যে কালরাত জাতিকে তাড়া করে
- ২৫ মার্চ ২০২০, ০০:০০
আজ বুধবার ২৫ মার্চ। ভয়াল এক কৃষ্ণ রজনীর বীভৎস স্মৃতিবিজড়িত দিন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের রাতের আঁধারে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ওপর বর্বরোচিত ও পৈশাচিক হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। তারা যেন উন্মত্ত হয়ে উঠেছিল নির্বিচার নিধনযজ্ঞে। ১৯৭০-এর জাতীয় নির্বাচনে একচেটিয়া বিজয় অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া নিয়ে জুলফিকার আলী ভুট্টো ও ইয়াহিয়া খানের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন, সেই মুহূর্তে ক্ষমতাসীন জান্তা রাতের আঁধারে নানা ধরনের মারণাস্ত্র নিয়ে, এ দেশের বিক্ষুব্ধ ও প্রতিবাদরত মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রস্তুতি নেয়। এটা ছিল বাঙালি জনগণের রাজনৈতিক অধিকারের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা এবং প্রতারণার শামিল।
১৯৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পর স্বাভাবিকভাবেই সরকার গঠনের কথা ছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন দলটির। তবে এ ব্যাপারে বাদ সাধে তদানীন্তন পাকিস্তানের সামরিক শাসকগোষ্ঠী। এতে স্বাভাবিকভাবেই প্রচণ্ড প্রতিবাদী হয়ে ওঠে বাঙালি জনগণ। সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করার পরও ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ফলে সৃষ্টি হয় অভূতপূর্ব রাজনৈতিক অচলাবস্থা। এর নিরসনের প্রক্রিয়া চলাকালে পাকিস্তানি সেনারা কুখ্যাত ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নাম দিয়ে ২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় নিরীহ বাঙালি বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা ও ধ্বংসতাণ্ডব শুরু করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ সব প্রতিবাদী নাগরিককে হত্যা করা। তারা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ও আগুন দিয়ে হত্যা করে অসংখ্য সাধারণ মানুষকে। নির্মম এই হত্যাযজ্ঞই বাঙালিদের বাধ্য করেছিল সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করতে। নির্মমতার সমুচিত জবাব দিয়ে এ জাতি ৯ মাসের সশস্ত্র ও রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জন করেছে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।
জাতীয় সংসদের স্বীকৃতি প্রদানের পর ২৫ মার্চ তথা হানাদার বাহিনীর বর্বর হত্যাযজ্ঞের দিনটিকে কয়েক বছর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করতে অস্ত্র দিয়ে দমনের ব্যর্থ চেষ্টায় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতের গণহত্যা শুরু করার দিনটিকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দেয়া বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। আন্তর্জাতিকভাবেও প্রতি বছর দিনটি পালনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে জাতিসঙ্ঘে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সে প্রস্তাব সেখানে স্বীকৃতির অপেক্ষায় রয়েছে।
২৫ মার্চের কালরাতের সেই ভয়াবহ স্মৃতি আজো দেশবাসীকে তাড়িয়ে বেড়ায়। নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জনগণ এই গণহত্যা দিবস এবারো পালন করবে সারা দেশে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা