২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

টিকা উৎপাদনে বাংলাদেশের সক্ষমতা জি-৭ এ তুলেছেন জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক
জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস - ছবি : সংগৃহীত

লন্ডনে সদ্য সমাপ্ত বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা তুলে ধরেছেন জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

শুক্রবার নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সাথে বৈঠকে এ কথা জানান জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব।

গত ১১ থেকে ১৩ জুন জি-৭ এর ৪৭তম শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলন থেকে বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য ১০০ কোটি করোনাভাইরাসের টিকা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি, জাপান ও কানাডা জি-৭ এর সদস্য।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে গুতেরেস বলেন, বাংলাদেশের সাথে জাতিসঙ্ঘের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। শান্তিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন ও নারীর ক্ষমতায়নসহ জাতিসঙ্ঘের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রয়েছে।

করোনাভাইরাসের টিকাকে ‘জনগণের সম্পদ’ হিসেবে ঘোষণা দেয়ায় জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান ড. মোমেন। এই টিকা সবার জন্য সহজলভ্য করতে জাতিসঙ্ঘকে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব হিসাবে প্রথম মেয়াদে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালনের পর দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হওয়ার গুতেরেসকে অভিনন্দন জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রোহিঙ্গা ইস্যুতে অব্যাহতভাবে মনোযোগ দেয়ার জন্য জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, অনেক প্রভাবশালী দেশ মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য প্রকাশ্যে মিয়ানমারের নিন্দা জানালেও ভেতরে ভেতরে দেশটির সাথে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়িয়েছে, যা হতাশাজনক।

মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব বলেন, বিশ্বের সর্ববৃহত শরণার্থী শিবির স্থাপন করতে দেয়ার জন্য বিশ্ব কখনো বাংলাদেশের উদারতাকে ভুলবে না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের বিকল্প আবাসস্থল হিসাবে ভাসানচরকে গড়ে তোলার বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবকে অবহিত করেন। তিনি ভাসানচরে জাতিসঙ্ঘের মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

জাতিসঙ্ঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ সঠিক পথে রয়েছে উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, করোনা মহামারীর কারণে এ খাতে অর্থায়নে কিছুটা বেগ পেতে হতে পারে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরনের পথে থাকা বাংলাদেশকে অব্যাহতভাবে সমর্থন দিয়ে যাওয়ার জন্য জাতিসঙ্ঘের প্রতি আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

জাতিসঙ্ঘের বিশেষ করে উচ্চ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে বাংলাদেশীদের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য গুতেরেসের প্রতি আহ্বান জানান ড. মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরে জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষা ও রাজনৈতিক বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে তারা মিয়ানমারের চলমান রাজনৈতি পরিস্থিতি এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন।

জাতিসঙ্ঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বৈঠক দু’টিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement