২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

দেশের সাথে ফ্লাইট বন্ধ বিপাকে লাখো প্রবাসী

দেশের সাথে ফ্লাইট বন্ধ বিপাকে লাখো প্রবাসী - ছবি : সংগৃহীত

সম্প্রতি করোনাভাইরাসের কারণে বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশের ফ্লাইট যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। হঠাৎ এই সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা লাখ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশী। পাশাপাশি এই সময় ঘুরতে আসা অনেক বাংলাদেশী পর্যটক আটকা পড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। কবে নাগাদ ফ্লাইট চালু হবে সরকারের পক্ষ থেকে এমন কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি। এতে অনিশ্চয়তায় পড়েছে এসব পর্যটক ও প্রবাসী। এ দিকে বেশির ভাগ প্রবাসী বাংলাদেশী থাকেন মধ্যপ্রাচ্যে। হঠাৎ ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে তাদের।

মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে থাকা অনেক প্রবাসী বাংলাদেশীর ভিসার মেয়াদ শেষ ইতোমধ্যে। দেশ থেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কর্মস্থলে গিয়ে ভিসার মেয়াদ বাড়াতে হবে। আবার অনেকে কাজ থেকে ছুটি নিয়েছেন দেশে যাবেন বলে। কিন্তু হঠাৎ ফ্লাইট বন্ধের খবরে প্রবাসে বসেই কাটাতে হচ্ছে সেই ছুটি। অনেকে অসুস্থ, দেশে গিয়ে চিকিৎসা করানোর পরিকল্পনাও করেছিলেন। তাও হচ্ছে না ফ্লাইট বন্ধের কারণে। ফলে সঙ্কটে পড়তে হচ্ছে তাদের।

এ দিকে ঘুরতে আসা বাংলাদেশী পর্যটকদের সমস্যা আরো প্রকট। অনেকের সাথে করে নিয়ে আসা টাকা শেষ ইতোমধ্যে। তাদের মধ্যে অনেকে হোটেল বিল দিতে পারছে না। অনেকে আবার টাকার জন্য খেতেও পারছে না। এ অবস্থায় উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে তাদের এবং দেশে থাকা তাদের পরিবার-পরিজনের। বিদেশের মাটিতে বসে অনিশ্চয়তায় পারছে না ফ্লাইট বুকিং দিতে। সামনে ঈদ আসছে। অনেক প্রবাসী ঈদের সময় ছুটি নিয়ে থাকে। দেশে পরিবার-পরিজনের জন্য অনেকে কেনাকাটা করে ফেলেছেন। কিন্তু দেশে যেতে না পারলে এসব জিনিস নষ্ট হয়ে যাবে। এতে ছুটির পাশাপাশি তাদের টাকাটাও নষ্ট হবে। সব মিলিয়ে এক ভয়ঙ্কর সময় পার করছেন এসব পর্যটকরা।

অন্য দিকে সরকার পাঁচটি দেশের সাথে কিছু ফ্লাইট চালু করেছে। কিন্তু যেসব নিয়ম মেনে টিকিট কাটতে হচ্ছে তাতে টিকিট পাচ্ছে না সবাই। ফলে ভোগান্তি রয়ে গেছে আগের মতোই।

প্রবাসী ও পর্যটকদের দাবি, ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত ফ্লাইট চালু করা হোক। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখে ফ্লাইট চালু হলে কোনো সমস্যা হবে না বলে দাবি প্রবাসী ও পর্যটকদের। অন্যথায় অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবে প্রবাসীরা। এর প্রভাব পড়বে রেমিটেন্সেও। এ সময় সরকার দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী ও পর্যটক।

করোনার মধ্যেও বিশ্বের অনেক দেশে ফ্লাইট চালু অব্যাহত রেখেছে। কারণ ফ্লাইট বন্ধ করলেই করোনা শেষ হয়ে যাবে না। বরং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়ম মেনে ফ্লাইট চালু করার পক্ষে অনেকে। এতে যেমন রেমিটেন্স প্রবাহ অব্যাহত থাকবে তেমনিভাবে প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধ হবে।

আমিরাত প্রবাসী সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম তালুকদার ফ্লাইট বন্ধের বিষয়ে এই প্রতিবেদককে বলেন, গত দুই যুগের বেশি সময় আমি মধ্যপ্রাচ্যের আরব আমিরাতে আছি। এখানে প্রায় ৮ লাখ বাংলাদেশী বিভিন্ন পেশায় কাজ করছেন। এখানকার মানুষের ভোগান্তি আমি নিজ চোখে দেখেছি। দেশে রেমিটেন্স পাঠানোতে আরব আমিরাত তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। দিনরাত পরিশ্রম করে অনেকে অর্থ উপার্জন করছেন, ওই টাকা দেশে পাঠায় তারা। তাদের অনিশ্চয়তা এবং ভোগান্তি কাছ থেকে দেখছি। ফ্লাইট বন্ধ হওয়ায় উদ্বেগের মধ্যে সময় কাটাচ্ছে এসব প্রবাসী।


আরো সংবাদ



premium cement