২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
নিত্যপণ্যের বিপর্যস্ত বাজার

দরকার উন্নত ব্যবস্থাপনা

-

চাল, ডাল, তেল, মাছ, গোশত, তরিতরকারিসহ বেশ কিছু পণ্য প্রতিদিন আমাদের লাগে। মানুষের জীবনের সাথে এসব ভোগ্যপণ্য নিবিড়ভাবে জড়িত। প্রতিদিনকার চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতির স্বার্থে এর বাজার স্থিতিশীলতা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। নভেল করোনার আবির্ভাবে সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেছে। সাধারণত রমজান ও ঈদ ঘিরে নিত্যপণ্যের বাজার চাঙ্গা হয়। দাম বেড়ে যায় অনেক পণ্যের। এবার বাজারে উল্টো প্রবণতা দেখা দিয়েছে। বেশির ভাগ পণ্যের দাম নিম্নমুখী। এটা ভোক্তাসাধারণের জন্য ভালো কিছু হয়েছে এমন বলা যাবে না। কারণ বাজারের এ আচরণ অস্বাভাবিক। এতে করে পণ্যের উৎপাদক ও ব্যবসায়ীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহে একসময় ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এমন পরিস্থিতি থেকে দেশের অর্থনীতি নানা মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের খবরে প্রকাশ, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান প্রধান নিত্যপণ্যের দাম কমেছে। এ জন্য বাজার বিশ্লেষণে জানা যাচ্ছে, করোনার প্রাদুর্ভাবের শুরুতে একশ্রেণীর ভোক্তা হুমড়ি খেয়ে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বেশি নিত্যপণ্য মজুদ করেছেন। পরে এসব পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় দামও কমে যায়। হুজুগে ভোক্তারা বাজারকে এভাবে অস্থির করে ফেলায় সেটি কারো জন্য ভালো হয়নি। এখন বৃহত্তর জনগোষ্ঠী আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে। প্রায় দেড় মাস ধরে শ্রমজীবী মানুষ কর্মহীন রয়েছেন। তাদের হাতে নগদ টাকা নেই। এ কারণে বাজার থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য তারা আগের মতো কিনতে পারছেন না।
এর সাথে করোনার কারণে পরিবহন ব্যবস্থায় অচলাবস্থা দেখা দেয়। ঠিকভাবে পণ্য পরিবহন করে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। কাঁচা তরিতরকারি ফল ফলাদি মাছসহ পচনশীল পণ্য নিয়ে উৎপাদকরা পড়েছেন মহাবিপদে। সময়মতো এসব পণ্য ভোক্তাদের কাছে পৌঁছানো যায়নি বলে সারা দেশে লাখ লাখ উৎপাদক বিপুল ক্ষতির মুখে। করোনা আগমনের শুরুতে আমরা দেখেছি মুরগির দাম একেবারে পড়ে যায়। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ৬০ টাকায় নেমে আসে। তখন ব্রয়লার মুরগির ফুটানো বাচ্চা নিয়ে খামারিরা মহাবিপদে পড়েন। কারণ প্রতিদিন এসব বাচ্চার পেছনে যে খরচ সেটি উঠানো সম্ভব ছিল না। এ কারণে অনেক খামারি বাচ্চাকে মাটিতে পুঁতে ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করেছেন। চলতি সপ্তাহে মুরগির দাম বেড়ে গেছে। শেষ পর্যন্ত তা কেজিপ্রতি ১৬০ টাকায় উঠেছে। এর মূল কারণ চাহিদা বাড়ার বিপরীতে মুরগির সরবরাহ কম। একসময় আমরা বাচ্চা মেরে ফেলেছি, আর ব্রয়লার মুরগি খাঁচায় উঠাতে চাইনি। এখন মানুষের চাহিদা বেড়েছে কিন্তু খামারিদের কাছে তা পর্যাপ্ত নেই।
বাজার ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। করোনার কারণে চাহিদা সরবরাহ সব লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। কিন্তু এমন বিশৃঙ্খল অবস্থা চলতে থাকলে সেটি আমাদের খাদ্য ব্যবস্থাপনায় দুর্যোগ নামিয়ে আনতে পারে। ঢাকা শহরে এখন অর্ধেক মানুষ কমে গেছে। একইভাবে বিভাগীয় শহরেও মানুষের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। আর্থিক অনটনের পাশাপাশি নতুন জনবিন্যাসে চাহিদার ভৌগোলিক অবস্থানের তারতম্য ঘটে। এ ব্যাপারটি খাদ্য ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িতদের অত্যন্ত সতর্কতার সাথে খেয়াল করতে হবে। প্রয়োজনীয় পরিমাণ নিত্যপণ্য ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে তাই সবসময় একটি পরিকল্পনার প্রয়োজন হয়। সবজি ও ফল উৎপাদক পোলট্রি দুগ্ধখামারিরা এবার এর প্রধান শিকার হয়েছেন। আর্থিক অনটন থাকা সত্ত্বেও ভোক্তার কাছে পৌঁছানো গেলে অনেক পণ্যের চাহিদা আরো বাড়ন্ত থাকত। উৎপাদকদের ক্ষতির পরিমাণটাও কম হতো। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে এমন লক্ষণ নেই। কিন্তু মানুষকে জীবন ধারণ করতে হবে। তাই উৎপাদকের কাছ থেকে ভোক্তার কাছে নিত্যপণ্য পৌঁছানোর রাস্তা সচল রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখতে হবে সরকারকে। বরাবর উৎপাদকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে একসময় পণ্যের উৎপাদন বন্ধ হয়ে খাদ্যসঙ্কট দেখা দিতে পারে। সে অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে উন্নত বাজার ব্যবস্থাপনা আমাদের সহায় হতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement
গফরগাঁওয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা ভিয়েনায় মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রদূতদের ইফতারে ইসলামিক রিলিজিয়াস অথোরিটি আমন্ত্রিত এবার বাজারে এলো শাওমির তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান

সকল