দিগন্ত সাহিত্যিক কবিতা
- ১২ মে ২০২৩, ০০:০০
কাবেদুল ইসলাম
যে তুমি ঘাতক কাঁটারও অধিক
যে তুমি অদৃশ্য হন্তারক হয়ে বিদ্ধ করো কাঁটা,
ঘাতকের অধিক তা, যেন শূল বিঁধে অহরহ
ছিন্নভিন্ন করে দেয় আমাকে আমূল। কাঠফাটা
রৌদ্রে দগ্ধ শূন্য প্রান্তরও নয় এত দুর্বিষহ।
চোখ মেলে তাকাবো চৌদিকে এতই অগ্নিদাহ;
অগ্নিদাহ নয়, তোমারই তাণ্ডব হৃদয়জুড়ে।
জানি না কোন সে সুদূরের অতলান্ত হিমবাহ
আনবে তুষার ঝড় বিনাশের মেঘমালা ফুঁড়ে!
অপরাহ্ণে যখন দিনের আলো ক্ষীণ হয়ে আসে,
পাখিরাও ফেরে খড়-কুটো মুখে নিজস্ব কুলায়ে,
আমারও ইচ্ছে করে ফিরি, তোমারই সে-আলয়ে,
চঞ্চুতে না হোক, আনি দু’হাতের মুঠোয় কুড়ায়ে
যে বিশুষ্ক শস্যদানা, তা নিয়েই বুকের আশ্রয়ে
দিয়ো ঠাঁই, যখন ফুটবে তারা রাতের আকাশে।
জসীম উদ্দীন মুহম্মদ
আমার পরিচয়
আমাকে এখন আর দুঃখ ভাড়া করতে হয় না
আঙিনা থেকে আমাজান..রোদ থেকে বৃষ্টি,
হ্রাস থেকে বৃদ্ধি এরা সবাই একই সমান!
আমি তাকাই আমার পা থেকে মাথা...
মাথার উপরিভাগ থেকে প্রথম আসমান
কোথাও নেই আমার এতটুকু সঞ্চিত ছামান!
তবুও আমি ভাবি আমার ভেতর-বাহির .....
আমাকে জড়িয়ে আছে এ কার সন্তুষ্টির চাদর?
আশায়, ভালোবাসায় অথবা উৎকণ্ঠায়
আমি তবে কার... কে আমার?
আমি জানি আমি কোনো দিন মহাসমুদ্র নই
আমি কোনো দিন মহাবৈভবী মহাআলোকও নই
আবার আমি এদের থেকে পৃথক কিছুও নই!!
তাহলে কে আমি? আমার বিষয় আশয়....?
এই কী তবে আমার সত্যিকারের পরিচয়?
তাসনীম মাহমুদ
আত্মার দারিদ্র্যে মাগফিরাত
রক্তরেখার মতো সূর্যের মাতাল ভালোবাসা
গলে পড়ছে অবনী পর’ গাছের পাতায়
দোল নেই; পাখির ডাকে সুর নেই। তৃষ্ণায়
খাবি খাচ্ছে অনাহারি রোনাজারির শুষ্ক ঠোঁট
গুলমোহর; চেয়ে আছে দ্যাখো টকটকে লাল
অথচ আমাদের চিন্তা বস্ত্রকৃপণ নর্তকীর দেহ পর্যন্ত
আমাদের জীবন মাছি ভনভনের শব্দের মতো...।
কবে আমাদের আত্মার দারিদ্র্য মাগফিরাত কামনা করবে
আর ভেসে যাবে প্রেমময় নূরের আলিশান বিভায়?
পৃথিবী তো এখন জালিমের প্রিয়তমা
আর আমরা হয়েছি সে প্রিয়তমার নিকটতম দাস।
অথচ আমার সৌরভ কি সেই জুলুমের শবদাহ ছিল না?
আমার সৌরভ কি ঘনরাতে ইউফ্রেটিসের স্রোত সাঁতরে
অন্ধকারে ফোঁটায় নি আলো? নিরীহ কাকও জানে
কিভাবে উপড়ে ফেলতে হয় নীতিবিরুদ্ধ তীর্থ!
অথচ আমরা আমাদের দুলদুল; কারবালা আজও চিনিনি।
আমরা আমাদের ভাই হত্যার বদলা নিতে আজও শিখিনি।
এম এইচ মুকুল
রজনী বিলাস
রাতের আঁধার কারো কারো দেখি
কামনা বিলাসে ভরে,
ভুলে যায় পিছু হয় নাতো ফেরা
জীবনের বাতিঘরে।
আঁধারেই খুঁজে সুখ রাশিরাশি
মিটিয়ে মনের ক্ষুধা,
কলঙ্ক মাখে নিজ অবয়বে
লুফে নেয় প্রেম সুধা।
জাত গেল নাকি জাত গেল নাকি
নাই মনে কোনো ভয়,
মনের সুখেতে মন মজে গেলে
জাতপাত কিছু নয়।
আঁধারের বুকে অন্তরঙ্গ
দিবালোকে তার ছায়া,
শত চোখে ভাসে রাতের সে ছবি
লাজে ঢাকে তার কায়া।
আহসান হাবিব সিরাজী
সুখের আশা
সুখের আশা করে করে
চোখের অশ্রু ঝরে ঝরে
করছি জীবন পার,
সুখ হলো যে মরীচিকা
বসত তাহার অট্টালিকা
পাইনি দেখা তাঁর।
তবু তারে খুঁজে চলি
তাহার কথা কত বলি
আমি বারেবার,
তাহার খোঁজে ক্লান্ত দেহ
ঠিকানাটা দেয় না কেহ
কোথায় খুঁজি আর।
অর্ধজীবন পার করেছি
কত লোকের হাত ধরেছি
যদি তারে পাই,
এই পৃথিবী আমার চোখে
যত কথাই বলুক লোকে
সুখ যে কোথাও নাই!
নাদিরা বেগম
সময়ের ব্যবধান
দিনের শেষে যখন সন্ধ্যা নামে
অন্ধকারে ঢেকে আসে চার দিক
জীবণ বাতি নিভু নিভু
ভালোবাসা কর্পূরের মতো ওড়ে।
ঘড়ির কাঁটার সময় বদলের সাথে সাথে
মন উজাড় ভালোবাসা হারিয়ে
নিজেই ভালোবাসার কাঙাল সাজে
ভালোবাসা রঙ বদলে রঙচটা ফ্যাকাশে।
একটু খানি দয়া দাক্ষিণ্য করুণা বাজে
ভাঙা কলের গানে করুণ সুরে
রক্তের ঋণ যারা বয়ে বেড়ায় তাদের
অবহেলা অপমান নিরবে সহ্য করে
মেনে নিতে হয় তাদের এই মহৎ গুণ।
জীবন কালে পরিবর্তন মনে বিদ্রোহ করে
বিদ্রোহের আগুন নিজেই যায় নিভে
ব্যক্ত করার আশা ভাষা হারিয়ে যায়
সময়ের ব্যবধানে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা