২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

পর্যাপ্ত ইলিশ না পেয়ে হতাশ জেলেরা

পর্যাপ্ত ইলিশ না পেয়ে হতাশ জেলেরা - ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের উপকূলের জেলেরা সম্প্রতি অভিযোগ করছেন যে তারা নদী ও সমুদ্রে পর্যাপ্ত ইলিশ মাছ পাচ্ছেন না। বিশেষজ্ঞরা এর জন্য অবৈধ ও অতিরিক্ত মাছশিকারের পাশাপাশি পরিবেশগত কয়েকটি কারণকেও দুষছেন।

উপকূলীয় অঞ্চল থেকে ফিরে আরো জানাচ্ছেন যুবায়ের আহমেদ।

বাংলাদেশের মাছের যোগানের একটা বড় অংশ আসে উপকূলীয় অঞ্চল থেকে। কিন্তু মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনার জেলেরা অভিযোগ করছেন যে তারা আগের মতো মাছ পাচ্ছেন না।

৫০ বছর বয়সি মোহাম্মদ বাবুল তাদের একজন। তিনি মোহনায় জাতীয় মাছ ইলিশ ধরেন। দেশটির মাছ উৎপাদনের বড় অংশের যোগান আসে ইলিশ থেকে।

তিনি বলেন, ‘আগে ঠিকমতো মাছ পেতাম। কিন্তু গেল তিন মৌসুম ধরে মাছ পাচ্ছি না। আগে বছরে পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকার মাছ পেতাম। এখন দুই লাখ টাকার মাছ পেতেই খবর হয়ে যায়। কারণ গাঙে মাছ নেই।’

এর কারণ জিজ্ঞেস করলে বাবুল ডয়চে ভেলেকে নিয়ে যান বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা নতুন এক চরে। স্থানীয় এক জেলের নামানুসারে তারা এই চরকে ডাকেন ‘বশিরের চর’ বলে। তার ধারণা, এই চরের কারণেই মাছ চলাচল করে নদীর দিকে আসতে পারছে না। তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরের মোহনায় এমন বেশ কয়েকটি চর জেগেছে।

বাবুল বলেন, ‘এই চরগুলো একেবারে বাঁধের মতো জেগে উঠেছে। তাই মাছ সমুদ্র থেকে আমাদের এলাকার দিকে আসতে পারছে না। তাই আমরা খুব কম মাছ পাই। গেল কয়েক বছরে এই চরগুলো একেবারে এলোমেলোভাবে জেগে উঠেছে।

নদীমাতৃক দেশটি এখন বছরে ৪৫ লাখ টন মাছ উৎপাদন করে। এর অর্ধেকেরও বেশি আসে চাষ থেকে।

বিশ্লেষকরা বলেন, সম্প্রতি উপকূলে মাছের যোগানে ভাটা পড়েছে। বিশেষ করে ইলিশের মতো পরিযায়ী মাছের। ওয়ার্ল্ড ফিশের হিসেবে, ২০১৯ সাল থেকে ইলিশ উৎপাদনের হার কমছে। এ সময় লক্ষ্য ছিল ছয় লাখ টন ইলিশ উৎপাদনের। কিন্তু তা সাড়ে পাঁচ লাখ টনের বেশি হচ্ছে না।

ওয়ার্ল্ড ফিশের বিশ্লেষক ড. আবদুল ওয়াহাব বলেন, ‘অনেকগুলো ছোট চর জেগে উঠেছে। এগুলো সাময়িক হবার কথা থাকলেও, ইদানিং আমরা দেখছি চরগুলো গড়ছেই বেশি, ভাঙছে কম। মাছের গতিপথ ছোট হয়ে আসছে। নদীর তলদেশও ভরাট হয়ে আসছে।

তিনি বলেন, ইদানিং মাছের অভিপ্রয়ানের সময় নদীর তাপমাত্রাও বেশি হচ্ছে। তবে এসব ফ্যাক্টর নিয়ে আরো গবেষণার দরকার আছে বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে, সমুদ্রের মাঝে মাছের খোঁজে থাকা বাবুল এসব বিজ্ঞান বোঝেন না। যেটা বোঝেন তা হলো, হয়তো আজও তাকে অল্প শিকারেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।

সূত্র : ডয়েচে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement