২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দেশে কোরবানিযোগ্য পশু আছে সোয়া কোটি

বক্তব্য রাখছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ। - ছবি : নয়া দিগন্ত

দেশে প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ কোরবানি যোগ্য পশু রয়েছে। গতবার প্রায় ৯৯ লাখ গবাদিপশু কোরবানি হয়েছিল। অবিক্রিত থেকে গিয়েছিল প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ গবাদিপশু। এবার যেহেতু নির্বাচনী বছর, তাই কোরবানিও কিছুটা বেশি হবে বলে মনে করছেন খামারিসহ সংশ্লিষ্টরা। সেক্ষেত্রে এবার ১ কোটি ৫ লাখ থেকে ১ কোটি ১০ লাখ পশু কোরবানি হতে পারে। সেক্ষেত্রে এবারো প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ পশু অতিরিক্ত থেকে যাবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো: ইমরান হোসেন।

খামারিরা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরে দেশীয় গবাদিপশু দিয়েই কোরবানি সম্পন্ন হচ্ছে। এবারো অতিরিক্ত গরু দেশে থাকা সত্ত্বেও অবৈধপথে একাধিক দেশ থেকে গরু আসছে। এটা বন্ধ করতে হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ বলেন,‘গত ঈদুল আজহার চাইতে বেশি কোরবানিযোগ্য পশু এবার প্রস্তুত রয়েছে। এখন পর্যন্ত খামারি ও প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত রয়েছে। এ সংখ্যা বাড়তে পারে। সুতরাং এবার দেশের বাইরে থেকে কোনো পশু আমদানির প্রয়োজন হবে না। তাই আমরা সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছি। এ জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে, যেন বাইরে থেকে কোনো পশু প্রবেশ না করে।’

শনিবার (১০ জুন) রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) কার্যালয় এবং সাদিক এগ্রোর গরুর খামার পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সচিব এসব কথা বলেন।

ড. নাহিদ রশীদ বলেন, ‘গত বছর কোরবানিরযোগ্য পশু ছিল ১ কোটি ২১ লাখ। কিন্তু গত বছর ঈদুল আজহায় ৯৯ লাখ ৫০ হাজার পশু কোরবানি হয়েছিল। সেই হিসাবে এবার কোরবানি বাড়লেও পশুর সঙ্কট হবে না।’

বিভিন্ন উপায়ে দেশের বাইরে থেকে পশু দেশে ঢুকছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. নাহিদ রশীদ বলেন,‘আমরা নিজেরা যেহেতু চোরাচালান বা সীমান্তের বিষয়টা দেখি না। অন্য মন্ত্রণালয় বা প্রতিষ্ঠান দেখে। তাই আমরা চেষ্টা করছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিজিবির সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। এমনকি দেশের বাইরে থেকে যেন গোশত ঢুকতে না পারে সেদিকেও নজরদারি রয়েছে।’

খামারিদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঈদের আগে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোরবানির পশুবিক্রেতা বা খামারি পর্যায়ে কেউ যেন অযথা হয়রানি বা চাঁদাবাজির শিকার না হন, সেজন্য জাতীয় জরুরি সেবার হটলাইন নম্বর ৯৯৯ যুক্ত করার বিষয়ে আশ্বাস দেন সচিব। এর বাইরে অন্য কোনো হটলাইন নম্বর যুক্ত করার প্রয়োজন থাকলেও সেটিও আগামী ১৪ জুন আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান তিনি।

পশুখাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণেই গরুসহ অন্যান্য গবাদিপশুর উৎপাদন খরচ বাড়ছে। পশুখাদ্যের দাম কমানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. মো: এমদাদুল হক তালুকদার বলেন,‘ইতোমধ্যে পশুখাদ্যের দাম কিছুটা কমাতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এখন কিন্তু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রচুর ঘাস উৎপাদন হচ্ছে। ফলে দাম অনেকটা কমাতে সক্ষম হয়েছি। আগামী দুই-তিন মাস পর থেকে খাদ্যেদ্রব্যের দাম আরো কমিয়ে আনতে সক্ষম হবো বলে আশা করছি।’

খামার থেকে কেনা পশুর জন্য হাসিলমুক্ত রাখার বিষয়টি মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারির অনুরোধ জানান বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো: ইমরান হোসেন। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন সচিব। আগামী ১৪ জুন আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় বিষয়টি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement