২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সর্বাত্মক লকডাউন শুরু ব্যাংকে রেকর্ড লেনদেন

সর্বাত্মক লকডাউন শুরু ব্যাংকে রেকর্ড লেনদেন - ছবি : নয়া দিগন্ত

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আজ বুধবার থেকে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়েছে। ভোর ৬টা থেকে আগামী ২১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত এই লকডাউন চলবে। সরকারি সিদ্ধান্তে লকডাউনে বন্ধ থাকছে শপিংমল-দোকানপাট এবং সরকারি-আধা সরকারি-বেসরকারি অফিস। গণপরিবহন (সড়ক, রেল, নৌ) এমনকি আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচলও বন্ধ রয়েছে। তবে খোলা রয়েছে গার্মেন্টসহ শিল্পকারখানা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ইতোমধ্যে লকডাউন বাস্তবায়নে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এ দিকে লকডাউনের আগের দিন ব্যাংকসহ সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান এক সপ্তাহ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়ার পর গতকাল সকাল থেকেই ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য গ্রাহকের মহাহুলস্থূল লেগে যায়। লকডাউন বাড়তে পারে এমন আশঙ্কায় প্রায় সব শ্রেণীর গ্রাহক টাকা উত্তোলন করতে ব্যাংকের শাখায় চলে আসেন। ফলে ব্যাংক লেনদেনের সময়সীমা সাড়ে ১২টার পরেও প্রায় আরো তিন ঘণ্টা গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খান ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকরা। অনেক শাখায় নগদ টাকার সঙ্কট দেখা দেয়। আন্তঃশাখা থেকে টাকা এনে সঙ্কটে পড়া শাখায় চাহিদা মেটানো হয়। কিন্তু ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের এ চিত্র পাল্টে যেতে থাকে দুপুরের পর থেকে। বিশেষ প্রয়োজনে ব্যাংক চালু রাখতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে গভর্নর ফজলে কবিরের কাছে চিঠি আসে।

এর পর থেকেই ব্যাংকাররা সিদ্ধান্তহীনতায় পড়ে যান। তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সিদ্ধান্ত আসে রাত পৌনে ৮টায়। এভাবেই গতকাল ব্যাংকিং খাতের জন্য ছিল একটি ব্যতিক্রম দিন। কারণ গতকাল দিন শুরু হয় ব্যাংক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে, আর দিন শেষ হয় খোলার সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তে বলা হয়, ছুটির দিন ছাড়া অন্য সব দিনে প্রতি দুই কিলোমিটারে একটি শাখা সকাল ১০টা থেকে একটা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

এক দিনে রেকর্ড লেনদেন : সাধারণত ঈদের আগে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন বেড়ে যায়। কোনো কারণে এক সপ্তাহের ছুটির কবলে পড়লে ঈদের আগে রেকর্ড লেনদেন হয়। কিন্তু গতকাল কোনো কারণেই ব্যাংকিং খাতে ঈদের আমেজের চেয়ে কম ছিল না। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, গত কয়েক বছরেও এক দিনে গতকাল যে পরিমাণ লেনদেন হয়েছে এমন লেনদেন হয়নি। সকাল থেকেই ব্যাংকের প্রতিটি শাখাতেই গ্রাহকরা টাকা উত্তোলনের জন্য আসতে থাকেন। শিল্পকারখানার দৈনন্দিন লেনদেনের অর্থ উত্তোলনসহ সাধারণ গ্রাহকরাও টাকা উত্তোলন করতে থাকেন। আগের দিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব ব্যাংক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তই ছিল এর অন্যতম কারণ।

মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় ১৪ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংকসহ সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগের দিন শিল্পকারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। এর এক দিন পর ব্যাংক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে হতাশ হয়ে পড়েন উদ্যোক্তারা। শিল্পকারখানা খোলা রাখলে তাদের দৈনন্দিন লেনদেনের প্রয়োজন হয়। এ কারণে পুরোপুরি বন্ধ না রেখে সীমিত পরিসরে ব্যাংক খোলা রাখা যেত। এ ছাড়া বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা দেশে থাকা আত্মীয়-পরিজনের কাছে অর্থ পাঠাতে পারেন। কিন্তু এ সময়ে ব্যাংক বন্ধ থাকলে তাদের পরিবার-পরিজন এর সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন না। তাই অর্থনীতির স্বার্থেই সীমিত আকারে ব্যাংক খোলা রাখা যায় কি না সে জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিবেচনা করতে অনেকেই অনুরোধ করেন।

মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় গত সপ্তাহ থেকেই সীমিত পরিসরে ব্যাংক লেনদেন হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে গত ৪ এপ্রিল থেকে ব্যাংক লেনদেনের সময়সীমা কমিয়ে আড়াই ঘণ্টা; পরে তিন ঘণ্টায় নামিয়ে আনা হয়। ব্যাংক লেনদেন হচ্ছে ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, আগের দিন ব্যাংক বন্ধ রাখার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষণায় প্রতিটি শাখায় টাকা উত্তোলনের জন্য গ্রাহকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। একসময় গ্রাহকদের সেবা দিতে গিয়ে তারা হিমশিম খান। বেশির ভাগ ব্যাংকের শাখায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেঁধে দেয়া নির্ধারিত সময়ের পরেও লেনদেন হয়। এ সময় স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই ছিল না বেশির ভাগ শাখায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকেও অনুরূপ সঞ্চয়পত্রের মুনাফা উত্তোলনের জন্য গ্রাহকদের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। কঠোর লকডাউনে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সারতে অনেক গ্রাহকই এটিএম বুথে যান। কঠোর লকডাউনে মানুষ অনেকটা ঘরবন্দী হয়ে পড়বে। তাই প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সারতে ও নগদ টাকা হাতে রাখতে নগদ টাকা উত্তোলনের জন্য ব্যাংকে ভিড় করেন।

গতকাল সকাল থেকে এটিএম বুথগুলোতে টাকা উত্তোলনের চাপ থাকে। কিন্তু এক সাথে বেশি মুনষের টাকা উত্তোলনের চাপ থাকায় দুপুরের আগেই বেশির ভাগ এটিএম বুথে টাকা শেষ হয়ে যায় বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেন। প্রয়োজনীয় টাকা উত্তোলন করতে অনেকেই ব্যাংকের শাখায় আসেন। ১টা পর্যন্ত ব্যাংক লেনদেনের সময়সীমা বেঁধে দেয়ায় তাই নির্ধারিত সময়েই প্রতিটি ব্যাংকের শাখায়ই গ্রাহকের উপচে পড়া ভিড় থাকে। বাধ্য হয়েই গ্রাহকের চাপ সামলাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেয়া সময়সীমার চেয়ে বেশি সময়ে লেনদেন করতে দেখা গেছে। ব্যাংকের মতো এটিএম বুথগুলোতে ছিল গ্রাহকদের দীর্ঘ লাইন। এটিএম বুথের ধারণক্ষমতা সীমিত। কিন্তু গতকাল স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাড়তি টাকা উত্তোলন করায় বারবার এটিএম বুথে টাকার সঙ্কট দেখা দেয়। গ্রাহকরা এক বুথ থেকে টাকা না পেয়ে অন্য বুথে যায়। এ কারণে গ্রাহকদের বাড়তি পরিশ্রম ও সময় ব্যয় করতে হয়।

মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্ত : এ দিকে গতকাল বিকেলে বিশেষ প্রয়োজনে ব্যাংক চালু রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরকে চিঠি দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মাঠ প্রশাসন অধিশাখার উপসচিব রেজাউল ইসলামের সই করা এক চিঠিতে এ নির্দেশ দেয়া হয়। ‘বিশেষ প্রয়োজনে ব্যাংকি েেসবা প্রদান’ সংক্রান্ত এ চিঠিতে বলা হয়, ‘১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারির জন্য আদেশক্রমে অনুরোধ জানানো হয়েছে।’ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব রেজাউল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠির অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের একান্ত সচিবের কাছেও পাঠানো হয়। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো: সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পাঠানো চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক খোলা রাখার ব্যাপারে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে কিভাবে খোলা থাকবে, সে বিষয়ে সার্কুলার দেয়া হবে।

