ডিসেম্বরে শেষ হবে মালয়েশিয়ায় বৈধকরণ, ঝুলে আছে নতুন কলিং ভিসা
- আশরাফুল মামুন, মালয়েশিয়া
- ২৭ অক্টোবর ২০২১, ১৩:৫৯
মালয়েশিয়ার অভ্যান্তরে যে সমস্ত অভিবাসী কর্মী এখনো অবৈধ ও অনিবন্ধিত হিসেবে রয়েছেন তাদেরকে বৈধকরণ প্রোগ্রাম রি-ক্যালিব্রেশন চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে। ঘোষণা দেয়ার পরও বাংলাদেশ থেকে নতুন করে শ্রমিক নেয়ার বিষয়টি এখনো ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। চলতি বছর মালয়েশিয়াজুড়েই চলছে অবৈধ হিসেব আছেন তাদের বৈধকরণ প্রক্রিয়া রিক্যালিব্রেশন। একমাত্র ব্ল্যাক লিস্টেট ছাড়া নিদিষ্ট পরিমাণ ফি দিয়ে শর্তসাপেক্ষে অভিবাসীরা বৈধ হতে পারছেন। আবার যারা বৈধ হতে আগ্রহী নন তারা ৫ শ’ রিংগিত জরিমানা দিয়ে নিজ দেশে ফেরত যেতে পারছেন। এই প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়াও চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজা জয়নুদ্দিন বলেন, অবৈধ অভিবাসীরা আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে হয়তো রিক্যালিব্রেশনের আওতায় বৈধ হতে হবে নয়তো নিজ দেশে ফেরত যেতে হবে। কারণ আমরা ৩১ ডিসেম্বরের পর সারাদেশে অভিযান চালাব তখন কেউ ধরা পড়লে কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
এ দিকে ২০১৯ সালে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ কলিং ভিসা বন্ধ ঘোষণা করার পর ২ বছর বন্ধ থাকার পর চালু হওয়ার বিষয়টি এক প্রকার ঝুলে আছে। দেশটিতে করোনা মহামারী, শ্রমিক সঙ্কটে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় রফতানিও ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে। নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে জিডিপির উপর। অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে বিদেশী কর্মী নিয়োগ দিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকার নানামুখী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। তারপরও নতুন করে কলিংয়ের মাধ্যমে বিদেশী কর্মী নেয়ার চূড়ান্ত ঘোষণার পরও নানা জটিলতায় নিয়োগ আটকে আছে। সবশেষ চলতি অক্টোবর মাসের প্রথমদিকে মালয়েশিয়ার শিল্প কারখানা ও প্লান্টেশন বিষয়ক মন্ত্রী জুরাইদাহ কামারউদ্দিন ঘোষণা দিয়েছিলেন চলতি মাসেই কলিংয়ে বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়া থেকে কর্মী মালয়েশিয়ায় পৌঁছাবে। শ্রমিক নেয়ার দ্বিপাক্ষীয় সমঝোতা স্বারক (এমওইউ) চুক্তির স্বাক্ষর বাংলাদেশ - মালয়েশিয়ার মধ্যে এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ায় যে হারে শ্রমিক সঙ্কট তীব্র হচ্ছে সে হারে শ্রমিক নিয়োগ হচ্ছে না। তাই তাদের প্রয়োজনেই কলিং ভিসা চালু করে বিদেশী কর্মী নিয়োগ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
চলমান রিক্যালিব্রেশন প্রক্রিয়ায় ২ লাখ ১২ হাজার ৯২৬ বৈধ হওয়ার জন্য নিবন্ধিত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৪ হাজার ৩১৮ জন নথিভুক্তকর্মী তাদের যাচাইকরণ প্রক্রিয়ায় উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং ২০ হাজার ৮৮৯ জন ব্যর্থ হয়েছেন।
এছাড়া আরো ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭১৯ জন এখনো ইমিগ্রেশন বিভাগের সাথে যাচাইকরণ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজাহ বলেছেন, যারা নিয়মিতকরণ প্রক্রিয়ায় ব্যর্থ হয়েছে তাদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রত্যাবাসন কর্মসূচির অধীনে নির্বাসিত করা হবে। তিনি আরো বলেন, ২১ অক্টোবর পর্যন্ত ১ লাখ ২৪ হাজার ৪২৩ নথিরভুক্ত নয় এমন কর্মীকে যার যার দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।