২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
ব্যাংকে অতিরিক্ত ১২ হাজার কোটি টাকার তারল্য প্রবাহ বাড়বে

টাকার প্রবাহ বাড়াতে সিআরআর হার কমানো হলো ১ ভাগ

টাকার প্রবাহ বাড়াতে সিআআর হার কমানো হলো ১ ভাগ - সংগৃহীত

করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের টাকার যোগান দিতে ব্যাংকের বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়ানো হলো। এজন্য কমানো হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বাধ্যতামূলক রক্ষিত আমানতের বিপরীতে নগদ জমার হার (সিআরআর)। বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সিআআর হার এক শতাংশ কমানোর ফলে ব্যাংকগুলোর কাছে অতিরিক্ত ১২ হাজার কোটি টাকা চলে যাবে। এখন থেকে ব্যাংকগুলোকে আমানতের বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে দৈনিক সাড়ে তিন শতাংশ হারে সিআরআর সংরক্ষণ করতে হবে, যা আগে ছিল সাড়ে ৪ শতাংশ। আর দুই সপ্তাহ আন্তে সংরক্ষণ করতে হবে ৪ শতাংশ হারে, যা আগে ছিল ৫ শতাংশ।

সিআরআর হার কমানোর পাশাপাশি সঙ্কটে পড়া ব্যাংকগুলোর টাকার চাহিদা মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ টাকা ধারা দেয়া হয় রেপো) তার জন্য সুদহারও কমানো হয়েছে। আগে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ১০০ টাকা ধার নিতে ব্যাংকগুলোকে পৌনে ৬ শতাংশ সুদ দিতে হতো, এখন তা কমিয়ে সোয়া ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বৃহস্পতিবার পৃথক দুটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, এর ফলে ব্যাংকগুলোর হাতে অতিরিক্ত অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে চলে আসবে। এতে ব্যঅংকগুলোর বিনিয়োগ সক্ষমতা অনেকাংশেই কেটে যাবে। একই সাথে সংকট মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেও কম সুদে ধার পাওয়া যাবে। এতে ব্যাংকগুলো কম সুদে উদ্যোক্তাদের অর্থের যোগান দিতে পারবেন।
ব্যাংকগুলো সাধারণত আমানতকারীদের কাছ থেকে যে পরিমাণ আমানত সংগ্রহ সংগ্রহ করে তার বিপরীতে আমানতকারীদের অর্থ সুরক্ষা করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বাধ্যতামূক হারে নির্ধারিত হারে নগদ অর্থ জমা রাখতে হয়। একে ব্যাংকিং ভাষায় সিআরআর বলে। এ সিআরআর হার সময়ে সময়ে বাড়ানো বা কমানো হয়। বাজারে টাকার চাহিদা বেশি থাকলে সিআরআর হার কমানো হয়। আবার টাকার চাহিদা কম থাকলে সিআরআর হার বাড়ানো হয়। এভাবে মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বিশ্বব্যাপী চলমান করোনাভাইরাসের প্রভাবে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না উদোক্তারা। অপরদিকে ব্যাংক থেকে নগদ টাকার উত্তোলনও বেড়ে গেছে। একদিকে আমানত প্রত্যাহার হচ্ছে বেশি হারে, অপরদিকে ঋণের অর্থ ফেরত পাচ্ছে না ব্যাংকগুলো। এর ফলে ব্যাংকগুলোতে টাকার সঙ্কট বেড়ে গেছে। এ সঙ্কট মেটাতেই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সিআরআর হার ও রেপোর হার কমিয়ে দিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে প্রায় ১১ লাখ কোটি টাকার আমানত রয়েছে। এক শতাংশ সিআরআর হার কমানোর ফলে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা কম সংরক্ষণ করতে হবে সিআরআর। আর এর পুরো অর্থই ব্যাংকগুলোর হাতে চলে যাবে। এতে ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার প্রবাহ বেড়ে যাবে। কেটে যাবে তারল্য সঙ্কট।


আরো সংবাদ



premium cement