২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নৌ-পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার

নৌ-পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। - ছবি : নয়া দিগন্ত

নৌ-পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা চলমান ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। সোমবার (২৮ নভেম্বর) শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের সাথে নৌযান মালিক ও শ্রমিকদের সংগঠনের বৈঠকের পরে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) খালেদ মামুন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শ্রম ভবনে আয়োজিত বৈঠক শেষে প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের উপস্থিতিতে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম এ ঘোষণা দেন।

শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, ‘আমি বলব না মালিক বা শ্রমিক পক্ষ ঝামেলা সৃষ্টি করেছে। তবে ঝামেলা একটা হয়েছে, যেখান থেকে মামলা হয়েছে। মামলা থাকবে। সেটা আমি দেখব। মারামারি কিন্তু ভালো বিষয় নয়। মামলা প্রত্যাহার হবে। যারা আসামি হয়ে জেলহাজতে গিয়েছেন তাদের জামিনেরও ব্যবস্থা করব। কিন্তু এ সমস্যার স্থায়ী একটা বিহিত হওয়া দরকার।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রস্তাবনা প্রণয়ন কমিটি গঠিত হয়েছে। শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তায় অন্তর্বর্তীকালীন টোকেনের ব্যবস্থা করা হবে। এক মাসের মধ্যে গঠিত কমিটি মজুরি নির্ধারণ ও গেজেট আকারে প্রকাশ করবে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যেকোনো সমস্যায় মালিকের চেয়ে শ্রমিকের ক্ষতিটাই বেশি। কারণ শ্রমিকের সমস্যা টের পাওয়া যায় প্রথম দিন থেকেই। যে কারণে তাদের সমস্যার সমাধান আগে দরকার। মালিক পক্ষের দরদ শ্রমিকের প্রতি। শ্রমিকদেরও মালিকের প্রতি দরদ থাকার কথা, সেখানে ব্যত্যয় ঘটছে।’

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো: শাহ আলম কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে বলেন, আমরা ১০ দাবি নিয়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করছি। আমাদের সৌহার্দ্যপূর্ণ সভা হয়েছে। শ্রমিকদের মজুরি কাঠামো নির্ধারণে এক মাসের মধ্যে কমিটি গঠন ও মামলা প্রত্যাহারসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে আশ্বস্ত করা হয়েছে। আমরা মনে করি, সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।

শাহ আলম বলেন, এই মুহূর্ত থেকে সব শ্রমিককে কাজে ফিরতে আহ্বান করছি। যাত্রীবাহী লঞ্চের শ্রমিকদেরও যথাযথভাবে যাত্রী পারাপারের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

সভায় নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, বিআইডব্লিউটি, শিপিং করপোরেশন, নৌ-যান মালিক ও শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

নৌযান শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ও কর্মক্ষেত্রে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণসহ বিভিন্ন দাবিতে গত শনিবার দিবাগত রাত থেকে সারাদেশে কর্মবিরতি পালন করেছেন নৌযান শ্রমিকরা। কর্মবিরতির কারণে সোমবার বিকেল পর্যন্ত সদরঘাট থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।

নৌযান শ্রমিকদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
- নৌযান শ্রমিকদের বেতন সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা
- ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিংপাস দিতে হবে
- বাল্কহেডের রাত্রিকালীন চলাচলের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা
- বাংলাদেশের বন্দরগুলো থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করা
- চট্টগ্রাম বন্দরে পোতাশ্রয় নির্মাণ ও চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল করা
- চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহের চলমান কার্যক্রম বন্ধ করা
- কর্মস্থলে ও দুর্ঘটনায় মৃত্যুজনিত ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে
- কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা।


আরো সংবাদ



premium cement