২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
পবিত্র ঈদুল ফিতর

জাতীয় জীবনে আসুক খুশির বারতা

-

‘ঈদ’ মানে আনন্দ। পবিত্র ঈদুল ফিতর প্রতি বছর নিয়ে আসে খুশির বারতা। শাওয়ালের নতুন চাঁদ তাই মুসলিম উম্মাহর কাছে বহুল প্রত্যাশিত। এক মাস সিয়াম সাধনার পর আসে পবিত্র ঈদুল ফিতর। চাঁদ দেখাসাপেক্ষে আমাদের দেশে কাল রোববার অথবা আগামী সোমবার পালিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। কিন্তু এবারের ঈদ আমাদের জীবনে আসছে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে। কারণ সারা বিশ্বের মানুষের মতো আমাদের জীবনও গ্রাস করেছে করনো আতঙ্ক। সবার মনেই শঙ্কা, মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে কে কখন আক্রান্ত হয়; এই দুশ্চিন্তায় প্রতিটি মুহূর্ত পার করছি আমরা। এমন বাস্তবতায় আমাদের দুয়ারে কড়া নাড়ছে ঈদুল ফিতর।
আমাদের স্মরণে রাখতে হবে, ঈদ উৎসব অন্য ১০টি উৎসবের মতো নয়, এটি ধর্মীয় সংস্কৃতিকেন্দ্রিক উৎসব। তাই উৎসবের নামে বাড়াবাড়ি বা স্থূলতা পরিহারের সর্বাত্মক চেষ্টা করা সবার কর্তব্য। বাংলাদেশের গরিষ্ঠ মানুষের বসবাস গ্রামে। শহরকেন্দ্রিক মানুষজন এখনো ছুটে যায় গ্রামে। স্বজন ও প্রিয়জনের সাথে ঈদে আনন্দ উপভোগ করার এই রেওয়াজ আমাদের দীর্ঘকালীন ঐতিহ্যের অংশ। নাড়ির টানে ছুটে চলা মানুষ এখনো মা-বাবা বা মুরুব্বির সান্নিধ্য লাভের গরজ বোধ করেন। এর মানবিক ও সামাজিক আবেদন বিপুল। এই ঐতিহ্য লালনের মাধ্যমে আমাদের পারিবারিক বন্ধন শুধু দৃঢ় হয় না; পরিবারব্যবস্থা বিলুপ্তির মোকাবেলায় একটি অঘোষিত গুরুত্বপূর্ণ তৎপরতা অব্যাহত থাকে। কিন্তু করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ অতিমাত্রায় ছোঁয়াচে হওয়ায় এবং এখন পর্যন্ত এর নিরাময়ে কোনো ওষুধ উদ্ভাবিত না হওয়ায় এর প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই একমাত্র উপায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। অথচ সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ঈদ উপলক্ষে অনেকেই যেভাবে পারছে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করছে। ফলে পাবলিক প্লেসগুলোতে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা হয়ে পড়ছে খুবই দুরূহ। এতে আরো বেশি করে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তা ছাড়া গ্রামে এখন পর্যন্ত করোনার প্রকোপ তেমন একটি দেখা দেয়নি। কিন্তু শহরাঞ্চল থেকে মানুষজন প্রতিবারের মতো গ্রামের বাড়িতে গেলে সেখানেও এই ভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ দিকটি বিবেচনায় নিয়ে এবারের ঈদ সবাইকে কর্মস্থলে করাই বাঞ্ছনীয়। এই সাথে করোনাকালে যারা কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন, অপরাপর বছরের চেয়ে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী বেশি করে সহযোগিতার হাত বাড়ানো মানবতার দাবি।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হওয়ায় ঈদ আমাদের জাতীয় উৎসব। জীবনঘনিষ্ঠ এ উৎসবে নির্মল আনন্দ উপভোগ করে সব শ্রেণীর মানুষ। ধনী-গরিব ব্যবধান ভুলে সবাই ঈদের আনন্দে শরিক হয়। রোজাদার ঈদের নামাজে শরিক হওয়ার আগে সাদাকাতুল ফিতর আদায় করে থাকেন। উৎসব হিসেবে ঈদ এতটাই সর্বপ্লাবী যে, এর সাথে আর কোনো জাতীয় দিবস ও উৎসবের তুলনা চলে না। ঈদ যেন এ জাতির জীবনে অনিঃশেষ আনন্দের ফল্গুধারা। দুঃখ-বেদনা, শ্রেণিবৈষম্য ও আশরাফ-আতরাফের ব্যবধান ভুলে মানুষ ক্ষণিকের জন্য হলেও এককাতারে দাঁড়ায় ঈদের দিন। একে অপরকে বুকে জড়িয়ে ধরে। শত্রু হয়ে যায় বন্ধু। তাই ঈদের তুলনা শুধু ঈদ, আর কিছু নয়।
করোনাকালেও আমরা যখন ঈদের আনন্দে মেতে উঠব তখনো পৃথিবীজুড়ে অসংখ্য মানুষ যুদ্ধবিধ্বস্ত ও অন্যান্য বিপন্ন এলাকায় মৃত্যুর প্রহর গুনবে। সেসব অসহায় লাখো নর-নারী-শিশুর কান্নার ধ্বনি আমাদের ব্যথাতুর করে তুলবে। দেশে দেশে মজলুম মানুষের আহাজারি শুনে আমরা অসহায় বোধ করি। তার পরও উম্মাহর দুয়ারে ঈদ খুশির বারতা নিয়ে কড়া নাড়ছে। ঈদের আনন্দে সব মজলুম ও অসহায় মানুষের জন্য কিছু করা সম্ভব না হলেও আমরা তাদের বিপদ মুসিবত অবসানের জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর দরবারে দোয়া করব। বিশেষ করে করোনা থেকে যেন আল্লাহ আমাদেরসহ বিশ্ববাসীকে নাজাত দেন।
ঈদ আমাদের সবার জীবনে অর্থবহ আনন্দ বয়ে আনুক। তাৎপর্যময় হোক এ আনন্দ উৎসব। জাতীয় জীবনে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়–ক। এ প্রত্যাশায় সবাইকে ঈদ মোবারক।


আরো সংবাদ



premium cement
অবশেষে অধিনায়কের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছল পাকিস্তান জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে : ওবায়দুল কাদের রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ বাতিল করে কেন নতুনের জন্য বিজ্ঞপ্তি! বাইডেনের মেয়াদে রুশ-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির কোনো আশা নেই : রুশ রাষ্ট্রদূত ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৪০ নিউইয়র্কে মঙ্গোলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ফ্ল্যাট জব্দ করবে যুক্তরাষ্ট্র! টাঙ্গাইলে লরি-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষে নিহত ১

সকল