জরুরি তদন্ত চাই
- ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০
দেশের মানুষের প্রাণিজ আমিষের জোগান আসে মাছ ও পশুপাখি থেকে। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সব বয়সী মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে প্রাণিজ খাদ্যের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। ফলে দেশে পশু মোটাতাজাকরণ ও হাঁস-মুরগির খামার ক্রমবর্ধমান শিল্পে রূপ নিয়েছে। এ খাতে লাখ লাখ মানুষ এখন অর্থ ও শ্রম বিনিয়োগ করছেন। এতে বিশেষ করে গ্রামীণ জনপদে হাজারো তরুণের বেকারত্ব ঘুচছে। এ সাফল্য এসেছে হাঁস-মুরগি ও পশুপালন এবং মাছ চাষে সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে খামারিদের আধুনিক উপকরণ ব্যবহারে। নিরাপদ প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি, দুগ্ধ উৎপাদন বাড়ানোসহ সংরক্ষণ, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও জাত উন্নয়নে সরকারি-বেসরকরি পর্যায়ে অব্যাহত প্রচেষ্টা লক্ষণীয়। দেশে দুধ, গোশত ও ডিমের উৎপাদন নিকট অতীতের চেয়ে কয়েক গুণ বেড়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের সূত্র বলছে, স্থিরমূল্যে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জিডিপিতে প্রাণিসম্পদ খাতের অবদান ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ। মোট কৃষিজ জিডিপিতে প্রাণিসম্পদ খাতের অবদান প্রায় ১৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। তা ছাড়া, একই অর্থবছরে প্রাণিসম্পদ খাতে উৎপাদিত কাঁচা ও প্রক্রিয়াজাত পণ্য রফতানি আয় ছিল প্রায় চার হাজার ৩১৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশে প্রাণিরোগের জন্য ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৩ হাজার কোটি ভ্যাকসিন আমদানি করা হয়েছে। গুণগত মান ও কার্যকারিতা যাচাই না করে আমদানির কারণে দেশের তিন হাজার পাঁচ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এমনকি, আমদানি করা ভ্যাকসিন যাচাই করার মতো ল্যাবরেটরিক্যাল কোনো যন্ত্রপাতিও দেশে নেই। তা সত্ত্বেও তিন হাজার কোটি টাকার ভ্যাকসিন আমদানির অনুমতি দেয়া হয়। অথচ প্রাণিসম্পদ খাতের ভিশন হচ্ছে, দেশে নিরাপদ দুধ, গোশত, ডিম উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় আমিষের চাহিদা পূরণ করে মেধাবী, স্বাস্থ্যবান ও বুদ্ধিদীপ্ত জাতি গঠন করা।
অবশ্য এখন চাইলেই দেশের প্রাণিসম্পদের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। কিন্তু এ খাত সম্প্রসারণের সাথে যে ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ সামনে আসবে, সেগুলো দক্ষতার সাথে মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়েই প্রাণিসম্পদ খাত সম্প্রসারণ করতে হবে। কারণ, প্রাণিজ খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও বণ্টনপ্রক্রিয়া অন্যান্য খাতের চেয়ে ভিন্ন ও জটিল। এ প্রক্রিয়া সমন্বিতভাবে গড়ে তুলতে না পারলে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে নতুন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। এর ফলে শিল্পটি হুমকিতে পড়াই স্বাভাবিক। কোনো ‘ফাঁক-ফোকর’ থাকলে মারাত্মক রোগ ও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এ খাতের উন্নয়নের ক্ষেত্রে এর সাথে জড়িত সব পক্ষ সমন্বিতভাবে কাজ করার বিকল্প নেই।
অবাক করা বিষয়, এমন একটি স্পর্শকাতর খাতে যাচাই ছাড়াই বিপুল টিকা আমদানি করা হয়েছে। এর কারণ কারো বোধগম্য নয়। এতে খামারিরা এক দিকে প্রতারিত হচ্ছেন; অন্য দিকে দেশের আর্থিক ক্ষতি হয়। ফলে দেশে প্রাণিসম্পদের উৎপাদন ব্যাহত হবে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, কী কারণে এবং কাদের স্বার্থে এতগুলো ভ্যাকসিন আমদানি করা হলো? বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা জরুরি। যাচাই ছাড়া প্রাণিজ টিকা আমদানি করে কেউ অবৈধভাবে আর্থিক সুযোগ নিয়েছেন কি না; তা-ও তদন্ত করতে হবে। তা না হলে আগামীতে এমন অর্বাচীন কর্মকাণ্ড প্রাণিসম্পদ খাতকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা