২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
টিভিতে পাঠদান কর্মসূচি

রেকর্ডিংয়ে ব্যয় ১৬ কোটি টাকা

-

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া এবং বাংলাদেশেও এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার বিঘœ ঘটায় সরকার বিকল্প পথে শিক্ষাকার্যক্রম চালানোর চিন্তাভাবনা করে। সেই আলোকে সংসদ টেলিভিশনে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষাদানের উদ্যোগ নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ কর্মসূচির আওতায় প্রথম থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীর জন্য ভিডিও আকারে বর্ণ শেখা ও রিডিং পড়া শেখানো হবে। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সিলেবাস অনুযায়ী শিক্ষকদের মাধ্যমে ভিডিও ধারণ করে ক্লাস নেয়া এবং বিভিন্ন প্রশ্নোত্তর শিখতে হোম ওয়ার্ক দেয়া হবে। পরদিন শিক্ষার্থীদের হোম ওয়ার্ক ঠিক করে দেবেন শিক্ষকরা। এ ছাড়া মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদেরও পাঠদান করা হবে। এটুআই প্রকল্পের সহায়তায় সম্প্রচারের কাজটি বাস্তবায়ন করতে বলা হয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরকে। ছুটির দিনগুলোতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যেতে ভিডিও ধারণ করে তা সংসদ টেলিভিশনে প্রতিদিন সম্প্রচার করা হবে। ২৫ মার্চ থেকে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহ থেকে এটি সম্প্রচার শুরু করা হবে।
নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মাধ্যমিক পর্যায়ের অর্থাৎ ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে টিভিতে যে পাঠদান করা হবে সেগুলোর শুধু ভিডিও রেকর্ডিং করতে লাগবে ১৬ কোটি টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বাজেট চাওয়া হলে মাউশি উল্লিখিত অঙের টাকা চায়। শিক্ষা অধিদফতরের সুযোগ সন্ধানীরা ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্টুডিও ব্যবহার করছেন ভিডিও রেকর্ডিংয়ে। যদিও কথা ছিল, রেকর্ডিংয়ের জন্য শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন ব্যানবেইসের স্টুডিও ব্যবহার করার। দ্রুত রেকর্ডিং করার অজুহাতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেয়া হয়েছে। অথচ ঢাকার কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে উন্নতমানের স্টুডিও রয়েছে। তবুও দু’টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সরকারের কাজে যুক্ত করছে শিক্ষা অধিদফতরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা। তবে শুধু ভিডিও রেকর্ডিং করতে এত বড় অঙ্কের বাজেট নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা। অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এমন আচরণ সেই চরিত্রের সাথে হুবহু মিলে যায়Ñ ‘রাজগুদামে আগুন লেগেছে এই সুযোগে আলু পোড়া খেয়ে নিই’। টিভিতে ক্লাস নেয়ার বিষয়টি দেখাশোনা করছেন মাউশির কলেজ ও প্রশাসন শাখার পরিচালক। কোন খাতে ব্যয় ধার্য করা হয়েছে সে সম্পর্কে কিছু জানেন না সংশ্লিষ্ট ওই কর্মকর্তা। বাজেটের বিষয়টি মাউশির প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন শাখা করতে বলেছে এমনটি উল্লেখ করেছেন তিনি। তবে মাউশির পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন) এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি।
সাধারণত সামষ্টিক বিপদের সময় মানুষ ভালো কাজের প্রতি ঝুঁকে পড়ে। মন্দ কাজ থেকে দূরে থাকে। এ জন্য সমাজে রাতারাতি অপরাধপ্রবণতা কমে আসে। পুলিশের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া এবং আমাদের দেশেও করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় বাংলাদেশেও অপরাধ কমেছে। কিন্তু এর মধ্যেও মাউশির এমন অস্বাভাবিক বাজেট জমা দেয়ার বিষয়টি সত্যিই অবাক করার বিষয় বটে। বাজেট প্রণয়নে মাউশির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মানসিকতা নিয়ে তাই প্রশ্ন উঠেছে। এমন অস্বাভাবিক বাজেট দেয়ায় তীব্র সমালোচনার মুখেও এমন বাজেট প্রণয়নের সাথে যারা জড়িত তাদের লজ্জাবোধ হচ্ছে কি না, তা বলা মুশকিল। কারণ আমাদের দেশে সরকারি কাজে সাম্প্রতিক সময়ে এমন সব কর্মকাণ্ড হচ্ছে, তাতে কিছু কর্মকর্তার ব্যক্তিগত অভিধানে লজ্জা শব্দটি অনেক আগেই নির্বাসনে গিয়েছে বলেই মনে হয়। দেশের মহাবিপদের দিনে যারা এমন কাজ করতে পারেন, তারা হেন কোনো কাজ নেই যা করতে পারেন না। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করলে, এই বাজেট আদৌ যুক্তিসঙ্গত কি না তা খতিয়ে দেখা জরুরি। যদি প্রমাণিত হয় এই বাজেট অস্বাভাবিক; তাহলে এর সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টন্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।


আরো সংবাদ



premium cement
এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন ইসলামের বিজয়ই বদরের মূল চেতনা : ছাত্রশিবির পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের মৃত্যু : বিশ্বব্যাংক নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’ পুকুরে পাওয়া গেল ১০০ ইলিশ

সকল