১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
আজ মহান স্বাধীনতা দিবস

সবার কাছে সুফল পৌঁছাতে হবে

-

আজ ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা দিবস। এ দিন সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে হানাদার বাহিনী উন্মত্ত হিংস্রতায় এ দেশের মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র নিয়ে পিলখানায় ইপিআর এবং রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রাবাস ও শিক্ষকদের বাসস্থানে হামলা চালায়। সেই সাথে বিভিন্ন স্থানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। বস্তি, টার্মিনালসহ জনবহুল এলাকায় ঝাঁপিয়ে পড়ে ঘুমন্ত মানুষের ওপর। আগুন ও হত্যার ভয়াবহ তাণ্ডব চলে সারা রাত। পরদিন থেকেই শুরু হয় গণমানুষের সশস্ত্র প্রতিরোধ। স্বাধীন ভূখণ্ডের লক্ষ্যে শুরু হয় চূড়ান্ত লড়াই। সেই থেকে দেশব্যাপী গড়ে ওঠে সর্বাত্মক প্রতিরোধ। এক কোটি মানুষ পাশের দেশ ভারতে আশ্রয় নেয় শরণার্থী হিসেবে। ভারতে গঠিত হয় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার। অবশেষে লাখ লাখ মানুষের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ ও অসংখ্য মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে একই বছরের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়। আজ আনন্দের দিনে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি, যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি এই স্বাধীন বাংলাদেশ। এখন আমাদের মহান দায়িত্ব একটি সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করা। যে লক্ষ্য সামনে রেখে এ দেশের মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তা অর্জনের মাধ্যমে স্বাধীনতার সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়া। কিন্তু গত ৪৯ বছরে আমরা সেই লক্ষ্য কতটা অর্জন করতে পেরেছি, এই প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের স্বাধীনতার চেতনা ছিল শোষণ-নিপীড়নমুক্ত সমাজ ও একটি দেশ গড়ে তোলার। তদুপরি, সমাজ ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করা এবং মানুষের ন্যায্য গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করা এবং পরিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ে তোলার। আমরা গণবিরোধী শাসনের নাগপাশমুক্ত হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার আওয়াজ তখনই তুলেছি, যখন তারা চরম অর্থনৈতিক শোষণ আর বৈষম্যের মাধ্যমে খর্ব করতে চেয়েছে আমাদের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার।
আমরা স্বাধীনতা সংগ্রামে গৌরবজনক সফলতা পেয়েছি। কিন্তু যেসব অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছিলাম, গত অর্ধশত বছরেও আমরা কি তা নিশ্চিত করতে পেরেছি? স্বীকার করতেই হবে, আমরা তা পরিপূর্ণভাবে অর্জন করতে পারিনি। মানুষে মানুষে অর্থনৈতিক বৈষম্য এখনো চরম। গণতন্ত্রের যে মহাবিপন্ন অবস্থা, এতটা সম্ভবত অতীতে আর কখনো ছিল না। বাক-ব্যক্তি-চিন্তার স্বাধীনতা আজ ভূলুণ্ঠিত। মানবাধিকার পদে পদে অস্বীকৃত ও লঙ্ঘিত। এখনো বাংলাদেশকে ঠাঁই নিতে হয় স্বৈরতান্ত্রিক দেশের তালিকায়। এ পরিস্থিতি কেন, সেই বিশ্লেষণ জরুরি।
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় স্থান পাওয়ার প্রথম সিঁড়িতে পা দিয়েছে। বলা হচ্ছে, দেশ ‘এখন উন্নয়নের মহাসড়কে উঠে গেছে।’ প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কি অনেক আগেই উন্নয়নশীল দেশের পর্যায়ে উন্নীত হতে পারতাম না কিংবা দেশকে দাঁড় করাতে পারতাম না উন্নত দেশের কাতারে? কেন পারিনি, তা জানতে স্বাধীনতা দিবসের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে আত্মসমালোচনা করতে হবে। স্বাধীনতার আনন্দঘন মুহূর্তে সেই উপলব্ধি জাগুক সবার মধ্যে, এই প্রত্যাশা। এই মহান দিনটিতে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করছি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার সহকর্মী ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী নেতৃবৃন্দকে। শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি সব শহীদ, মুক্তিযোদ্ধা ও নির্যাতিত মা-বোনদের। যে উদার, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে সাধারণ মানুষ অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিল, জীবনপণ শপথ করেছিল; তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব আমাদের সবার।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ভারতে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২ বিল দখলের চেষ্টা, জেলা ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি ‘শাহাদাতের তামান্নায় উজ্জীবিত হয়ে কাজ করলে বিজয় অনিবার্য’ কারাগারে নারী হাজতিকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, প্রধান কারারক্ষীসহ ৩ জনের বদলি

সকল