২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ক্রেতাদের প্রশংসা কুড়াচ্ছে আলেমদের 'তুহফা সুপারশপ'

ক্রেতাদের প্রশংসা কুড়াচ্ছে আলেমদের 'তুহফা সুপারশপ' - ছবি সংগৃহীত

দেশের নাগরিকদের বড় একটি অংশ মাদরাসার শিক্ষার্থী ও মাদরাসা থেকে পড়াশোনা সমাপ্ত করা আলেমরা। যাদের বেশিরভাগের কর্মক্ষেত্র মসজিদ মাদরাসা ও ধর্মীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।তবে, আলেমদের অনেকেই এখন যুক্ত হচ্ছেন নানা পেশায়। কেউ বেছে নিচ্ছেন ব্যবসার পথ। কেউ করছেন সাংবাদিকতা। আবার কেউবা করছেন সমাজসেবা। আলেম হয়েও যে ব্যবসা করা যায় এই বাস্তবতাকে স্বীকার করছেন এখন অনেকেই।

রোড ১৩, ব্লক এল, রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনশ্রী। যেখানে কিছু দিনের ব্যবধানে গড়ে উঠেছে অনেকগুলো দৃষ্টিনন্দন সুপার শপ। যার মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে তরুণ তিন আলেমের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তুহফা লিমিটেডের একটি শাখা প্রতিষ্ঠান 'তুহফা শপ'। গত ৭ মে অত্যন্ত জমকালে আয়োজনে সুপার শপটি উদ্বোধন করা হয়।

ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী সেবা, চোখ ধাঁধানো ডেকোরেশন ও সুন্নাহ কর্নারের কারণে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হচ্ছে তুহফা শপ। অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনেও কেনাকাটাসহ অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন ক্রেতারা।

তুহফা লিমিটেডের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান জাবের বলেন, আলেমদের একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এতটা জনপ্রিয়তা লাভ করবে, তাও আবার এত কম সময়ে, ভাবতেও পারিনি। মূলত আলেমদের প্রতি দেশের মানুষ আস্থা রাখতে ভালোবাসেন এবং আমরা সেই আস্থা ধরে রাখার জন্য শতভাগ সততার সাথে ব্যবসা করছি। এছাড়াও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, মনোরম ও নিরিবিলি পরিবেশে নিরাপত্তার সাথে-পছন্দমতো সব ধরণের পণ্য কেনাকাটার সুযোগ রয়েছে আমাদের শপে।

মাহফুজুর রহমান জাবের আরো বলেন, যেহেতু আমি তরুণ এবং এই কোম্পানির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আবু রায়হান ও ডাইরেক্টর আরিফ আরিয়ানও তরুণ, তাই আশা করছি এই সুপার শপটি তরুণদেরকে উদ্যোক্তা হিসাবে চিন্তা-ভাবনা করতে নতুন করে অনুপ্রেরণা যোগাবে এবং বহু কর্মসংস্থান তৈরীতে এটি একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে ইনশাআল্লাহ।

তুহফা লিমিটেড, তুহফা শপ এবং নতুন ২০টি এক্সপ্রেস শপ 'রিজিক বাজার' -এর সফলতার জন্য মাওলানা মাহফুজুর রহমান জাবের সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।

দেশের কয়েক হাজার তরুণ আলেম বর্তমানে নতুন করে ব্যবসা শুরু করেছেন। এক্ষেত্রে তারা সফলও হচ্ছেন। দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমরাও ইলম চর্চার পাশাপাশি তরুণ আলেমদের ব্যবসার দিকে ধাবিত হওয়াকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন।

কথা হয় গবেষক আলেম ও চট্টগ্রাম ওমর গণি কলেজের ইতিহাসের সাবেক অধ্যাপক ড. আ ফ ম খালিদ হুসাইনের সাথে। তিনি বলেন, তরুণ আলেমদের ব্যবসা করার বিষয়টিকে আমি ইতিবাচক হিসেবেই দেখতে চাই।

কারণ, নবীজি সা. ও সাহাবায়ে কেরামের জীবনের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যায়, তারাও ব্যবসা করেছেন। হজরত আবু বকর, উমর, উসমান, এবং হযরত আবদুর রহমান বিন আউফ রা. অনেক বড় ব্যবসায়ী ছিলেন। সুতরাং আলেমরা ব্যবসার দিকে ধাবিত হচ্ছেন এটি একটি ইতিবাচক দিক। এর দ্বারা আলেমরা স্বাবলম্বী হবেন এবং সমাজের প্রতি তাদের মুখাপেক্ষিতা কমবে।

বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার সাবেক মহাপরিচালক মাওলানা জুবায়ের আহমদ চৌধুরী বলেন, ইসলামে ব্যবসা শুধু বৈধই নয় বরং এ কাজে মানুষকে উৎসাহিতও করা হয়েছে।

জিবিকা উপার্জনের যত পথ-পদ্ধতি আছে, তার মধ্যে ব্যবসায় বরকত বেশি। শর্ত হলো হালাল ব্যবসা হতে হবে। আলেমরা যদি ব্যবসা করেন, তাহলে হালাল ব্যবসার প্রচলন বেশি হবে। সুতরাং ব্যবসা করতে কোনো অসুবিধা নেই।

তিনি বলেন, আমার পরামর্শ হলো, যেসব আলেমরা মাদরাসা মসজিদে এবং ওয়াজের ময়দানে কাজ করতে পারেন, তারা করবেন। আর বাকিরা নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যবসা করবেন। হাদিসে আছে, নিচের হাতের চেয়ে ওপরের হাত উত্তম। কারো কাছে হাত পাতার চেয়ে নিজে স্বাবলম্বী হওয়া ভালো। ইসলাম কোনো ভিক্ষাবৃত্তির ধর্ম নয়। আলেমরা যে ব্যবসা করছেন এটা অবশ্যই একটি প্রশংসনীয় বিষয়।


আরো সংবাদ



premium cement