১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
এখনই সম্ভাব্য খাদ্যাভাবের আভাস

সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

-

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত পরিস্থিতি ‘এখনো গুরুতর হয়ে ওঠেনি’ বলে সরকারি প্রচারণা অব্যাহত আছে। চলছে লকডাউন। আতঙ্কিত মানুষ সাধ্যমতো সতর্কাবস্থা মেনে ঘরে অবস্থান করছেন। নামাজ কালাম, দোয়া-দরুদ পাঠ করছেন। কিন্তু একজন মুটে, একজন রিকশাচালক অথবা একজন সবজি বিক্রেতা ঘরে বসে থাকলে তাদের সংসার চলবে না। পরিবার-পরিজন নিয়ে উপোস থাকতে হবে। সেটি দীর্ঘমেয়াদে অসম্ভব। এর মোকাবেলায় বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কার্যক্রম চলছে। ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কয়েক জায়গায় খাদ্য সাহায্য দেয়া হচ্ছে এবং ভিজিডি, ভিজিএফ, সরকারের বৃত্তি, উপবৃত্তি ইত্যাদি চালু রাখা হয়েছে। ঢাকা শহরে নিয়মিত ন্যায্যমূল্যে খাদ্যপণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু সরকারিভাবে এ বিষয়ে সমন্বিত কোনো উদ্যোগ নেই। এমতাবস্থায় শ্রমজীবী মানুষকে সহায়তা দিতে বিত্তবান মানুষের এগিয়ে আসার কোনো বিকল্প দেখা যাচ্ছে না। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষ এগিয়ে এসেছেন। নিজেরা খাদ্যপণ্য সংগ্রহ ও বিতরণ করছেন দুর্গত মানুষের মধ্যে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পাশাপাশি দুস্থ মানুষকে বাঁচানোর লড়াইও শুরু হয়ে গেছে। এই পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন দেশবাসীর প্রতি। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে ভয় না পেয়ে জনগণকে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘মানুষকে কেবল ঘরে আটকে রাখলে হবে না, তাদের খাদ্য এবং জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কথাটি বলেছেন, সেটি এককথায় উদ্বেগজনক। গত রোববার প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অনুদানের চেক গ্রহণকালে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তাতে ব্যাপকভাবে খাদ্যাভাব দেখা দিতে পারে। তিনি গ্রামে চলে যাওয়া মানুষকে কোনো জমি ফেলে না রেখে সব জায়গায় ফসল ফলানোর আহ্বান জানান। সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় সরকারের কী প্রস্তুতি বা কার্যক্রম আছে, তা বলেননি প্রধানমন্ত্রী। সেটি বলা দরকার ছিল। করোনার কারণে এমনিতেই মানুষ চরম আতঙ্কে রয়েছে। দুর্ভিক্ষের আশঙ্কার কথা জানার পর এই আতঙ্ক চরমে পৌঁছবে।
এরই মধ্যে সামর্থ্যবান মানুষ নানা ধরনের পণ্য কিনে মজুদ করেছেন। বাজারে সব জিনিসেরই টান পড়েছে। কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি হচ্ছে অনেক নিত্যপণ্যের। সরকারকে এখনই এ বিষয়ে পূর্ণ সজাগ থাকতে হবে এবং অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে পরিস্থিতির কোনো রকম সুযোগ নিতে না পারে সে জন্য নজরদারি করতে হবে। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকার বা স্বাস্থ্য বিভাগের তেমন কোনো প্রস্তুতি ছিল না বা আজো নেই। দুই মাসের বেশি সময় পেয়েও সরকার করোনার মতো প্রাণঘাতী জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ন্যূনতম প্রস্তুতি পর্যন্ত নিতে পারেনি। বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানার দিতে পারেনি। বিদেশফেরত প্রতিটি মানুষকে পরীক্ষা করার বিষয়টি নিশ্চিত হয়নি। হাসপাতালে চিকিৎসকদের সুরক্ষা দিতে যে পোশাক (পিপিই) দরকার, সেটি সরবরাহ করতেও ব্যর্থ হয়েছে সরকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রোগী শনাক্ত করা বা সম্ভাব্য সংক্রমিত লোকজনের পরীক্ষার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে একটিমাত্র ল্যাবরেটরিতে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা করা হচ্ছে এক শ’রও কম। করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের জন্য যে মেডিক্যাল কিট দরকার, সেটি নেই দেশের বেশির ভাগ হাসপাতালেই।
এমনই এক হতাশাব্যঞ্জক পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী সম্ভাব্য খাদ্যাভাবের আভাস দিলেন। আমরা আতঙ্কিত হতে চাই না। সুপরিকল্পিত ও সমন্বিত কার্যক্রম নেয়া হবে, সরকারের কাছে এটুকুই শুধু চাওয়া।


আরো সংবাদ



premium cement
ইরানে হামলা : ইস্ফাহান কেন টার্গেট? মাত্র ২ বলে শেষ পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড প্রথম টি-টোয়েন্টি জেলে কেজরিওয়ালকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দলের ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা তোকে যদি এরপর হলে দেখি তাহলে খবর আছে, হুমকি ছাত্রলীগ নেতার বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা করা হয়নি : প্রধানমন্ত্রী দাওয়াতী ময়দানে সকল নেতাদের ভূমিকা রাখতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেল শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে বিমানবন্দরের টার্মিনালে ঢুকে গেলো বাস, ইঞ্জিনিয়ার নিহত

সকল