১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

লকডাউন, নাকি অন্য কোনো পথ?

লকডাউন, নাকি অন্য কোনো পথ? - ছবি : নয়া দিগন্ত

করোনায় মৃত্যু এবং সংক্রমণে অতীতের সব মাসকে ছড়িয়ে গেছে জুলাই মাস। এই মাসে মোট মারা গেছে সাত হাজার ১৫ জন। আক্রান্ত হয়েছেন তিন লাখ ৮৮ হাজার ২৬৮ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত কিছু পদক্ষেপ নেয়া খুব জরুরি৷

১৬ মাসে বাংলাদেশে করোনায় মারা গেছেন ২১ হাজার ১৬২ জন। আর জুলাইতে এক মাসেই এপর্যন্ত মোট মৃত্যুর এক তৃতীয়াংশ। তাই স্বাস্থ্য ও জনস্বাস্থ্য বিষেশজ্ঞরা জুলাই মাসকে করোনার সবচেয়ে 'ভয়ঙ্কর মাস' বলছেন। এই মাসেই ২৩ দিন কঠোর লকডাউনে ছিল বাংলাদেশ। তারপরও করোনা সংক্রমণ এবং মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতি ঠোকানো যায়নি। আর আগস্টে লকডাউনের মধ্যেও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত আছে। তাহলে আগস্ট মাস কি আরো ভয়ঙ্কর হবে? এটা ঠেকাতে কী করতে হবে? আবার লকডাউন, নাকি অন্য কোনো পথে যেতে হবে?

জুলাই মাসের ৩১ দিনে সংক্রমণও অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ১৬ মাসে মোট করোনা আক্রান্ত চিহ্নিত করা হয়েছে ১২ লাখ ৮০ হাজার ৩১৭ জন। জুলাই মাসের সংক্রমণ এ পর্যন্ত মোট সংক্রমণের এক তৃতীয়াংশ। বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিলো গত বছরের ৮ মার্চ।

জুলাই মাসেই এক দিনে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ মৃত্যু সংক্রমণের রেকর্ড। ২৭ জুলাই মারা যায় সর্বোচ্চ ২৫৮ জন। আর ২৮ জুলাই সর্বোচ্চ সংক্রমণ ১৬ হাজার ২৩০ জন।

আগস্টের শুরুতে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ২৪৬ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৯৮৯ জন। সংক্রমণের হার ২৯.৯১ ভাগ।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে ১ আগস্ট থেকে পোশাক কারখানাসহ শিল্প কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে। গতবারের মতো শ্রমিকরা স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ঢাকায় ফিরেছেন। প্রায় দুই দিনের জন্য বাস ও লঞ্চ চালু করা হয়, যদিও লক ডাউন চলছে। শেষ হবে ৫ আগস্ট। এই লকডাউন বাড়বে কিনা সে ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে কড়াকড়ি থাকবে।

কিন্তু জাতীয় পরামর্শক কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ডয়চে ভেলেকে বলেছেন এভাবে লকডাউন হলে তার দরকার নাই। করলে ঠিকমতো করতে হবে। তিনি বলেন, 'লকডাউন যদি সঠিকভাবে করা না যায় তাহলে এখন সবকিছু খুলে দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি ও বিধিনিষেধ কড়াকড়ি করা, টেস্ট বাড়িয়ে সেই অনুযায়ী আইসোলেশন ও কোয়ারান্টিন করা এবং মাসে এক কোটি মানুষকে টিকা দেয়াই হলো সংক্রমণ কমানোর সহজ পথ।'

এদিকে করেনার এই পরিস্থিতির কারণে হাসপাতালে রোগীদের ঠাঁই হচ্ছে না। অনেকে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যাচ্ছেন। অক্সিজেন ও আইসিইউ বেডের চরম সংকট। অনেক রোগী বাড়িতেই মারা যাচ্ছেন। ঢাকায় ১৭টি সরকারি কোভিড হাসপাতালে রোববার ৩৮৪টি আইসিইউ বেডের মধ্যে খালি ছিল মাত্র ১৬টি।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী বলেন, 'দেখে শুনে মনে হচ্ছে লকডাউন কার্যকর করার সক্ষমতা সরকারের নেই। কিন্তু সংক্রমণ যখন বেড়ে যায় তা ঠেকানোর সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হলো লকডাউন। যেহেতু আমরা সেটা পারছি না, তাই এখন মাস্ক পরা, দূরত্ব বজায় রাখা এবং হাত ধোয়া কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে। আর প্রতিদিন ছয় লাখ মানুষকে টিকা দিতে হবে যাতে ফেব্রুয়ারি মধ্যে ৮০ ভাগ মানুষ টিকা পায়। এর কোনোটিই যদি আমরা না পারি তাহলে জ্যামিতিক হারে করোনা সংক্রমণ বাড়বে। যে মরার মরবে, যে বাঁচার বাঁচবে। পরিস্থিতি হবে চরম দুঃখজনক।'

করোনা সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সদস্য বিএসএমইউর সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, 'সরকার তার মতো একটি লকডাউন চালিয়ে যাচ্ছে। সব চলছে, তারপরও লকডাউন। এখন আমাদের বাঁচা-মরার সিদ্ধান্ত আমাদেরই নিতে হবে। আমাদের মাস্ক পরতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে যদি বাঁচতে চাই।'
সূত্র : ডয়চে ভেলে

 


আরো সংবাদ



premium cement
পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২ বিল দখলের চেষ্টা, জেলা ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি ‘শাহাদাতের তামান্নায় উজ্জীবিত হয়ে কাজ করলে বিজয় অনিবার্য’ কারাগারে নারী হাজতিকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, প্রধান কারারক্ষীসহ ৩ জনের বদলি প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে ঢুকে আত্মঘাতী হামলার হুমকিদাতা গ্রেফতার প্রেম যমুনার ঘাটে বেড়াতে যেয়ে গণধর্ষণের শিকার, গ্রেফতার ৫ ‘ব্যাংকিং খাতের লুটপাটের সাথে সরকারের এমপি-মন্ত্রী-সুবিধাবাদী আমলারা জড়িত’ ইরানের সাথে ‘উঁচু দরের জুয়া খেলছে’ ইসরাইল! অসুস্থ নেতাকর্মীদের পাশে সালাম-মজনু গলাচিপায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিশুর মৃত্যু মসজিদের ভেতর থেকে খাদেমের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

সকল