২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এনআইডি থাকলেই রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা উচিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বক্তব্য রাখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। - ছবি : সংগৃহীত

করের আওতা বাড়াতে যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) রয়েছে তাদের রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মুহিত ভাই (আবুল মাল আবদুল মুহিত) অর্থমন্ত্রী থাকার সময় আমি করের আওতা বাড়ানোর জন্য এনআইডি যাদের আছে, তাদের সবাইকে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করেছিলাম। তিনি রাজিও হয়েছিলেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেটি হয়নি আমলাতন্ত্রের কারণে। এনআইডি যাদের আছে সবাইকে করের আওতায় আনতে পারলে সাত থেকে আট শতাংশ কর জিডিপির হার বাড়বে। বর্তমানে এক শতাংশ মানুষ করের আওতায় রয়েছে।

শনিবার (২৭ মে) পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) অডিটোরিয়ামে মরহুম অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ইআরএফের সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মৃধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফজলে কবির ও সাবেক অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। অনুষ্ঠানে ইআরএফের কয়েকজন সিনিয়র সদস্য সাবেক অর্থমন্ত্রীর স্মৃতিচারণ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে আরো বলেন, ১৭ কোটি মানুষের দেশ অথচ ট্যাক্স দেয় মাত্র সাড়ে সাত থেকে আট শতাংশ লোক। তখন আমি ভাইকে বলেছিলাম, আমেরিকায় যাদের সোশ্যাল সিকিউরিটি কার্ড আছে তাদের ট্যাক্স দিতে হয়। যাদের আয় সাড়ে ৩ হাজার ডলারের নিচে তাদের ট্যাক্স দিতে হয় না। আর যাদের এর ওপরে তাদের ট্যাক্স দিতে হয়। অথচ আমাদের দেশে করদাতা টিন নম্বর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। এমনকি কোম্পানি ও করপোরেশনগুলো টিন নম্বর করেছে। এজন্য আমি বলেছিলাম, যাদের এনআইডি আছে তাদের সবাইকে ট্যাক্স দিতে হবে। এটা সম্ভব। তিনি এ বিষয়ে আমলাদের যাচাই-বাছাইয়ের জন্য বলেছেন। এখন এটা আমার দাবি, কারণ আমাদের করদাতা বাড়াতে হবে। এজন্য যারই এনআইডি থাকবে তাকেই ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করতে হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকারপ্রধান হিসেবে শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল মাল আবদুল মুহিত জুটির কারণে দেশ ও মানুষের মঙ্গল হয়েছে। কারণ শেখ হাসিনা মানুষের মঙ্গল চান। আর এ মঙ্গল কীভাবে অর্জন করা যায়, সেই মাধ্যম বের করতেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। একই সাথে সেটা বাস্তবায়ন করার জন্য এ জুটি সব সময় কাজ করেছেন। তার ফলে আজ আমাদের দেশের চেহারা পালটে গেছে।

সৌদিতে স্থায়ী মিশন খোলার বিষয়ে মুহিতের সহযোগিতার কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার সময় ২৭টি মিশন করা হয়েছে এবং কেনা হয়েছে। সৌদি আরবে ৩৭ বছর পর শেখ হাসিনার সময়ে মিশন হয়েছে। সব মিলিয়ে নিজেদের মিশন থাকার কারণে সরকারের ৪৭ হাজার ডলারের মতো সেভ হচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অর্থের অভাবে মিশনগুলোতে জাতীয় দিবসগুলো উদযাপন করা হতো না। সেটা জানার পর প্রধানমন্ত্রীর সামনেই মুহিত ভাই অর্থ দেয়ার জন্য রাজি হয়ে গেলেন। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সাবেক গভর্নর ফজলে কবির বলেন, মুহিত স্যার ছিলেন একজন বড় মনের অর্থনীতিবিদ। সব কিছুকে তিনি সহজভাবে নিতেন।

সাবেক অর্থসচিব মাহাবুব আহমেদ বলেন, রাত ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত তিনি জেগে জেগে ফাইল দেখতেন, পড়াশোনা করতেন। কম ঘুমিয়ে কাজ করতে পারতেন। তার প্রচুর প্রাণশক্তি ছিল। ম্যানিলায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশ আরো ভালো করতে পারতো। মিয়ানমারের মত ‘রগ’ স্টেট (দুবৃত্ত রাষ্ট্র) থাকার কারণে তা সম্ভব হয়নি। এ কথা শুনে মিয়ানমার প্রতিনিধি আপত্তি জানিয়ে নাখশ হয়েছিলেন। কিন্তু মুহিত স্যার তার কথা ফিরিয়ে নেননি। সেটি পরবর্তীতে কার্যপত্রে লিখে রাখা হয়েছিল।


আরো সংবাদ



premium cement