১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
দু:স্থদের কাছে পৌঁছাতে হবে

ত্রাণ বিতরণে সমন্বয় দরকার

-

এই মুহূর্তে দেশে অর্থনৈতিক কার্যক্রম প্রায় বন্ধ। খেটে খাওয়া মানুষের আয়রোজগারের ওপর সবচেয়ে বড় মার পড়েছে। দিনমজুরদের কাজ নেই। বাসাবাড়িতে কাজ করা আয়া বুয়াদেরও একই অবস্থা। এই শ্রেণীর মানুষের কাছে সাধারণত সঞ্চিত অর্থ থাকে না। ২৬ তারিখে অঘোষিত বিচ্ছিন্নকরণ শুরু হলে কার্যত সে দিন থেকেই তাদের অনেকের চুলায় হাঁড়ি চড়েনি। বাজার থেকে খাবার কেনার মতো অর্থ নেই। এ দিকে আমরা দেখছি সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ত্রাণ কার্যক্রমের সফলতা নির্ভর করছে এর বণ্টনের ওপর। যারা অনাহারে আছে ঠিক তাদের কাছেই খাদ্য পৌঁছাতে হবে। যে মানুষটি দিনের বরাদ্দ পেয়েছে তাকে আবার না দিয়ে যে এখনো পায়নি তার কাছে খাদ্য পৌঁছাতে হবে। সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যাচ্ছে, ঢাকার বস্তিগুলোতে অনাহারী মানুষের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
রাজধানীর বিভিন্ন বস্তি ঘুরে সাংবাদিকরা অনাহারী মানুষের হাহাকারের চিত্র তুলে এনেছেন। মহাখালীতে কয়েকটি বস্তি মিলিয়ে সাততলা বস্তি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত এ বস্তিতে ১৭ হাজার পরিবারের ৬০ হাজার নিম্ন আয়ের মানুষ বাস করেন। দিনমজুর, ফেরিওয়ালা, হোটেল ও দোকান কর্মচারী, রিকশা-ভ্যানচালক, বাসাবাড়ির কাজের বুয়াসহ অসংখ্য ছোটখাটো কাজ করে তারা জীবিকা নির্বাহ করেন। এখন বস্তির সব মানুষ বেকার। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে তারা কর্মহীন, এখন তাদের বেশির ভাগের খাবার নেই। গত শুক্রবার ওই এলাকার সংসদ সদস্য স্থানীয় কাউন্সিলরের মাধ্যমে ৯০০ বস্তা ত্রাণ বিতরণ করেন। প্রতি বস্তায় ছিল ১০ কেজি চাল, দুই কেজি আলু, এক কেজি করে ডাল ও পেঁয়াজ। ১৭ হাজার পরিবারের মধ্যে মাত্র ৯০০ পরিবার এগুলো পেয়েছে। বস্তিবাসিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ ধরনের ত্রাণ জোটা বড় ভাগ্যের ব্যাপার। কারণ মুখ চিনে এসব ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়। প্রকৃত অভাবী মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছানোর চেয়ে অনেকসময় রাজনৈতিক মোটিফ কাজ করে।
বস্তিতে গিয়ে দেখা যায়, অনেকে রাস্তায় নেমে এসেছেন। তারা অপেক্ষা করছেন কোনো সাহায্য আসে কি না। এদের মধ্যে অনেকে রয়েছেন অসুস্থ। বিভিন্ন জটিল রোগেও ভুগছেন অনেকে। দেখা গেল, সাত আটজনের একটি পরিবার একজন মাত্র ব্যক্তির রোজগারের ওপর নির্ভর করে। বাকিরা বৃদ্ধ, রোগী কিংবা শিশু। ত্রাণ দেয়ার সময় সঠিক বিবেচনাবোধ কাজ করছে না। ফলে একজন প্রয়োজনের অতিরিক্ত পাচ্ছেন। আবার অনেকে একবারের জন্যও পাচ্ছেন না। তাই ত্রাণ কাজের মধ্যে সমন্বয় দরকার। এ কাজটি সরকারের পক্ষ থেকে করতে হবে। অনাহারী মানুষকে বাছাই করে তাদের কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে হবে। আগে থেকে বিভিন্ন ধরনের ত্রাণ কার্যক্রম এ দেশে চালু আছে। এর ওপর বর্তমান দুর্যোগ পরিস্থিতিতে অনেকে সাহায্য নিয়ে এগিয়ে এসেছেন। কিন্তু সমন্বয় না থাকলে এ ধরনের ত্রাণ সঠিক মানুষের কাছে পৌঁছবে না।
গতকাল নারায়ণগঞ্জ শহরে ক্ষুধার জ্বালায় অসহায় দরিদ্র মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। তারা রাস্তা অবরোধ করে ত্রাণসহায়তা চেয়েছে। সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি ঘিরে ধরে তারা খাদ্যসহায়তা চেয়েছে। সারা দেশের ছোট-বড় বিভিন্ন শহরে যারা দিন আনে দিন খায় তাদের মধ্যে খাদ্যাভাব দেখা দেয়া স্বাভাবিক। ত্রাণ কার্যক্রম সঠিকভাবে চালানো গেলে সবার কাছে খাদ্য পৌঁছে দেয়া সম্ভব। এ জন্য সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ কার্যক্রম স্থানীয়ভাবে একটি সমন্বিত ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা যায় কি না সরকার ভেবে দেখতে পারে। সরকারি-বেসরকারি সব ত্রাণ এক ব্যবস্থাপনার আওতায় এনে অভাবী মানুষকে চিহ্নিত করে তা বিতরণ করা যেতে পারে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে কিছুসংখ্যক মানুষ প্রাণ হারায়। অন্য দিকে খাদ্যের সঙ্কটেপড়লেও তার রেহাই নেই। এখন এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হচ্ছে। করোনার চেয়ে খাদ্যাভাব মোটেই সামান্য সঙ্কট নয়। এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য অচিরেই সুচারু প্রস্তুতি দরকার। না হলে এ থেকে মানুষের বড় বিপর্যয় হতে পারে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তি, এদের রুখতে হবে : ওবায়দুল কাদের সাদিক এগ্রোর ব্রাহামা জাতের গরু দেখলেন প্রধানমন্ত্রী ভারতে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২ বিল দখলের চেষ্টা, জেলা ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি

সকল