রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পারমাণবিক চুল্লি স্থাপন করা হবে ১০ অক্টোবর

রূপপুরে ৬০ বছর পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পে পারমাণবিক চুল্লি বা নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল ১০ অক্টোবর স্থাপন করা হবে। এটাকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের হৃদপিণ্ড বলা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন।

রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেজ ওসমান। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন রসাটমের প্রধান নির্বাহী আলেক্সি লিখাচোখ ও এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট গ্রুপ অব কোম্পানীজ এর প্রসিডেন্ট আলেকজান্ডার লকসিন।

আরো উপস্থিত থাকবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান, রূপপুর প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শৌকত আকবর। এছাড়াও জনপ্রতিনিধি পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্মকর্তাবৃন্দ, সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, রসাটম ও এটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের কর্মকর্তা, দেশি ও আন্তজার্তিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিচালক ড. শওকত আকবর বলেছেন, নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনের মাধ্যমে আরো একধাপ এগিয়ে গেল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ। শিডিউল অনুযায়ী নির্ধারিত সময়েই কাজ শেষ করার প্রত্যাশা করেন তিনি।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিয়ে করে রুশ নকশার আওতায় রূপপুরে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার ভিভিআর-প্রযুক্তির রিয়্যাক্টরের দুটি ইউনিট তৈরি হবে। শিডিউল অনুসারে ২০২৩ সালে ইউনিট-১, ২০২৪ সালের ইউনিট-২ চালুর জন্য সময় নির্ধারিত রয়েছে।

জানা গেছে ,২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ান ফেডারেশনের রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন রোসাটোম ঈশ্বরদীর রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করে। ১২.৬৫ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পের প্রাথমিক চুক্তিটি ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালে তৎকালীন পাক সরকার পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৬২ থেকে ১৯৬৮ পর্যন্ত পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানার পদ্মা নদী তীরবর্তী রূপপুরকে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থান হিসেবে নির্বাচন এবং প্রকল্পের জন্য ২৬০ একর ও আবাসিক এলাকার জন্য ৩২ একর জমি অধিগ্রহণ করে। অবশেষে উদ্যোগ গ্রহণের ৬০ বছর পর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে।