২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

শিল্পশিক্ষার প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠার গল্প

শিল্পশিক্ষার প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠার গল্প -


বাংলাদেশে শিল্পশিক্ষার প্রতিষ্ঠান- চারুকলা কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা করতে হলে ফিরে যেতে হবে অখণ্ড ভারতের অবিভক্ত বাংলায়। অর্থাৎ পশ্চিম বাংলায়। কারণ পূর্ববাংলা তথা বাংলাদেশে কলেজ প্রতিষ্ঠার সাথে পশ্চিম বাংলা তথা কলকাতার গভীর সম্পর্ক আছে। ১৮ শতকের শেষদিকে ইংরেজ চিত্রশিল্পী হোন সাহেব কর্তৃক ক্যালকাটা গেজেটে একটি বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়েছিল। সেই বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, যারা শিল্পশিক্ষা নিতে ইচ্ছুক তারা যেন তার সাথে যোগাযোগ করেন। যখন এ বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয় তখন কলকাতায় শিল্পশিক্ষার কোনো প্রতিষ্ঠান ছিল না। ১৮৩৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ইংল্যান্ডের মেকানিক্স ইনস্টিটিউশনের আদলে কলকাতায় স্থাপন করা হয় ‘মেকানিক্স ইনস্টিটিউশন’। তবে এ প্রতিষ্ঠান বেশি দিন চলেনি। এরপর ১৮৫৪ সালের ১৬ আগস্ট ‘দ্য স্কুল অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল আর্ট’ নামে একটি শিল্প শিক্ষার প্রতিষ্ঠানের জন্ম হয়। ২৮ জন ছাত্র নিয়ে এই প্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরু করে। এরপর আর যে প্রতিষ্ঠানের নাম জানা যায় তার নাম দ্য জুবিলি আর্ট আকাদেমি। তবে কলকাতার ‘সরকারি আর্ট কলেজ’ এবং এর ৩০ বছর পর প্রতিষ্ঠিত ‘ইন্ডিয়ান কলেজ অব আর্ট অ্যান্ড ড্রাফটম্যানশিল্প’ এবং শান্তিনিকেতনের কলাভবনকেই অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে।


‘কলকাতার সরকারি শিল্প বিদ্যালয়’ স্থাপিত হয় ১৮৬৩ সালে। কালুটোলার একটি বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয় পরবর্তী সময়ে বহুবাজার স্ট্রিটে ১৬৪ নম্বর বাড়িতে স্থানাস্তর হয়। ১৯৬৪ সালে হেনরি হোবার লক প্রথম অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। প্রথম পর্যায়ে এই বিদ্যালয়টিতে ছিল ‘ডিপার্টমেন্ট অব হায়ার ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং। পরে অধ্যক্ষ হেনরি হোবার লক বিভাগকে ঢেলে সাজান এবং এই বিভাগটিতেই নতুন করে যুক্ত করেন ‘ওয়েল পেইন্টিং’, ‘ওয়াটার কালার’, ‘ড্রইং’, ‘কাস্ট-ড্রইং’ এবং ‘লাইফ স্টাডি’। হেনরি হোবার লক লন্ডনের কেংসিংটন স্কুল অব ডিজাইন ও রয়্যাল একাডেমির পাঠক্রম কলকাতার সরকারি বিদ্যালয়ে চালু করেন।
ব্রিটিশ পণ্ডিত ই বি হ্যাভেল ১৮৯৬ সালে সরকারি বিদ্যালয়টির অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি বিদেশী হলেও ছিলেন ভারতপ্রেমিক। ছিলেন শিল্পী ও শিল্পরসিক। ভারতপ্রেমী ছিলেন বলেই তিনি পশ্চিমা ধারার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের ভারতীয় পরম্পরার বিষয়টি বুঝাতে সচেষ্ট হয়েছিলেন। ব্রিটিশ সরকার তাদের পশ্চিমা শিক্ষাক্রম চাপিয়ে দিলেও হ্যাভেল সাহেব অতি সন্তর্পণে কৌশলে ভারতীয় ধারা রক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। ভারতীয়রা নিজেদের সংস্কৃতি সংশ্লিষ্ট ধারা পরিত্যাগ করে পশ্চিমা ধারায় ডুবে যাক এটি তিনি কোনোভাবেই কামনা করেননি। যে কারণে পশ্চিমা ধারায় আঁকা রাজা রবি বর্মার চিত্রের কঠিন সমালোচনা করেছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেয়ার পর সরকারি বিদ্যালয় গ্যালারি থেকে সব পশ্চিমা ধারার চিত্রকর্ম নামিয়ে প্রাচ্যধারার চিত্র দিয়ে গ্যালারি সাজিয়েছিলেন।


