কারাগারে চাই সর্বোচ্চ সতর্কতা
- ২৩ মার্চ ২০২০, ০০:০০
করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সর্বোচ্চ সতর্কতা ও সাবধানতা অবলম্বনের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। এ ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার রকেট গতি মোকাবেলায় একমাত্র উপায় মানুষের সংস্পর্শ এড়ানো। জনসমাগম এড়িয়ে এ ভাইরাসে সংক্রমণের ঝুঁকি কমানো যায়। যেসব জায়গায় বেশি জনসমাগম হচ্ছে, সেখানে এটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ কারণে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে হাটবাজার বন্ধ করার সুযোগ নেই। আরেকটি ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা হচ্ছে কারাগার। অনেক দেশে কারাগার থেকে করোনার বিস্তার রোধ করতে বাড়তি নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে। ইরানে অনেক বন্দীকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। আমাদের দেশের কারাগারগুলো করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ইতোমধ্যে কথা উঠেছে যথেষ্ট সময় পাওয়ার পরও করোনা নিয়ে বাংলাদেশ যথেষ্ট সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে পারেনি। তাই কারাগারের ব্যাপারে সরকারের বাড়তি নজর দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
বাংলাদেশে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার ও ৫৫টি জেলা কারাগার রয়েছে। মোট ৬৮টি কারাগারে এখন বন্দী আছেন ৮৯ হাজার ৬০০ মানুষ, যা কারাগারগুলোর ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ বেশি। তারা অল্প জায়গার মধ্যে ঘিঞ্জি পরিবেশে থাকেন। একজনের জায়গায় কয়েকজনকে গাদাগাদি করে সেখানে রাখা হয়। তাদের থাকা-খাওয়ার জায়গা ও গণবাথরুম সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। একবার কোনোভাবে এখানে করোনার সংক্রমণ হলে, সেটা দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। ভেতর থেকে এই ভাইরাস আপনা থেকে ছড়াবে এ সম্ভাবনা দেখা যায় না। তবে তাদের খাবার-দাবারের মাধ্যমে এর সংক্রমণ হতে পারে। খাদ্যদ্রব্য আমদানিতে সাবধানতা দরকার এবং সেটা স্বাস্থ্যকর উপায়ে পরিবেশন করার জন্য মনোযোগী হতে হবে। আমাদের কারাগারগুলোর পরিচ্ছন্নতা নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে।
কারাগার সংশ্লিষ্ট ও বাইরের মানুষের মাধ্যমে কারাগারে সংক্রমণ হতে পারে। নতুন কারাবন্দী আমদানির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারাগারে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে বন্দীদের মেলামেশা হয়ে থাকে। এ ছাড়া প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ বন্দীদের সাথে দেখা করতে আসেন। উভয়ের মাধ্যমে কারা অভ্যন্তরে করোনার সংক্রমণ ঘটতে পারে। বাস্তবে কারা প্রশাসনের ঢিলেমির অনেক কথাই জানা যায়। বর্তমান অবস্থায় এমন ঢিলেমির কোনো সুযোগ নেই। খবরে জানা যাচ্ছে, কারা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। কারাগারে বন্দীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হচ্ছে। সতর্কতা হিসেবে অনেককে আলাদা রাখা হচ্ছে। নতুন আমদানি করা বন্দীদেরও আলাদা রাখা হচ্ছে। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ প্রকৃতপক্ষে যথাযথ পালন করা হচ্ছে কি না, সেটা নিশ্চিত করতে হবে কর্তৃপক্ষকে।
ইতালিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। প্রথমে তারা সতর্কতা অবলম্বন করতে পারেনি। নীরবে এ ভাইরাস দেশটিতে ছড়িয়ে গেছে। এখন সেখানে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আমাদের কারাগারগুলোর ব্যবস্থাপনা আগে থেকেই উন্নতমানের নয়। এগুলোতে বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু বন্দী মুক্ত করে দেয়া যায় কি না সেই আলোচনা এসেছে। বিশেষ করে যারা বড় দাগী অপরাধী নয়; কিংবা যারা বৃদ্ধ হয়ে গেছেন তাদের ব্যাপারে কথা এসেছে। আমরা মনে করি, বৃহৎ জনসমাগম ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা। সেখানে মানুষ যত বেশি হবে ঝুঁকি তত বেশি হবে। তাই দেশের সব ক’টি কারাগারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের গাফিলতি বড় বিপর্যয়ের সূচনা করতে পারে। সে রকম পরিস্থিতি থেকে বাঁচার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা