২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
জাটকা শিকারের মহোৎসব

এখনই বন্ধ করতে হবে

-

অত্যন্ত সুস্বাদু ও বিশ্বখ্যাত ইলিশ মাছের পর্যাপ্ত উৎপাদনের স্বার্থে এর নির্বিঘœ প্রজননের প্রয়োজনে মার্চ-এপ্রিল মাসে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ। প্রতি বছর দেখা যায়, সাধারণত মধ্য এপ্রিলের বাংলা নববর্ষকে সামনে রেখে একশ্রেণীর মৎস্যজীবী বেআইনিভাবে ও নির্বিচারে এ মাছ ধরায় মেতে ওঠে এবং মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা ইলিশের বিরাট মজুদ গড়ে তোলে। পরে অনেক চড়া দামে জাটকাসহ মা ইলিশ বিক্রি করে বিরাট অঙ্কের মুনাফা লুটে নেয়া হয়। এ বছরও এর পুনরাবৃত্তির আশঙ্কার খবর পত্রপত্রিকা দিয়েছে।
একটি জাতীয় দৈনিকে ‘মেঘনায় জাটকা শিকারের মহোৎসব’ শীর্ষক প্রতিবেদনে জানানো হয়, মেঘনার মোহনার কাছে ভোলা ও লক্ষ্মীপুর সংলগ্ন নদীতে এবং চাঁদপুরের মেঘনায় অনেক জেলে নির্বিচারে জাটকা ধরছেন। ক্ষুদ্র ইলিশ বা জাটকা ধরার মতো অবৈধ ও নিষিদ্ধ কাজের পেছনে আড়ত-সংশ্লিষ্ট দাদনদারদের চাপ রয়েছে বলে মৎস্যজীবীদের অভিযোগ। এসব পোনা ইলিশ নদীর পাড়েই কেনাবেচা করা হচ্ছে। এবার ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়া দূরের কথা, এ ক্ষেত্রে মারাত্মক ধস নামতে পারে বলেও ওয়াকিবহাল মহল উদ্বিগ্ন। প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, ভোলার চরফ্যাসন এলাকায় মেঘনা নদীর বুকে অবাধে জাটকা শিকার করা হচ্ছে। একসময়ে জাটকা নিধনের বিরুদ্ধে সরকারিভাবে ব্যাপক প্রচারের পাশাপাশি প্রশাসন নিয়মিত কঠোর অভিযান পরিচালনা করত। আবারো-এর প্রয়োজন পরিলক্ষিত হচ্ছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য অফিস জানায়, জেলার ৫২ হাজার জেলের মধ্যে প্রায় সাড়ে আট হাজার নিবন্ধিত নন। ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞার দুই মাসে প্রত্যেক জেলেকে ৪০ কেজি করে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। অপর দিকে, মধ্য মার্চ থেকে দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণে লক্ষ্মীপুর জেলার আলেকজান্ডার থেকে শুরু করে উত্তরে চাঁদপুর জেলার মতলবের ষাটনল পর্যন্ত মেঘনার ১০০ কিলোমিটার এলাকায় দিন-রাত অবাধে পোনা ইলিশ বা জাটকা নিধনের তাণ্ডব চলছে। জানা যায়, অনেক জেলে মৎস্য আড়তদারদের পাওনা শোধ করার জন্য নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে হলেও ইলিশ ধরতে বাধ্য হচ্ছেন। এ দিকে, আড়তদারদের বক্তব্যÑ নির্ধারিত সময়ে সরকার মৎস্যজীবীদের খাদ্য সহায়তা দেয়নি বলে তারা জেলেদের বাঁচাতে অগ্রিম টাকা দিয়েছেন। এভাবে তারা বিপন্ন জেলেদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেছেন, জাটকা নিধন বন্ধ করার জন্য অভিযান চলছে এবং জেল-জরিমানার শাস্তিও দেয়া হচ্ছে।
অপর দিকে, ভোলার চরফ্যাসনের দক্ষিণ উপকূলে মেঘনা-তেঁতুলিয়া অভয়াশ্রমে নিষেধাজ্ঞা চলার সময়ই ইলিশ ও অন্যান্য প্রজাতির মাছ শিকারের মহোৎসব চলছে। এর আগে থেকেই মাছ না ধরার জন্য এবং জেল-জরিমানার ভয় দেখিয়ে, মাইকিং করা হয়েছে। প্রশাসন বলছে, মাছ ধরার বিষয়ে ‘যথাযথ মনিটরিং’ চলছে। আবার অনেকে বলছেন, মাইকিংয়ের মাধ্যমে দায়িত্ব শেষ করে দায়িত্বশীলরা নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। উল্লেখ্য, তেঁতুলিয়ার ১০০ কিলোমিটার এবং মেঘনার ৯০ কিলোমিটারজুড়ে যেকোনো মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে নজরদারির কড়াকড়ি না থাকায় মাছ শিকার চলছে ব্যাপকভাবেই। কয়েকটি এলাকায় দেখা গেছে, জোয়ার-ভাটা মেনে জাল ফেলা হচ্ছে এবং জাল তুলে হাঁকডাক দিয়ে ঘাটে মহাজনের আড়তে মাছ বিক্রি করা হচ্ছে। মৎস্যজীবীদের কথা হলো, প্রশাসনের সহায়তা না পেয়ে ঝুঁকি নিয়ে হলেও নদীতে নামছেন মৎস্যজীবীরা।
বিশেষত ইলিশসহ মূল্যবান মৎস্যসম্পদ রক্ষা করার জন্য এখনই আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি জেলেদের যথারীতি খাদ্যসহায়তার পর্যাপ্ত নিশ্চয়তাও জরুরি।


আরো সংবাদ



premium cement
শ্যামবাজার ঘাটে লঞ্চে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৪ ইউনিট ‘আমার শিশু মেয়েটির যে সর্বনাশ সে করেছে’ বান্দরবানের ৩ উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টির জন্য ইস্তিস্কার নামাজে মুসুল্লিদের ঢল বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের চাবিটা মনে হয় পার্শ্ববর্তী দেশকে দিয়েছে সরকার : রিজভী চীনের দক্ষিণাঞ্চলীলের গুয়াংডংয়ে সর্বোচ্চ স্তরের বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি আজমিরীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান গ্রেফতার মুসলিম শ্রমিক হত্যায় হিন্দু নেতারা চুপ কেন : প্রশ্ন হেফাজত নেতা আজিজুল হকের সাভারে বুধবার ১২ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে গাজা ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়কে জনতার অবরোধ ভাঙতে টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি

সকল