২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬ আশ্বিন ১৪৩০, ০৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিজরি
`

এখন কৃষ্ণচূড়ার দিন

-

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব লীলাভূমি আমাদের এই বাংলাদেশ। সুজলা, সুফলা, শস্য-শ্যামলা, রতœধারিণী, চিত্রময়ী বাংলাদেশ। এ দেশে বনে বনে ফুলের সমারোহ, কাননে-কান্তারে সবুজের আল্পনা। অপূর্ব রূপ আর অফুরন্ত সম্ভার নিয়ে এখানে একের পর এক আবর্তিত হয় ছয়টি ঋতু। ঋতুচক্রের আবর্তনে নয়নাভিরাম ফুলের এক বর্ণিল আয়োজন নিয়ে আমাদের প্রকৃতিতে আবার হাজির হয়েছে প্রথম ঋতু গ্রীষ্মকাল।
ফুলের কথা উঠলে প্রথমেই আসে ঋতুরাজ বসন্তের কথা। কিন্তু গ্রীষ্মকালেও ফোটে নানা রঙের বাহারি ফুল। প্রচণ্ড দাপদাহে কিছুটা হলেও প্রশান্তির পর আলতো পরশ বুলিয়ে দেয় এসব ফুল। মন মাতানো কৃষ্ণচূড়া এদের মধ্যে অন্যতম।
গ্রীষ্মের এই সময়ের আগুন রাঙা ফুল হিসেবে যাকে জানা হয় তা হচ্ছে এই কৃষ্ণচূড়া। এই গাছটি মূলত পুরোটাই ফুলে পরিপূর্ণ। তবে ফুলগুলো গুচ্ছ আকারে চোখে পড়ে। বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় উদ্ভিদের মধ্যে একটি কৃষ্ণচূড়া। কৃষ্ণচূড়া গাছ একটি বড়, প্রস্ফূটিত, পর্ণমোচী উদ্ভিদ। গাছটি আকর্ষণীয় এবং হালকা সুগন্ধযুক্ত। কৃষ্ণচূড়া গাছের বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া। কৃষ্ণচূড়া গাছটি একটি বিস্তৃত মুকুটসহ একটি বিশাল আলংকারিক পর্ণমোচী গাছ। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় পরিবেশের সবচেয়ে দুর্দান্ত ফুলের গাছ গুলির মধ্যে একটি, এর সৌন্দর্য অপরূপ। কৃষ্ণচূড়া গাছ এক একটি প্রায় ১৫-২০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। বাতাসের দোলায় এর ফুল ঝরে পড়ে। এই ফুলের পাপড়িগুলো চারটি পাপড়ির সমষ্টি দিয়ে গঠিত। কৃষ্ণচূড়ার আদি নিবাস পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কার। ক্যারাবিয়ান অঞ্চল, আফ্রিকা, হংকং, তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন, বাংলাদেশ, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটি জন্মে থাকে। পার্কে, উদ্যানে, লেকের পাড়ে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে, সড়কের পাশে সবখানেই তার কমবেশি সমাবেশ। পত্রহীন ডালপালাজুড়ে ফুটে থাকা কৃষ্ণচূড়া দূর থেকে স্বাগত জানায় পথিককে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়
‘ডাক দিয়ে যায় পথের ধারের কৃষ্ণচূড়ায়’।
বাংলা কাব্য, সাহিত্য, সঙ্গীত, বিভিন্ন উপমায় কৃষ্ণচূড়া ফুলের কথা ব্যাপকভাবে উঠে এসেছে। কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন-
‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মন্জুরি কর্ণে
আমি ভুবন ভোলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে।’
আমাদের দেশে দুই ধরনের কৃষ্ণচূড়া ফুল ফুটতে দেখা যায়। একটি আগুনের মতো উজ্জ্বল লাল অন্যটি লাল হলদেটে। তবে লাল কৃষ্ণচূড়ার প্রাচুর্যটাই বেশি চোখে পড়ে। লাল হলদেটে রঙের কৃষ্ণচূড়া বর্তমানে বেশ বিরল।


আরো সংবাদ



premium cement