২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
লকডাউনে ত্রাণসহায়তা

প্রকৃত দুস্থদের কাছে পৌঁছাতে হবে

-

অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অচল হয়ে যাওয়ায় খেটেখাওয়া মানুষের উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। কোভিড-১৯ আঘাত হানার আগে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ছিল চার কোটি। এ অবস্থায় আগে থেকে দরিদ্র অবস্থায় থাকা মানুষের অবস্থা খারাপ হওয়ার পাশাপাশি নতুন করে আরো বহু মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে পড়েছেন। সম্প্রতি একটি মিডিয়া হাউজ আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় উপস্থাপিত প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে, নতুন করে ৫০ লাখ থেকে এক কোটি মানুষ আগের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সাথে যোগ হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে আগে থেকে চলা অনেক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি রয়েছে। এর সাথে করোনার আগমনের পর আরো কিছু কর্মসূচি চালু হয়েছে। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে মাসে আড়াই হাজার টাকা দেয়ার কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বাজেট দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট নয়। এর পরও চালু থাকা কর্মসূচি যদি সত্যিকার অর্থে পাওয়ার যোগ্য মানুষরা পেতেন তা হলে এসব কর্মসূচি সফল হতো। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত নগদ অর্থ দেয়ার কার্যক্রম শুরু হলে ব্যাপক দুর্নীতির খবর পাওয়া গেল। ত্রাণ প্রকৃত দুস্থ মানুষের কাছে পৌঁছানো না গেলে এত সব কর্মসূচি অর্থহীন হবে।
সারা দেশে ক্ষতিগ্রস্ত অসচ্ছল ৫০ লাখ পরিবারকে প্রতি মাসে নগদ আড়াই হাজার টাকা দেয়ার কর্মসূচি নেয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে। তালিকা প্রণয়নের দায়িত্ব দেয়া হয় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা এতে প্রধান ভূমিকা পালন করেন। তালিকা প্রণয়ন করার পর জালিয়াতির খবর প্রকাশ হয়। একটি মোবাইল নম্বরের বিপরীতে শত শত মানুষের নাম যুক্ত করা হয়। দেখা যাচ্ছে স্থানীয় প্রতিনিধিরা নিজেদের পছন্দ মোতাবেক ওই তালিকা করেছেন। নিজেদের রাজনৈতিক সমর্থনপুষ্ট লোকেরা ওই তালিকায় স্থান পেয়েছেন। অনিয়ম করার কারণে বেশির ভাগ তালিকা প্রত্যাহার করা হয়েছে। অনেক জায়গায় নতুন করে তালিকা হচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা জরিপের তথ্য ব্যবহার করে সম্পাদিত গবেষণায় দেখা গেছে, আগে থেকে যেসব সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি রয়েছে তাতে ত্রাণ পাওয়ার যোগ্য ৭১ শতাংশ মানুষই তালিকার বাইরে রয়ে গেছেন। আর যারা সাহায্য পাচ্ছেন তাদের ৪৭ শতাংশেরই সাহায্য পাওয়া উচিত নয়। তা হলে বোঝা যাচ্ছে, দরিদ্র মানুষের বিরাট অংশ নিরাপত্তা কর্মসূচির সুফলভোগী নয়। অনৈতিকভাবে এ সুযোগ হাতিয়ে নিচ্ছে কিছু দুর্নীতিবাজ।
আগে থেকে দেশে ১২০টি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি রয়েছে। সেগুলোর বাজেট মোট ৭০ হাজার কোটি টাকা। নতুন করে সরকার ৫০ লাখ পরিবারকে নগদ সহায়তা দেয়ার যে পদক্ষেপ নিয়েছে, সেটি সময়োচিত। কিন্তু এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে এর যথাযথ বিতরণ বা বণ্টন। অর্থাৎ প্রকৃতই দরিদ্র ও দুস্থ ব্যক্তিকে শনাক্ত করা। আমরা দেখতে পাচ্ছি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা দরিদ্র ব্যক্তিকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার বদলে নিজের স্বার্থকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন। তিনি নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ বিবেচনায় আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের উপকার করতে চাইছেন। অন্য দিকে যারা কঠিন পরিস্থিতির কারণে ন্যূনতম খাদ্য সংগ্রহ করতে পারছেন না, তারা রয়ে যাচ্ছেন তালিকার বাইরে। এ অবস্থায় দরিদ্র মানুষের জন্য নেয়া কর্মসূচি থেকে প্রকৃত উদ্দেশ্য হাসিল হবে না। এ ছাড়াও দেখা গেছে, তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির বিপরীতে চাঁদাবাজির ঘটনাও। এটি রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ত্রাণসহায়তা, এ জন্য দরিদ্র মানুষকে কেন চাঁদা দিতে হবে।
আমরা দরিদ্র তাই আমাদের সামর্থ্য কম। তবে বর্তমান সঙ্কটকালে যারা নিজের ও পরিবারের আহার জোগাড় করতে পারছেন না, তাদের খাবারের জোগান দেয়ার মতো সামর্থ্য সম্ভবত আমাদের আছে। এ জন্য দরকার একদল সৎ ও নিষ্ঠাবান মানুষ। আমাদের দেশে সৎ মানুষের বড় অভাব। সরকারকে এ ব্যাপারটি বুঝতে হবে। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে। সৎ ও ন্যায়বানদের কাজে লাগাতে হবে। তা হলেই কেবল প্রকৃত দরিদ্ররা রাষ্ট্রীয় সহায়তার সুফল পেতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement
‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ সংবিধান বিরোধী নয় ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মিজানুরের ইন্তেকাল থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সাথেপ্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ গ্যাস বিতরণে সিস্টেম লস ২২ শতাংশ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশে নেমে এসেছে : নসরুল হামিদ গণকবরে প্রিয়জনদের খোঁজ কক্সবাজারে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, স্বজনদের হাসপাতাল ঘেরাও বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজডুবি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশকে ‘নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি রাজশাহীতে টানা তাপদাহ থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা শরীয়তপুরে তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ জামায়াতের

সকল