দিন শেষে ব্যাংক খোলা রাখার সিদ্ধান্ত : এ দিকে মন্ত্রিপরিষদের চিঠি আসার পর গভর্নর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠকে বসেন। মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রথমে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত ব্যাংক খোলা রাখার খসড়া সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে তা পরিবর্তন করে সকাল ১০টা থেকে একটা পর্যন্ত ব্যাংকের সব শাখা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়। রাত পৌনে ৮টার সময় এ ধরনের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে অবহিত করেন।
এ-সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক নির্দেশনায় বলা হয়, লকডাউন চলাকালে ছুটির দিন ছাড়া ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয় ও প্রধান কার্যালয়সহ সব অনুমোদিত এডি শাখা ও জেলা সদরে অবস্থিত ব্যাংকের প্রধান শাখা খোলা রাখতে হবে। সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতি দুই কিলোমিটারে মধ্যে একটি শাখা আর উপজেলাপর্যায়ে কার্যত প্রতিটি ব্যাংকের একটি শাখা বৃহস্পতি, রবি ও মঙ্গলবার খোলা রাখতে হবে। এ সময়ে কর্মকর্তাদের অফিসে আনানেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

লেনদেন চালু থাকছে পুঁজিবাজারেও : ব্যাংকের মতো লেনদেন চালু থাকছে দেশের পুঁজিবাজারগুলোতেও। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটি বাদে প্রতিদিন আড়াই ঘণ্টা করে দেশের দুই পুঁজিবাজার খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পুঁজিবাজার খোলা থাকবে। এ ক্ষেত্রে আগের মতো শেষের ১৫ মিনিট পোস্ট ক্লোজিং লেনদেন চালু থাকলেও প্রি ওপেনিং সুবিধা থাকবে না।

‘লকডাউনে’ ব্যাংক বন্ধের ঘোষণা দিলেও সেই সিদ্ধান্ত কিছুটা পরিবর্তনের ইঙ্গিত মেলে গতকাল দুপুরেই। জরুরি প্রয়োজনে ব্যাংক খোলার অনুরোধ জানিয়ে মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও অর্থ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবকে। বিএসইসি আগেই ঘোষণা দিয়েছিল ব্যাংকের লেনদেন চালু থাকলে পুঁজিবাজারের লেনদেনও চালু রাখা হবে। সেই সিদ্ধান্ত মতোই পুঁজিবাজার খোলা রাখা হয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা।
কঠোর লকডাউন : গত ৫-১১ এপ্রিলও সরকার ঘোষিত লকডাউন পালন করা হয়। তবে তা ছিল একেবারেই ঢিলেঢালা। তাই সরকারের একাধিক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ইতোমধ্যে বলেছেন, আজ থেকে শুরু হওয়া লকডাউন হবে সর্বাত্মক, অত্যন্ত কঠোর লকডাউন পালিত হবে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, বিধিনিষেধগুলো যাতে করে সবাই যথাযথভাবে পালন করে সে জন্য মাঠ প্রশাসনকে বিশেষ করে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এবারের লকডাউনে শুধু গণমাধ্যম, জরুরি সেবা ও কারখানার উৎপাদন খোলা রেখে সব ধরনের অফিস ও পরিবহন চলাচল বন্ধের পাশাপাশি বাজার-মার্কেট, হোটেল-রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। গত সোমবার জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

সব কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করবেন। তবে বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থলবন্দর এবং এ-সংশ্লিষ্ট অফিসগুলো এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে; বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে; সব ধরনের পরিবহন (সড়ক, নৌ, রেল, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট) বন্ধ থাকবে। তবে পণ্য পরিবহন, উৎপাদন ব্যবস্থা ও জরুরি সেবার ক্ষেত্রে এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না; শিল্পকারখানা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। তবে শ্রমিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনানেয়া নিশ্চিত করতে হবে; আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস বা জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দর (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তাব্যবস্থা, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট অফিস, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে; অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসাসেবা, লাশ দাফন ও সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। তবে টিকা কার্ড দেখিয়ে টিকা নেয়ার জন্য যাতায়াত করা যাবে; খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা এবং রাত ১২টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত কেবল খাবার বিক্রি বা সরবরাহ (কিনে নিয়ে যাওয়া বা অনলাইন) করা যাবে।

শপিংমলসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ থাকবে; কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাবেচা করা যাবে। বাজার কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে। বোরো ধান কাটার জরুরি প্রয়োজনে কৃষিশ্রমিক পরিবহনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন সমন্বয় করবে; এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে সারা দেশে জেলা ও মাঠ প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে এবং আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে নিয়মিত টহল জোরদার করতে বলা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে; সেখানে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক তার পক্ষে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষমতা দেবেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement