১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে এক মাস সময় চান বাণিজ্যমন্ত্রী

-

‘একমাস সময় পেলেই’ পেঁয়াজের চাহিদা ও যোগানের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা এবং পেঁয়াজের দামের নিয়ন্ত্রণ পাওয়া সম্ভব বলে জানালেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

ভারত বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়ার পর নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়ার প্রেক্ষাপটে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলন করে তিনি একথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এখন যেই পরিমাণ পেঁয়াজের মজুদ আছে, সেই হিসেবে একমাস সময় পেলে 'বিকল্প' বাজার থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে বাজারে চাহিদা-যোগানের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

তিনি বলেন,‘এক মাস সময় পেলেই মিয়ানমার, তুরস্ক, মিসর, চীন এমনকি নেদারল্যান্ডস বা নিউজিল্যান্ড থেকেও পেঁয়াজ আমদানি করা সম্ভব।’

তিনি আরো বলেন, ব্যবসায়ীদের একটি অংশ সুযোগ নেয়ায় এবং সাধারণ ক্রেতারা 'প্যানিক বায়িং' করায় পেঁয়াজের বাজারে ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়া বাংলাদেশে প্রতি বছর যে পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করা হয় তার সিংহভাগই আসে সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত। সে কারণে এ সময়েই সাধারণত বাজারে ভারসাম্যের ব্যাঘাত ঘটে। বছরের শুরুর দিকে দেশীয় পেঁয়াজের যোগান অব্যাহত থাকায় বাজারে ভারসাম্য থাকে।

এ বছর বর্ষায় অপেক্ষাকৃত বেশি বৃষ্টিপাতের কারণেও কিছুদিন পেঁয়াজের দাম উর্ধ্বমুখী ছিল বলে মন্তব্য করেন টিপু মুনশি।

বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে পেঁয়াজের ঘাটতির ৮০ থেকে ৯০ ভাগই আসে ভারত থেকে। তাই ভারত পেঁয়াজ রফতনি বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশের পেঁয়াজের বাজারের ভারসাম্য স্বাভাবিকভাবেই ব্যাহত হয়।

দেশের বাজারের ঘাটতি মেটাতে আগামী বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় চার লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে ভারত রফতানি বন্ধ করার সাথে সাথেই আমরা বিকল্প বাজার খোঁজার চেষ্টা করছি। এক মাস সময় পেলেই আমরা বিকল্প বাজার থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবো।’

গত বছরও ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যায়।

সে সময় পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও পেঁয়াজের দাম সাধারণ মানুষের জন্য সহনীয় পর্যায়ে আসতে বেশ সময় নিয়েছিল।

গত বছর সেপ্টেম্বরের ২৯ তারিখে ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়ার পর বেসরকারি আমদানিকারকদের পাশাপাশি নিজেরাও পেঁয়াজ আমদানি করে সামাল দেয়ার চেষ্টা করেছিল সরকার। কিন্তু তারপর ৩০ টাকা কেজি পেঁয়াজের দাম ক্রমশই বাড়ছিল।

এক পর্যায়ে অক্টোবরের শুরুর দিকে টিপু মুনশি বলেছিলেন, ‘দু-একদিনের মধ্যে’ পেঁয়াজের দাম নেমে আসবে।

তার এই আশ্বাসেও কাজ হয়নি বরং তার পরেই পেঁয়াজের কেজি ২০০ টাকা ছাড়িয়েছিলো এবং এক পর্যায়ে ৩০০ টাকা ছুঁয়ে ফেলেছিলো।


এবারের সঙ্কট যে কারণে :

ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়ার পর বাংলাদেশে একদিনেই পেঁয়াজের দাম এক তৃতীয়াংশ বেড়ে গেছে।

সোমবার ঢাকার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হলেও মঙ্গলবার বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা দরে।

দিল্লিতে বিবিসির সংবাদদাতারা বলছেন, ভারী বর্ষণে পেঁয়াজের চাষাবাদ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্য বৃদ্ধি আর রাজনৈতিক বিবেচনায় ভারত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তবে বাংলাদেশের ক্রেতারা ভয় পাচ্ছেন, পরিস্থিতি সামাল দেয়া না গেলে গত বছরের মতো এবারও পেঁয়াজের দাম আকাশচুম্বী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement