১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বাংলাদেশের পোশাক রফাতানি প্রবৃদ্ধি ২.৮৬ শতাংশে নেমেছে

বাংলাদেশের পোশাক রফাতানি প্রবৃদ্ধি ২.৮৬ শতাংশে নেমেছে - সংগৃহীত

চলতি (২০২৩-২৪) অর্থবছরে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানিনিতে প্রবৃদ্ধির শ্লথগতি হয়েছে বলে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশ করা তথ্যে উঠে এসেছে।

তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, ১১ মাসে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৮৬ শতাংশে নেমে এসেছে।

২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের মে পর্যন্ত পোশাক রফতানি দাঁড়িয়েছে ৪৩ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার। যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময় রফতানি ছিল ৪২ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার। এতে প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমকি ৬৭ শতাংশ।

চলতি বছরের এপ্রিল ও মে মাসে রফতানি একটানা কমে যাওয়ার ফলে বিগত ১১ মাসের গড় রফতানিতে মন্দাভাব সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল জানান, ১১ মাসে আমাদের পোশাক রফতানি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ পিছিয়ে পড়েছে।

রুবেল আরো বলেন, গেল মে মাসে নিটওয়্যার পণ্যের প্রবৃদ্ধি ২০ দশমিক ৭৫ কমেছে এবং ওভেন পোশাক রফতানি ১২ দশমিক ৪৮ শতাংশ কমেছে।

সম্প্রতি বিশ্ব অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি এবং তা নিয়ন্ত্রণে সুদহার বৃদ্ধির ফলে ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতা কমেছে। ফলে পোশাকের খুচরা বিক্রয় ও আমদানি কমেছে (২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক পোশাক আমদানি কমেছে ৭ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং ইউরোপের কমেছে ১২ দশমিক ৮৪)। পাশাপাশি ইউনিট প্রতি পণ্যের উল্লেখযোগ্য দরপতন (২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে আমাদের প্রধান পণ্যের দরপতন হয়েছে ৮ থেকে ১৮ শতাংশ) রফতানি কমার অন্যতম কারণ।

বিশেষ করে নূন্যতম মজুরি বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ-গ্যাস-পরিবহন খরচ বৃদ্ধি, ব্যাংক সুদ সিঙ্গেল ডিজিট থেকে ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ হওয়া, এবং এই সংকটময় সময়ে নগদ সহায়তা কমিয়ে আনার ফলে শিল্প প্রতিযোগি সক্ষমতার দিক থেকে পিছিয়ে পড়ছে। তার কিছুটা প্রতিফলন রফতানি প্রবৃদ্ধিতে ফুটে উঠেছে।

পোশাকখাতকে নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে টিকে থাকতে হচ্ছে। আমরা একদিকে এনবিআর, বন্দর ও ব্যাংকিং সংক্রান্ত জটিলতা মোকাবিলা করছি। অন্যদিকে শিল্পাঞ্চলের বাইরে নতুন কোনো কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ ও ব্যাংক ঋণ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, যা আমরা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছি। এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে বিনিয়োগ ও রফতানি আরো বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

২০৩০ সাল নাগাদ আমরা ১০০ বিলিয়ন ডলার রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছি এবং সেই অনুযায়ী উদ্যেক্তারা নতুন পণ্যে বিনিয়োগ করছেন এবং নতুন বাজার তৈরিতে তৎপর আছেন। আমরা বিশ্বাস করি বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, রপ্তানি আয় ও অর্থনীতির কাঙ্ক্ষি প্রবৃদ্ধির স্বার্থে সরকার পোশাক খাতের জন্য বিকল্প ইনসেনটিভ প্রবর্তনের আগ পর্যন্ত চলমান সকল সহায়তা অব্যাহত রাখবে এবং এর মাধ্যমে শিল্পের উৎকর্ষতা ও টেকসই হওয়ার পথটি মসৃণ করতে সহযোগিতা করবে।
সূত্র : ইউএনবি


আরো সংবাদ



premium cement