‘অনলাইন থেকে গরু কিনলে হাসিল দিতে হবে না’
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১১ জুলাই ২০২০, ১৯:০২
পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কোরবানির পশু বিক্রির জন্য ডিজিটাল হাট চালু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। করোনার সংক্রমণ এড়িয়ে ক্রেতারা যাতে নির্বিঘ্নে অনলাইনের মাধ্যমে কোরবানির পশু কিনতে পারেন সেজন্য এ উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি।
রোববার এ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনলাইন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, যারা অনলাইন থেকে গরু কিনবেন তাদের কোনো হাসিল দিতে হবে না। ডিএনসিসি ডিজিটাল গরুর হাট থেকে কেবল গরু কেনাই নয়, স্বাস্থ্যসম্মতভাবে জবাই করে বাসায় পৌছে দেয়া হবে। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, যত্রতত্র পশু কোরবানি ও গরু বেচাকেনা না করে একটা সিস্টেমের মধ্যে আনা। এর ফলে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পশু কেনাবেচা করা যাবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ডিজিটাল গরুর হাটের মাধ্যমে কোরবানি পশু ক্রয়ে এক নতুন মাত্রা যোগ হলো। ভবিষ্যতে করোনার প্রাদূর্ভাব কমে গেলেও আমরা কোরবানি পশু ক্রয়ে এ ধরণের অনলাইন প্লাটফর্মের উপর নির্ভর করতে পারবো।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম বলেন, কোরবানির জন্য যে পরিমাণ গবাদিপশুর সরবরাহ দরকার তা দেশেই রয়েছে। আমরা বিদেশ থেকে একটা পশুও আমদানি করবো না।
ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইক্যাব) সভাপতি শমী কায়সারের সঞ্চালনায় অনলাইন সভায় অন্যান্যের মধ্যে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ডিজিটাল গরুর হাট পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করলাম। এতে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। অনেক ভুলত্রুটি হতে পারে। এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে কাজ করতে চাই। তিনি বলেন, এখান থেকে পশু কেনার পাশাপাশি আধুনিক উপায়ে পশু কোরবানিও দেয়া যাবে। কোরবানিকৃত পশুর রক্ত, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরো সুষ্ঠুভাবে করা যাবে। অনলাইনের মাধ্যমে পশু কেনাবেচা ও কোরবানি দেওয়া হলে পশুর বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, যেগুলো আমরা ফেলে দিই, সেগুলো রপ্তানি করার জন্য সংরক্ষণ করা যাবে। চামড়া সংরক্ষণ করা আগের চেয়ে সহজ হবে।
মেয়র বলেন, অনলাইন কোরবানির হাট থেকে কোরবানি দিন ৪০০ গরু, পরের দিন এক হাজার গরু এবং তার পরের দিন ৬০০ গরু বিক্রি করা হবে। আতিকুল ইসলাম বয়স্ক, শিশু ও অসুস্থদের কোরবানি হাটে যাওয়া থেকে বিরত থাকার আহবান জানান। যারা কোরবানি হাটে যাবেন তাদেরকে তিনি নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকার পরামর্শ দেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, অনলাইনে কেনাবেচায় লেন-দেন, পন্যের মানসহ বেশকিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এই প্লাটফর্মে বেচাকেনা জন্য সাধারণ মানুষের আস্থা নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। আসছে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির গবাদিপশু বেচাকেনার জন্য করোনা প্রতিরোধে বৃহৎ পরিসরে লোক সমাগম কমিয়ে হাট আয়োজন করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, শহর অঞ্চল ছাড়াও গ্রামগঞ্জে একটি বা দুইটি জায়গায় কোরবানির পশু বেচাকেনা করা জন্য নির্ধারণ না করে একটি ওয়ার্ডে বা ইউনিয়নে বিস্তৃত স্থানে আয়োজন করলে করোনা সংক্রমণের বিস্তাররোধে ভুমিকা রাখবে। এতে করে একদিকে যেমন পশু কেনাবেচার উপর কোন প্রভাব পড়বে না অন্যদিকে সাধারণ মানুষকে করোনার হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, কুরবানীর পশুর বেচাকেনার জন্য যেখানেই হাট বসানো হোক না কেন সেখানে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্বসহ সরকারের অন্যান্য নির্দেশনা মেনেই বসাতে হবে এবং এ লক্ষ্যে তার মন্ত্রণালয় একটি প্রাথমিক বৈঠক করেছ বলেও উল্লেখ করেন তাজুল ইসলাম। এ সময় মন্ত্রী যেসব এলাকায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি বা যে এলাকাগুলোকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সেসব এলাকায় পশুর হাট বসানো বর্জন করার আহবান জানান।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ঈদুল আজহায় কোরবানিকে সামনে রেখে রোগগ্রস্ত ও কোরবানির অনুপযুক্ত পশু বিক্রি বন্ধে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করবে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মনিটরিং টিমও কাজ করবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, দেশের খামারিরা চমৎকার গবাদিপশু উৎপাদন করছেন। যা বাজারে দরকার তার চেয়ে বেশী উৎপাদন রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে জীবন ও জীবিকা চালিয়ে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনায় আমরা সবাই মিলে কাজ করে যাচ্ছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা