুলনায় দুই থেকে তিন গুণ বেশি। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নড়বড়ে। সরকার, ডাক্তার ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে কমিটমেন্টের ঘাটতি রয়েছে। ইউরোপের দেশগুলোর মতো অবস্থা বাংলাদেশে হলে মুমূর্ষু মানুষ সেবা পাবেন এমন সম্ভাবনা নেই। গত দুই মাস আমরা যে নীতিতে করোনা সংক্রমণ মোকাবেলা করেছি, তা বিশ্বের অন্য দেশগুলোর চেয়ে আলাদা কিছু নয়। সংক্রমণ স্তব্ধ করে দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা সফল হতে পারিনি।
দীর্ঘ লকডাউনের কারণে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্য দিকে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। এটা বোঝা গেছে, লকডাউনের মধ্যে দেশের প্রায় সব এলাকায় সংক্রমণ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় লকডাউন অব্যাহত থাকলেও সংক্রমণ যে থেমে থাকবে না তা বোঝা যাচ্ছে। লকডাউন খুলে দেয়ার পর মানুষ ব্যাপকভাবে তাদের কাজকর্মে নেমে গেছে। বিশেষজ্ঞরা আপনা থেকেই প্রতিরোধ সক্ষমতা অর্জনের যে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অনেকটাই তার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। আমরা মনে করি, যারা আক্রান্ত হয়ে চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়বেন তাদের প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা জোরদার করার নীতি গ্রহণ করতে হবে। কারণ, রোগটি আমরা প্রতিরোধ করতে পারিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা