২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
ডাক্তার ১৪১ জনের বিপরীতে ১০ জন

কারাবন্দীদের চিকিৎসা কেন ‘সোনার হরিণ’?

-

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের কারাগারগুলো মিলিয়ে সামগ্রিকভাবে বন্দী মানুষের সংখ্যা এখন ধারণক্ষমতার চেয়েও দ্বিগুণের বেশি। এবার পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, গত ২৭ আগস্ট পর্যন্ত ৪০ হাজার ৬৬৪ জন বন্দী রাখার ব্যবস্থা রয়েছে আমাদের দেশের কারাগারগুলোতে। বাস্তবে আছে ৮৬ হাজার ৯৯৮ জন। এমন অবিশ্বাস্য ও মানবেতর অবস্থা চলে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, নিকট অতীতে কারাগারের পরিসর বেড়েছে এবং এর ফলে আগের চেয়ে বেশি বন্দীকে কারাগারে রাখা সম্ভব হয়েছে। এমনকি, ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারকে রাজধানীর উত্তরে গাজীপুরে এবং দক্ষিণে কেরানীগঞ্জ কয়েকটি ভবনে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবুও কারাগারগুলোতে বন্দীদের কিছুতেই স্থান সঙ্কুলান হচ্ছে না। বরং তাদেরকে বছরের পর বছর ধরে গাদাগাদি করে কোনো মতে দিন কাটাতে হচ্ছে। দেশের সব কারাগার মিলিয়ে বন্দীদের জন্য চিকিৎসকের অনুমোদিত পদ আছে মাত্র ১৪১টি। এই অপ্রতুল সুবিধাও বিদ্যমান নেই বাস্তবে। মাত্র ১০ জন ডাক্তার রয়েছেন ১৪১টি পদের বিপরীতে। অর্থাৎ অর্গানোগ্রাম মোতাবেক যতজন থাকার কথা, আছেন এর ১৪ ভাগের এক ভাগেরও কম। এ পরিসংখ্যান থেকে সহজেই অনুমেয়, বাংলাদেশের কারাবন্দীরা কতটা পাচ্ছেন চিকিৎসার মতো মানবিক ও মৌলিক অধিকার।
এই প্রেক্ষাপটে উচ্চ আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে। কারা কর্তৃপক্ষের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ২০ জনকে কারা চিকিৎসক হিসেবে পোস্টিং দেয়া হলেও তাদের মাত্র চারজন কাজে যোগ দিয়েছেন। বাকি ৮০ শতাংশ চিকিৎসক কেন স্বপদে যোগ দেননি, তা ১১ নভেম্বর, অর্থাৎ আগামী সোমবারের মধ্যে জানাতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন গত মঙ্গলবার।
উল্লেখ্য, এ বছর ২৩ জুন হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছিলেন, দেশের কারাগারগুলোতে বন্দী ধারণক্ষমতা, অবস্থানরত বন্দীর সংখ্যা এবং তাদের জন্য বাস্তবে ক’জন চিকিৎসক আছেন তার তালিকা ছয় সপ্তাহের মধ্যে পেশ করার জন্য। সেই সাথে কারাগারে চিকিৎসকের শূন্যপদের বর্তমান সংখ্যা জানাতেও বলা হয়েছিল আইজি প্রিজনকে। এর পাশাপাশি হাইকোর্ট রুল জারি করে বলেছেন, কারাগারে বন্দীদের চিকিৎসাসেবা সুনিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানাতে হবে। চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে আইন, স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য, সমাজকল্যাণ ও জনপ্রশাসনÑ এই পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি এবং আইজি প্রিজনকে বলা হয়। গত মঙ্গলবার কারা অধিদফতর প্রতিবেদন পেশ করে বলেছে, কারাগারে সরাসরি বা চুক্তির ভিত্তিতে কোনো চিকিৎসক নিয়োগের বিধান নেই এবং কেবল প্রেষণে বদলি করে কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশের ১৬ কোটি জনসংখ্যার তুলনায় কারাগারের ধারণক্ষমতা অনেক কম আগে থেকেই। এ দিকে, বিশেষত গত এক দশকে প্রধানত রাজনৈতিক কারণে এবং সমাজে অপরাধ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে গ্রেফতারের মাত্রা, তথা কারাবন্দীর সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সে অনুপাতে কারাগারের পরিসর বাড়েনি। আর বন্দীদের থাকা-খাওয়া-চিকিৎসাসহ মৌলিক প্রয়োজন পূরণের দিক দিয়ে অবর্ণনীয় সঙ্কটে কারাগারগুলো দীর্ঘকাল জর্জরিত। কিন্তু বিচারাধীন কিংবা দণ্ডিত, যাই হোক না কেন, কারাবন্দীদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা সরকারের একটি বড় দায়িত্ব। কোনো সরকারই বন্দীদের মানবাধিকার ক্ষুণœœ করতে পারে না।
আমাদের প্রত্যাশা, দেশের সব কারাগারেই বন্দীদের সুচিকিৎসাসহ যাবতীয় অধিকার পূরণ করার গুরুদায়িত্ব পালনে প্রশাসন আর বিলম্ব করবে না।

 


আরো সংবাদ



premium cement
মহানবীকে কটূক্তির প্রতিবাদে লালমোহনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ক্রিমিয়া সাগরে বিধ্বস্ত হলো রুশ সামরিক বিমান জর্ডান আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশী বিচারক এবারের আইপিএলে কমলা ও বেগুনি টুপির লড়াইয়ে কারা সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে সন্ত্রাসনির্ভর হয়ে গেছে : রিজভী রাশিয়ার ৯৯টি ক্ষেপণাস্ত্রের ৮৪টি ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন আওয়ামী লীগকে ‘ভারতীয় পণ্য’ বললেন গয়েশ্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে দাগনভুঞার যুবক নিহত কাশ্মিরে ট্যাক্সি খাদে পড়ে নিহত ১০ অবশেষে অধিনায়কের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছল পাকিস্তান জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান

সকল