২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

অর্ধেকে নেমেছে ঋণ আমানত সুদ ব্যবধান

অর্ধেকে নেমেছে ঋণ আমানত সুদ ব্যবধান - ছবি : সংগৃহীত

ঋণ আমানতের মুনাফা হারের ব্যবধান কমে অর্ধেকে নেমেছে। আমানতের সুদহার কমার সাথে কমেছে ঋণের সুদহার। কিন্তু এর সুফল পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, ঋণ আমানতের সুদহারের ব্যবধান কমে জুনে নেমেছে ২ দশমিক ৮ শতাংশে। যেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অনুমোদন দেয়া আছে, সর্বোচ্চ ব্যবধান হতে হবে ৪ শতাংশ। ব্যাংকারোা জানিয়েছেন, নির্দেশনা অনুযায়ী রাতারাতি ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হলেও আমানতের সুদহার রাতারাতি কমানো সম্ভব হয়নি। কিছু কিছু দুর্বল ব্যাংক আমানত হারানোর ভয়ে আমানতের সুদহার কমাতে পারেনি। ফলে ব্যাংকগুলোর তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় যেমন বাড়ছে, তেমনি কম সুদে ঋণ বিতরণ করতে পারছে না। এর সুফল পাচ্ছেন না গ্রাহকরা।

পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আব্দুল হালিম চৌধুরী বৃহস্পতিবার নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, স্প্রেড বা ব্যাপ্তি কমে যাওয়ার ফলে প্রতিটি ব্যাংকেরই বছর শেষে মুনাফা কমে যাবে। কারণ, ব্যাংকগুলো রাতারাতি ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। কিন্তু অনেক ব্যাংকই আমানতের সুদহার ৬ শতাংশে নামাতে পারেনি। এর ফলে স্প্রেড কমে গেছে। তবে, সামনে ধীরে ধীরে তা বেড়ে যাবে। কারণ, বেশির ভাগ ব্যাংকই আমানতের সুদহার কমিয়ে দিচ্ছে। মেয়াদি আমানতের সুদহার ৪ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে নেমে গেছে।

তবে তিনি মনে করেন, সুদহার ব্যাংকের জন্য বড় বিষয় নয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো খেলাপি ঋণ। এক ধরনের গ্রাহক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা ফেরত দিচ্ছেন না। আবার তাদের বিরুদ্ধে শক্ত কোনো আইনি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে না। এর ফলে ব্যাংকে মন্দ মানের খেলাপি ঋণ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। আর এ কারণেই ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। আবার ওই সব গ্রাহকই চলমান পরিস্থিতিতে ঋণ নিতে ব্যাংকে ব্যাংকে ঘুরছেন। তিনি জানান, একজন ভালো গ্রাহককে ব্যাংক ঋণ দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। কিন্তু একজন মন্দ গ্রাহককে ঋণ দিতে গিয়ে অনেক হিসাব-নিকাশ করতে হয়। এ কারণেই কেউ কেউ ঋণ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করছেন। তবে, চলমান পরিস্থিতিতে ভালো গ্রাহকরা ঋণ নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

ঋণ আমানতের সুদহারের ব্যবধানের এ অস্বাভাবিক পতনের ব্যাপারে ব্যাংকারো জানিয়েছেন, অর্থনীতির আকার অনুযায়ী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান অনেক বেশি। এ কারণে আমানত সংগ্রহে এক ধরনের অসুভ প্রতিযোগিতা আছে। একই আমানত নিয়ে একাধিক ব্যাংক কাড়াকাড়ি করছে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী রাতারাতি ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনতে বাধ্য হলেও আমানতের সুদহার ওই হারে কমানো যায়নি। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেও আমানতের সুদহার অভিন্ন করার ওপরে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। শুধু ঋণের সুদহারের বিষয়ে ৯ শতাংশ বেঁধে দেয়া হয়েছে। এ কারণে তহবিল সঙ্কটে রয়েছে এমন কিছু ব্যাংক আমানত হারানোর ভয়ে রাতারাতি আমানতের সুদহার কমাতে পারেনি। এর ফলেই ব্যাংকগুলোর তারল্য ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়ার উপক্রম হয়েছে।

ঋণ আমানতের সুদহার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, গত বছরের জুন মাসে ঋণ আমানতের সুদহারের গড় ব্যবধান যেখানে ছিল ৪ দশমিক ১৫ শতাংশ, সেখানে চলতি বছরের জুন শেষে তা নেমে এসেছে ২ দশমিক ৮ শতাংশে। এর মধ্যে ৬টি ব্যাংকের ঋণের গড় সুদের হারের চেয়ে আমানতের গড় সুদহার বেশি হয়েছে। আলোচ্য সময়ে আমানতের গড় সুদহার কমে নেমেছে ৫ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ, সেখানে আগের ঋণের গড় সুদহার কমে নেমেছে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশে। যেখানে গত বছরের জুনে আমানতের গড় সুদহার ৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ থাকলেও ঋণের গড় সুদহার ছিল ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

ব্যাংকারোা জানিয়েছেন, বৃহৎ ও সেবা খাতের ঋণ ছাড়া বেশির ভাগ ঋণেরই পরিচালন ব্যয় বেশি। বিশেষ করে ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র, মাঝারি ঋণে পরিচালন ব্যয় বেশি। আবার এসব ঋণের সেখানে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দেয়ায় বেশির ভাগ ব্যাংকই ঋণ বিতরণ করতে পারছে না। এর ফলে ঋণের সুদহার কমানোর সুফল পাচ্ছেন না গ্রাহকরা।


আরো সংবাদ



premium cement
সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করলেন ভুটানের রাজা জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন সাকিব, বললেন কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই কারওয়ান বাজার থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয় এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন ইসলামের বিজয়ই বদরের মূল চেতনা : ছাত্রশিবির পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের মৃত্যু : বিশ্বব্যাংক

সকল