২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বাংলাদেশীদের জন্য দরজা কেন বন্ধ করল ইতালি?

বাংলাদেশীদের জন্য দরজা কেন বন্ধ করল ইতালি? - ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশীদের জন্য ইতালিতে প্রবেশে নিষিদ্ধ করেছে দেশটির সরকার৷ সেই সঙ্গে সেখানকার প্রবাসীরাও এখন স্থানীয়দের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির স্বীকার হচ্ছেন৷

ডয়চে ভেলে বাংলার ইউটিউব টকশো ‘খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়' অনুষ্ঠানে এমন তথ্য জানিয়েছেন ইতালিপ্রবাসী সাংবাদিক পলাশ রহমান৷ তিনি বলেন, ইতালিতে বাংলাদেশিদের সুনাম ছিল৷ কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় দেশটির গণমাধ্যমে বাংলাদেশীদের নিয়ে ফলাও করে সংবাদ প্রচার হয়েছে৷ যার কারণে সেখানকার স্থানীয়রা এখন প্রবাসীদের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখছেন৷

সম্প্রতি বিশেষ ফ্লাইটে ইতালিতে ফিরেছেন কয়েক শ' বাংলাদেশী৷ পলাশ বলেন, ‘‘প্রথম দুইটা ফ্লাইট যখন রোমে অবতরণ করে, ওই যাত্রীদের তখন ১৪ দিনের হোম কোয়ারান্টিন করে বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল৷ কারণ তারা জানিয়েছে যে তারা বাংলাদেশ থেকে পরীক্ষা করে এসেছেন৷ কিন্তু এক সপ্তাহের মধ্যে দেখা গেল বাংলাদেশী কমিউনিটিতে করোনা সংক্রমণ ব্যাপক আকারে বাড়তে শুরু করলো৷ তখন ইতালির প্রশাসন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ থেকে এরপর যে দুইটা ফ্লাইট আসে তাদের জন্য এয়ারপোর্টেই পরীক্ষার কড়াকড়ি আরোপ করে এবং সেখানে ১৩ শতাংশ যাত্রীর মধ্যে করোনা পজেটিভ পাওয়া যায়৷''

তিনি বলেন, আগে ফিরে আসাদের অনেকেই দেশটির কোয়ারান্টিনের নিয়ম মানেননি৷ অনেককে পরে পুলিশ গিয়ে তাদের দেয়া ঠিকানায় খুঁজে পায়নি৷ এমন তিনজনের নামে পরে বিজ্ঞপ্তি দেয় ইতালির পুলিশ ৷ এছাড়াও রোমে একজনকে পুলিশ ট্রাম স্টেশন থেকে গ্রেফতার করে৷ তিনি ১৪ দিনের হোম কোয়ারান্টিন অমান্য করে কয়েকটি শহর ঘুরেছেন৷ এর মধ্যে তিনি প্রায় এক হাজার কিলোমিটার অতিক্রম করেছেন৷

সাত জুন বাংলাদেশ থেকে আসা সব ফ্লাইট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির সরকার৷ বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশে ছিলেন বা ভ্রমণ করেছেন এমন কাউকেই দেশটিতে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না, শুক্রবার নতুন এই সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়েছেন ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷ এই পরিস্থিতি কিভাবে কাটিয়ে উঠা যায়া এমন প্রশ্নের জবাবে পলাশ বলেন, ‘‘বিষয়টি এখন আর বাংলাদেশী কমিউনিটির উপর নির্ভর করছে না৷ এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় সেটা হচ্ছে আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতা৷ ইতালির সরকারের সাথে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগটা বাড়াতে হবে৷ এবং তাদের যে ক্ষোভের জায়গাটা সেখানেই মনোযোগ দিতে হবে৷ তাদের সাথে সঠিকভাবে যোগাযোগটা করতে হবে, তাদেরকে বোঝাতে হবে মূল ব্যাপারটা কী৷’’

তিনি বলেন, স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলেছেন যে করোনার নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে৷ এ ধরনের কোথায় বাংলাদেশী কমিউনিটির বিরুদ্ধে স্থানীয়দের উস্কে দেয়া হচ্ছে৷ তার মতে, বাংলাদেশের সক্ষমতার যে অভাব ছিল সেটা না লুকিয়ে ভুল স্বীকার করা উচিত৷

অনুষ্ঠানের আরেক অতিথি হিসেবে গণস্বাস্থ্যের গবেষক দলের প্রধান ড. বিজন কুমার শীল৷ তাদের উদ্ভাবিত কিটের পরীক্ষার ফলাফল সম্পর্কে তার কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়৷ তিনি বলেন, ‘‘এই সমস্ত পরীক্ষায় যে থার্ড পার্টির পদ্ধতিটা অনুসরণ করবে সেটি বাংলাদেশে আগে ছিল না৷ ইউএসডিএ এফডিএ-এর গাইডলাইন ওনারা এডাপ্ট করেছে ১৪ তারিখে৷ কিন্তু আমাদের স্টাডিটা তার আগেই হয়ে গিয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ পরে আমাদের যখন এটা অনুসরণ করতে বলা হয়েছিল তখন আমাদের কিছুটা দেরি হচ্ছে এজন্য৷ আমাদের নতুন করে আরেকটা স্টাডি করতে হবে৷ আমরা আমাদের ল্যাবরেটরির কাজ শেষ করেছি৷ এখন থার্ড পার্টি কাজটা করবে৷ একইভাবে এন্টিজেনের ক্ষেত্রেও কোনো গাইডলাইন ছিল না৷ আরেকটা গাইডলাইন তারা করেছে৷ দুটি পরীক্ষাই এখন নতুন করে করতে হবে৷ যেটা থার্ড পার্টি করবে যে এটা কতটা গ্রহণযোগ্য হবে৷’’
সূত্র : ডয়চে ভেলে

 


আরো সংবাদ



premium cement