২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চলের কার্যক্রম পূর্ণগতিতে চালু হবে ২০২৩ সালে

জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চলের কার্যক্রম পূর্ণগতিতে চালু হবে ২০২৩ সালে - ছবি : সংগৃহীত

জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইজেড)’এর সকল ধরনের উন্নয়ন কাজ ২০২৩ সালের জুন মাসের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। উন্নয়ন কার্যক্রম শেষ হওয়ার সাথে সাথেই এই অর্থনৈতিক অঞ্চল পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করবে।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বাসস’র সাথে আলাপকালে জানান, জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চল জাপানি বিনিয়োগের কেন্দ্রে পরিণত হবে যা বাংলাদেশে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগে নতুন দিগন্ত উম্মোচন করবে।

তিনি বলেন, ‘ভূমি উন্নয়ন কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এই বছরের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১০০ টি জাপানি কোম্পানি কারখানা স্থাপন করবে বলে আমরা আশাবাদী। ২০২৩ সালের মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলটির সকল ধরনের নির্মাণ কাজ শেষ হলে পূর্ণ উদ্যমে কাজ শুরু হবে।’

প্রকল্প অফিস সুত্র জানায়, এ বছরের শেষ দিকে একটি নির্দিষ্ট অংশ কারখানা নির্মাণ ও এর সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজের জন্য বিনিয়োগকারীদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগীা সংস্থা (জাইকা)’র অর্থায়নে নির্মিত এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে অন্তত ১০০ জাপানি কোম্পানি বিনিয়োগ করবে। যাতে প্রায় এক লক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় ১ হাজার একর জায়গার উপর এ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হচ্ছে। এ উদ্দেশ্যে ৬২৫ একর জায়গা বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বাকী জায়গা বন্দোবস্তের কাজ চলমান রয়েছে। এ বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে বন্দোবস্তের কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। জাপানি তোয়া কর্পোরেশন এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভূমি উন্নয়নের কাজ করছে।

এই অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য ইজেড, বেজা এবং জাপানের বৃহত্তর কোম্পানি সুমিতমো যৌথভাবে একটি স্পেশাল পারপাজ কোম্পানি (এসপিসি) স্থাপন করেছে। জাইকা সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ উন্নয়ন প্রকল্প থেকে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। এই প্রকল্পটি বাংলাদেশের বিনিয়োগ উন্নয়নে বিনিয়োগকারীদের স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন করবে। জাইকা রাস্তা-ঘাট, বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো উন্নয়নেও সহায়তা করছে।

জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্পের পরিচালক সালেহ আহমেদ বলেন, এই অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের মাধ্যমে পরিকল্পিত শিল্পায়নের নিশ্চয়তার পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

তিনি বলেন, এই জোনের উদ্দেশ্য হলো জাপানি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য পরিবেশ সৃষ্টি এবং শিল্পের বহুমূখীকরণের সুযোগ প্রসারিত করা।

জাপান বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ-এর সাধারণ সম্পাদক তারেক রাফি ভূঁইয়া বলেন, বিনিয়োগের সুষ্ঠ পরিবেশের জন্য অনেক জাপানি কোম্পানী এই দেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে।

তিনি জানান, ‘বর্তমানে এই দেশে প্রায় ৩২০টি জাপানি কোম্পানি রয়েছে। বেজা জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। বেজা চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই ও সিতাকুন্ডে এবং ফেনী জেলার সোনাগাজীতে ৩০,০০০ একর জায়গার উপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর স্থাপন করছে। অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ হলে সরাসরি বিনিয়োগ বাড়বে।’

তিনি আরো জানান, ২০১৪ সালে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর পারস্পরিক সফরের পর জাপানি বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এখন জাপানিরা তাদের পরবর্তী বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশের দিকে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।

এই বিনিয়োগ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে একটি রিসাইক্লিং প্লান্ট থাকবে যা শিল্পবর্জ্য দূর করবে।

বেজা কর্তৃপক্ষ জানায়, এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে কৃষি খাদ্য, হালকা শিল্প, কেমিক্যাল, অটোমোবাইল, গার্মেন্টস এবং ঔষধ শিল্প স্থাপিত হবে।

সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement