১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিএসটিআই সনদের গ্রহণযোগ্যতা দিতে কাজ করছে ভারত : দোরাইস্বামী

ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী - ছবি - সংগৃহীত

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেছেন, বাংলাদেশের ভোগ্যপণ্যসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বিএসটিআইয়ের সনদের সত্যয়ন যেন ভারতে গ্রহণযোগ্য হয়,তা নিয়ে ভারত সরকার কাজ করছে। এ বিষয়ে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি মঙ্গলবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি(ডিসিসিআই)’র কার্যালয়ে সংগঠনের সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের সাথে এক দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় এসব কথা বলেন।

হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, বাংলাদেশে উৎপাদিত ভোজ্যতেল অথবা আমাদানিকৃত ভোজ্যতেলের কমপক্ষে ২০ শতাংশ মূল্য সংযোজন করা সম্ভব হলে, তা ভারতে রপ্তানিতে কোন বাঁধা নেই। তিনি বলেন, সমুদ্র পথে ঢাকা হতে দিল্লীতে পণ্য পরিবহনের খরচ অত্যন্ত বেশি, যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং তা কমিয়ে আনতে দু’দেশের ব্যবসায়ীদের সরকারের সাথে আলোচনার পরামর্শ দেন তিনি।

বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, বেনাপোল এবং পেট্রাপোলসহ বাংলাদেশের সকল স্থলবন্দরের ভৌত অবকাঠামো ও প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধার উন্নয়ন আবশ্যক। এ ধরনের সেবার অনুপস্থিতির কারণে পণ্য পরিবহন দীর্ঘসূত্রিতার ফলে ব্যবসা পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পণ্য পরিবহনে রেলপথ ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়ায়, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে রেলপথের ব্যবহার বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশের রেল ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

হাইকমিশনার সিরাজগঞ্জে রেলওয়ের একটি কনন্টেইনার ডিপো স্থাপনের প্রস্তাব করেন। তিনি জানান, বাংলাদেশের আভ্যন্তরীন নৌবন্দর ব্যবহারে ভারত অত্যন্ত আগ্রহী, তবে এর জন্য বিদ্যমান নৌপথের বেশ কিছু জায়গায় নাব্যতা বৃদ্ধিতে ড্রেজিং করা খুবই জরুরী এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু নীতিমালার সংষ্কার প্রয়োজন। কাঙ্খিত মাত্রায় ভারতীয় বিনিয়োগ বাংলাদেশে আকর্ষণ এবং এদেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য তিনি দু’দেশের ব্যবসায়ীদের একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।

আলোচনায় ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান জানান,২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৬ দশমিক ৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ভারতীয় বিনিয়োগ এসেছে ৬৪৫ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন ডলার।

তিনি দু’দেশের বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে বাংলাদেশ হতে ওভেন গার্মেন্টস্, নিটওয়্যার, টেক্সটাইল ফাইবার, হোম টেক্সটাইল প্রভৃতি পণ্য আরো বেশি হারে আমদানির জন্য ভারতীয় উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি আরো বলেন, সরকার দেশে বিনিয়োগ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পাশাপাশি নানাবিধ সুবিধা সম্বলিত বিনিয়োগ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে এবং এ ধরনের সুযোগ গ্রহণ করে অটোমোবাইল,তথ্য-প্রযুক্তি, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পুঁজিবাজার, ঔষধ, খাদ্য ও কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং হালকা প্রকৌশল প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

ডিসিসিআই সভাপতি জানান, ২০১৭ সাল হতে বাংলাদেশের প্রতি টন পাটজাত পণ্য ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে ১৯ থেকে ৩৫১ দশমিক ৭২ মার্কিন ডলারের এন্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যার ফলে ভারতে বাংলাদেশের আমাদের পাট রপ্তানি কমে এসেছে। তিনি এ অবস্থা নিরসনে আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেন।

আলোচনা সভায় ডিসিসিআইয়ের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement