২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দুর্যোগে ক্ষতির কারণেই চাল আমদানি?

দুর্যোগে ক্ষতির কারণেই চাল আমদানি? - ফাইল ছবি

সরকারের নীতিনির্ধারকেরা প্রতিনিয়তই বলছেন, ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে৷ তাহলে প্রতি বছর কেন এত চাল আমদানি করতে হচ্ছে? গত অর্থ বছরে তো বাংলাদেশ চাল আমদানিতে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল।

ধান-চাল নিয়ে যারা কাজ করেন তারা বলছেন, দুর্যোগে ক্ষতি আর মজুদ শক্ত করতেই চাল আমদানি করতে হয়৷ এ বছরও ৩ লাখ টন ধান দুর্যোগে নষ্ট হয়েছে৷ পাশাপাশি মানুষের জন্য যেটুকু প্রয়োজন সেটা এখানে উৎপাদন হচ্ছে৷ কিন্তু গবাদি পশু আর পোল্ট্রির জন্য বছরে লাগে ৩৬ লাখ টন চাল৷ সেটা সামাল দিতেই আমদানি করতে হচ্ছে৷ এবার গমের সঙ্কটের কারণে ধানের উৎপাদন বাড়লেও চাল আমদানিও বাড়তে পারে৷ কারণ নিম্নবিত্ত মানুষ অনেকেই রুটির পরিবর্তে এখন ভাত খাচ্ছেন৷

ধান উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের কথা বললেও এত চাল কেন আমদানি করতে হচ্ছে? জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের একজন মানুষও না খেয়ে থাকবে না৷ দুর্যোগ আর গমের সঙ্কটের কারণে এবার কি চালের আমদানি বাড়তে পারে? এ প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি মন্ত্রী, আর কোনো মন্তব্যও করতে চাননি৷

প্রতি বছরই বাংলাদেশ চাল আমদানি করে৷ এর মধ্যে আবার রফতানিও হচ্ছে৷ গত এক যুগে সুগন্ধি চালের রফতানি বেড়েছে ১০ গুণের বেশি৷ গত দুই বছরে যা ছুঁয়েছে ১০ হাজার টনের মাইলফলক৷

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংয়ের তথ্য বলছে, দেশ থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর ৯ হাজার ৫১৭ টন সুগন্ধি চাল বিদেশে রফতানি হয়েছে৷ আগের অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৮৭৯ টন। এছাড়া ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫ হাজার ৮০৫ টন এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৮ হাজার ২১০ টন চাল রফতানি হয়। অথচ ২০০৯-১০ অর্থবছরে মাত্র ৬৬৩ টন সুগন্ধি চাল রফতানি করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। যেটা বেড়ে প্রায় ১১ হাজার টন ছুঁয়েছে৷

এ বছর দুর্যোগের কারণে কী পরিমাণ ধান নষ্ট হয়েছে তা জানা গেছে কিনা জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো: বেনজীর আলম বলেন, প্রতি বছরই দুর্যোগের কারণে কিছু না কিছু ধান নষ্ট হয়, সেই প্রস্তুতিও আমাদের থাকে৷ তবে গত বছর ৪০ লাখ ৯২ হাজার বর্গ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছিল৷ এ বছর ৪৯ লাখ ৬৩ হাজার বর্গ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে৷ এবার দুর্যোগের কারণে ১৮ হাজার হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে৷ এতে ৩ লাখ টনের মতো ফলন কম হবে। গত বছর আমাদের উৎপাদন ছিল ২ কোটি ১৬ টন৷ আর এবার উৎপাদন হবে ২ কোটি ৮ লাখ টন৷ এ বছর আমাদের উৎপাদন বাড়বে৷ তবে বছর শেষ হলে হিসাবটা বোঝা যাবে৷

আমাদের চাহিদার তুলনায় এই উৎপাদন কম না বেশি? জানতে চাইলে আলম বলেন, আমাদের নিজেদের খাওয়ার জন্য যে চাল প্রয়োজন সেটা এই উৎপাদন দিয়ে হয়ে যায়৷ কিন্তু সরকারকে তো আপদকালীন বড় ধরনের মজুদ রাখতে হয়৷ সেটাই আমদানি করা হয়৷ এর বাইরে ৩৬ লাখ টন চাল লাগে পোল্ট্রি আর গবাদি পশুর খাবারের জন্য৷ এই দুই সেক্টরই আমাদের এখানে বেড়েছে৷ ফলে সব মিলিয়ে তো কিছু চাল আমদানি করতেই হয়৷ এবারও আমাদের সেই প্রস্তুতি আছে, কোনো সমস্যা হবে না৷

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে দেশে আমদানি নির্ভরতা বেড়েছে৷ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আমদানি নির্ভরতার হার ছিল ১৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ৷ তবে এ নির্ভরতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে৷ ওই বছর দেশে খাদ্যশস্যের আমদানি নির্ভরতার হার দাঁড়ায় ২৬ দশমিক ১৪ শতাংশে৷ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ওই সময় দেশে প্রায় ১ কোটি টন খাদ্যশস্য আমদানি করতে হয়েছিল৷ এর আগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আমদানি নির্ভরতার হার ছিল ১৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ৷ তার আগের অর্থবছরে (২০১৫-১৬) এ হার ছিল ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ৷ ২০২০-২১ বাণিজ্য বছরে বাংলাদেশ ২৬ লাখ ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করেছে৷ যা বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement
জামালপুরে হিট স্ট্রোকে মরিচ ব্যবসায়ীর মৃত্যু প্রধানমন্ত্রী ৬ দিনের সফরে বুধবার থাইল্যান্ড যাচ্ছেন রায়গঞ্জে পাটভর্তি ট্রাকে আগুন জামালপুরে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টা ৪৬তম বিসিএস প্রিলি পরীক্ষার আসন বিন্যাস প্রকাশ ছোট দেশ কাতার অর্থনীতি ও কূটনীতিতে যেভাবে এত এগোল আশুলিয়ায় ছিনতাইকারীর হামলায় আহত নারীর মৃত্যু ‘মুসলিমদের সম্পদ পুনর্বণ্টন’ অভিযোগ মোদির, এফআইআর সিপিএমের প্রথম ধাপের উপজেলা ভোটে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী বিখ্যাত চালকবিহীনবিমানের আবিষ্কারক কটিয়াদীতে আসছেন গাজার গণকবরের ‘বিশ্বাসযোগ্য ও স্বাধীন’ তদন্তের আহ্বান জাতিসঙ্ঘের

সকল