২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শ্রমবাজার সংশ্লিষ্ট দেশে ফ্লাইট চালু রাখার দাবি জনশক্তি ব্যবসায়ীদের

- ছবি : নয়া দিগন্ত

বিদেশগামীকর্মীদের পরিবহনে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার সংশ্লিষ্ট দেশে ফ্লাইট চালু রাখার দাবি জানিয়েছে বেসরকারিভাবে বিদেশে জনশক্তি রফতানিকারকরা। তারা বলছেন, এসব দেশে এখনো করোনার প্রকোপ নেই। শ্রমিক গ্রহণকারী এসব দেশের পক্ষ থেকেও কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। তাই, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এসব দেশে শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করা যুক্তিযুক্ত নয়। এতে হাজার হাজার বিদেশগামী এবং সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই চলমান লকডাউনে বিদেশগামীদের কথা চিন্তা করে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট দেশে বিমান চলাচল স্বাভাবিক রাখার দাবি জানান রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা। প্রয়োজনে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করে হলেও বিদেশগামীদের যথাসময়ে সংশ্লিষ্ট দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবী জানানো হয়। বায়রা’র সাধারণ সদস্যবৃন্দ ব্যানারে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বায়রার সাবেক অর্থ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম। এসময় বায়রা’র সাবেক সহসভাপতি আবুল বারাকাত ভুইয়া, লিমা বেগম, রিক্রুটিং এজেন্সিজ ঐক্য পরিষদেও সভাপতি টিপু সুলতান, মহাসচিব আরিফুল ইসলামসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। অনলাইনে যুক্ত হয়ে এই দাবির সাথে ঐকমত পোষণ করেন বায়রা’র সদ্য সাবেক সভাপতি ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমদ এমপি।

করোনাভাইরাস প্রকোপ আকারণ ধারণ করার প্রেক্ষিতে বুধবার থেকে আটদিনের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গণপরিবহনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও বন্ধ ঘোষণা করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এই অবস্থায় সঙ্কটে পড়েছেন বিদেশগামীরা। ইতিমধ্যে ভিসাসহ অন্যান্য সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কমপক্ষে ২০ হাজারের অধিক কর্মীর এই সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দেশে যাওয়ার ফ্লাইট ডেট রয়েছে। তারা এখন বিপদে পড়ছেন। এছাড়া এই করোনাকালে ছুটিতে এসে আটকা পড়াদের অনেকেরই ফ্লাইট রয়েছে এই লকডাউনের সময়ে। সবমিলে বিদেশগামীরা যেমন আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন, তেমনি সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সিও সমূহ ক্ষতির মধ্যেই পড়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। তাই মহামারীর এই সময়ে বিদেশগামী কর্মীদের কথা বিবেচনায় এনে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ না করে বরং জনশক্তি প্রেরণের এই খাতকে জরুরি সেবা হিসেবে বিবেচনায় এনে সকল প্রকার বিধিনিষেধের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানান বক্তারা।

লিখিত বক্তব্যে ফখরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এই মুহূর্তে প্রায় ২০-৩০ হাজার কর্মী অধিক মূল্যে বিমান টিকিট সংগ্রহ করেছে এবং হাজার হাজার বিদেশগামী কর্মী টিকিটের অপেক্ষায় আছে। ফলে হঠাৎ ফ্লাইট বন্ধ হওয়ায় সবাই উৎকণ্ঠা ও হতাশায় নিমজ্জিত। বিজিএমই করোনা মহামারিতেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কল-কারখানা চালু রাখতে পারলে জনশক্তি রফতানির এই খাতকেও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটসহ সকল কার্যক্রম চালু রাখার সুযোগ দেয়া উচিত। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সকল ফ্লাইট বন্ধ করা হলে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে কর্মী ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আমাদের দেশ। হঠাৎ করে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করা হলে কাতার এবং ওমানের হাজার হাজার যাত্রী লাখ লাখ টাকা দিয়ে কোয়ারেন্টাইন হোটেল বুকিং করে রেখেছে, যেগুলো নন রিফান্ডেবল। এতে তাদের বড় অংকের লোকসান গুনতে হবে।

বায়রার সাবেক এই নেতা বলেন, এর আগে লকডাউনে হাজার হাজার প্রবাসীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে, তাদের অনেকেই আবার নতুন করে বিদেশ গমনের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শুধুমাত্র ফ্লাইটের অপেক্ষায় আছে। তারা বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। লকডাউনের এই ৭ দিনে প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক সৌদি, দুবাই, ওমান, কাতার যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিমান টিকিট করেছেন। যারা প্রতিটি টিকেট উচ্চমূল্যে (৮০-৯০ হাজার টাকা) ক্রয় করে ফ্লাইটের অপেক্ষায় আছে। সবকিছু বিবেচনায় বাংলাদেশ থেকে বিদেশগামী কর্মী প্রেরণের নিমিত্তে আবশ্যিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু রাখা উচিত। অন্যথায বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানি খাতসহ সংশ্লিষ্ট সকল খাত শতভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, নেপাল, ভারত, পাকিস্তান, ফিলিপাইনসহ কর্মী প্রেরণকারী দেশগুলো লকডাউনের মধ্যেও জরুরি খাত হিসেবে বিভিন্ন দেশে কর্মী প্রেরণ করছে। সেখানে বাংলাদেশ থেকে কর্মী প্রেরণ করা বন্ধ হলে বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতা থেকে পিছিয়ে যাবে। অনেক কর্মীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে, আবার অনেক কর্মীর ভিসার মেয়াদ দ্বিতীয়বার শেষ হবে। সময়মতো না যেতে পারলে নিয়োগকর্তা চাহিদাপত্র বাতিল করতে পারে। পরিস্থিতি যাই হোক, যতদিন পর্যন্ত কর্মী গ্রহণকারী দেশসমূহ, বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমানসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সাথে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করে অন্তত তত দিন দেশের স্বার্থে বিদেশগামী কর্মীদের লকডাউনের আওতার বাইরে রেখে বিদেশ গমনে সুযোগ করে দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

 


আরো সংবাদ



premium cement
মুসলিম শ্রমিক হত্যায় হিন্দু নেতারা চুপ কেন : প্রশ্ন হেফাজত নেতা আজিজুল হকের সাভারে বুধবার ১২ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে গাজা ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়কে জনতার অবরোধ ভাঙতে টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি বাংলাদেশ-কাতারের মধ্যে ১০টি সহযোগিতা নথি সই ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি’ মিলান ডার্বি জিতে শিরোপা পুনরুদ্ধার ইন্টারের কুমিল্লা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী যুবক আহত অপহরণের ২৬ ঘণ্টা পর সাংবাদিকের বড় ভাই উদ্ধার মালয়েশিয়ায় ২ হেলিকপ্টারের সংঘর্ষে ১০ নৌ-সদস্য নিহত প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে কাতারের আমির

সকল