কলকাতার সরকারি শিল্পবিদ্যালয়টি কয়েক পর্ব অতিক্রম করে পঞ্চম পর্বে এসে প্রচণ্ড আন্দোলনের মুখে পড়ে। এ সময় অর্থাৎ ১৯৪৫ সালে যখন অতুল বসু অধ্যক্ষ তখন এই আন্দোলনের সূত্রপাত। শিল্পবিদ্যালয়কে মহাবিদ্যালয়ে রূপান্তর করার দাবিতে এ আন্দোলন গড়ে উঠে। চট্টগ্রামের সোমনাথ হোর ও বিজন চৌধুরী এ আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন। উল্লেøখ্য, এ সময় ভারত ভাগেরও আন্দোলন চরমে। আর এই আন্দোলনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন সোমনাথ হোর। ইংরেজ সরকার ভারত ভাগ করে স্বাধীনতা দিলে একদল তা মেনে নিতে চাননি। তারা বলেছিলেন ‘আজাদী ঝুটা হ্যায়’। স্বাধীনতার বিরোধিতা করা এবং এ আজাদী ঝুটা হ্যায় স্লোগান দেয়ার অপরাধে অন্যদের সাথে সোমনাথ হোরও গ্রেফতার হয়েছিলেন। তখন তিনি তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার্থী। বিদ্যালয়টির ষষ্ঠ পর্বে এসে সরকারি শিল্পবিদ্যালয়টি ‘সরকারি চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়’ নাম ধারণ করে (বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ)। এই নামকরণ এবং স্বাধীন ভারতের আন্দোলনের সময়টিতে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন এই মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করছিলেন। সেই সুবাদে তিনি সোমনাথ হোরের শিক্ষক ছিলেন। ভারত ভাগের পর চট্টগ্রামের কৃতী সন্তান ভারতের বিখ্যাত শিল্পী সোমনাথ হোর ভারতেই থেকে যান। আর পূর্ববাংলার কৃতী সন্তান জয়নুল আবেদীন পাকিস্তানের পূর্বাংশ অর্থাৎ পূর্বপাকিস্তানে ফিরে আসেন এবং ঢাকায় শিল্পশিক্ষার প্রতিষ্ঠার কাজে আত্মনিয়োগ করেন।


বাংলাদেশের মহান শিল্পী জয়নুল আবেদনী বাংলার রূপদ্রষ্টা, বাংলার মানুষের অতি আপনজন, গ্রাম বাংলার রূপকার, মানবদরদি এমন বহুল বিশেষণে স্নাত। যার উদ্দেশে এই বিশেষণ সেই নম্র, ভদ্র ও সরল মানুষটি বাংলার মুনষের একান্ত ভালোবাসার জগতে সুপ্রতিষ্ঠিত। শিল্পাচার্য বাংলার মানুষের একান্ত ভালোবাসার জগতে সুপ্রতিষ্ঠিত। শিল্পাচার্য হিসেবে নন, শিল্পী হিসেবে নন, সংগঠক হিসেবে নন, শিক্ষক হিসেবেও নন, বাংলার একজন দরদি মানুষ হিসেবে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মানুষ। তিনি বাংলার আদর্শ পুরুষ, বাংলার গৌরব। তার জন্ম ময়মনসিংহের গ্রামেই (১৯১৪)। শৈশবে গ্রাম দেখেছেন, গ্রামে থেকেছেন, গ্রামের পাশে দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদ দেখেছেন, দেখেছেন গ্রামের সহজ ও সরল রমণীদের অবগাহন করতে। আর এসব স্মৃতির কথা আজীবন স্মরণে রেখে ছিলেন। স্মরণীয় এ সব গ্রামীণ দৃশ্য ক্যানভাসে ধরে রাখার অদম্য বাসনা নিয়ে তিনি কলকাতায় পাড়ি জমিয়েছিলেন শিল্পশিক্ষা প্রয়োজনে। তিনি শুধু যে শিল্পশিক্ষা নিয়েছেন তা নয়। তিনি পশ্চিমবাংলার শিল্প সংস্কৃতির জগতকেও পর্যবেক্ষণ করেছেন গুরুত্বের সাথে। পর্যবেক্ষণ করেছেন প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের চিত্রচর্চার পার্থক্য। পর্যবেক্ষণ করেছেন ব্রিটিশ বেনিয়াদের রাজনৈতিক ধারা, তাদের সহায়তায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন শিল্পশিক্ষার প্রতিষ্ঠান, আট গ্যালির ভূমিকা এবং শিল্পীদের নিয়ে গোড়ে ওঠা সংগঠন সবই লক্ষ করেছেন নিজ অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করার প্রয়োজনে। যে অভিজ্ঞতাকে তিনি কাজে লাগিয়েছেন ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতাপ্রাপ্ত পূর্ববাংলার প্রত্যাবর্তনের পর।


কলকাতা সরকারি চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে পশ্চিম বাংলায় যেমন ক্ষণস্থায়ী কিছু শিল্পশিক্ষার প্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া যায় পূর্ববাংলাতেও তেমনি একটি শিল্পবিদ্যার প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠার তথ্য পাওয়া যায়। যাকে বংলাদেশের প্রথম চারু শিল্পশিক্ষার প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য করা হয়। প্রতিষ্ঠানের নাম ‘মহেশ্বরপাশা স্কুল অব ফাইন আর্ট’। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা শিল্পী শশিভূষণ পাল। তিনি খুলনার মানুষ। খুলনায় প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানটি পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের অনুরূপ হওয়ায় এবং আধুনিক ধ্যানধারণা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেনি। তবে প্রতিষ্ঠানটি বেশ কিছুদিন টিকে ছিল বলে জানা যায় এবং একপর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় ওই শিক্ষায়তনে যারা শিক্ষা নিয়েছিলেন তাদের এবং তাদের শিল্পকর্ম সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায় না। জানলে কেউ কেউ বিচ্ছিন্নভাবে জানেন এবং বিষয়গুলো প্রকাশ্যে আসেনি। মহেশ্বরপাশা স্কুল অব আর্ট ১৯০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে জানা যায়। ১১৯ বছর আগের ক্ষণস্থায়ী এবং বহুল প্রচারিত না হওয়ায় এ প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে অজানাই থেকে গেছে। এ জন্য ১৯৪৭-এর ভারত ভাগের পর প্রতিষ্ঠিত ঢাকার বর্তমান চারুকলা অনুষদকেই প্রথম প্রতিষ্ঠান হিসেবে গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে। যেমনটি কলকাতা সরকারি চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে হয়েছে।


রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় নানাবিধ সমস্যার কারণে ভারত ভাগের পর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন স্বাধীন পাকিস্তানের পূর্বাংশ পূর্বপাকিস্তান তথা পূর্ববাংলার ঢাকায় চলে আসেন। তার সাথে চলে আসেন আনোয়ারুল হক, শফিউদ্দিন আহমদ, খাজা শফিক আহমদসহ আরো অনেকে। প্রত্যেকে শিল্পশিক্ষা নিয়ে ঢাকায় এলেন, কিন্তু ঢাকায় বা দেশের অন্য কোথাও কোনো শিল্পশিক্ষার প্রতিষ্ঠান ছিল না। ফলে তাদের কেউ কেউ ঢাকার বিভিন্ন স্কুলে ড্রইংয়ের শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হলেন। যেমন- নরমাল স্কুল, সরকারি হাই স্কুল, ট্রেনিং কলেজ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রভৃতি। কলকাতা ফেরত শিল্পীদের জন্য একটি স্থিতাবস্থা প্রয়োজন ছিল। ফলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পর শিল্পাচার্য জয়নুলের নেতৃত্বে তারা ঢাকায় একটি শিল্পশিক্ষার প্রতিষ্ঠান তৈরির কাজে মনোনিবেশ করলেন। যোগযোগ করলেন কবি, সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীদের সাথে। শুধু তাই নয়, তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের শিল্পীদের সাথেও যোগাযোগ করেছিলেন এবং ব্যাপক সমর্থন পেয়েছিলেন। জোরালো সমর্থন পেয়েছিলে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম মাস্টার পেইন্টার পাকিস্তানের বিখ্যাত শিল্পী আব্দুর রহমান চুখতাইয়েরও। নতুন দেশ, নতুন উদ্যোগ, এ জন্য প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সবার স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতার মাধ্যমে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় সবার স্বপ্নের চারুকলা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যার নাম দেয়া হয় ‘গভর্নমেন্ট আর্ট ইনস্টিটিউট’। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় পুরান ঢাকার জনসন রোডের ন্যাশনাল মেডিক্যাল স্কুলের দু’টি কক্ষে। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ইনস্টিটিউটে প্রথম পর্যায়ে দু’টি বিভাগ চালু করা হয়। এর একটি ফাইন আর্ট (বর্তমানের ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগ)। অপরটি হলো কমার্শিয়াল আর্ট (বর্তমানের গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগ)। এই দু’টি বিভাগসহ জনসন রোডে কার্যক্রম চলে প্রায় চার বছর। এরপর প্রতিষ্ঠানটি স্থানান্তরিত হয় সেগুন বাগিচায় (বর্তমান বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পূর্ব দিকে)। এখানে কার্যক্রম চলে ১৯৫২ থেকে বর্তমান শাহবাগস্থ চারুকলা অনুষদ প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত। শাহবাগস্থ বর্তমান চারুকলা অনুষদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন পাকিস্তানের গভর্নর। প্রতিষ্ঠানটির নকশা প্রস্তুত করেছেন বিখ্যাত স্থপতি মাযহারুল ইসলাম। এই বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করেছিল (জনসন রোডে) মাত্র ছয়জন শিক্ষক নিয়ে। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ। ১৯৫৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হলেও শাহবাগের নিজস্ব ভবনে প্রতিষ্ঠানটি স্থানান্তরিত হয় ১৯৫৬ সালে। প্রথম পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটিতে চালু ছিল ডিপ্লোমা কোর্স (পাঁচ বছরের সার্টিফিকেট কোর্স)।


প্রায় সাড়ে ১১ বিঘা জমির উপর প্রতিষ্ঠিত গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউট অব আট একটি প্রথম শ্রেণীর সরকারি কলেজে রূপান্তরিত হয় ১৯৬৩ সালে। নাম হয় ‘পূর্বপাকিস্তান চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়।’ সাথে সাথে আগের পাঁচ বছরের ডিপ্লোমা কোর্সের পরিবর্তে চালু হয় দুই বছরের প্রি-ডিগ্রি কোর্সসহ বিএফএ ডিগ্রি কোর্স। স্বাধীনতার পর অবশ্য প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন হয়ে ‘বাংলাদেশ চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়’ হয়। এরও দীর্ঘদিন পর অর্থাৎ ১৯৭৮ সাল থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি (এমএফএ) চালু হয় মাত্র তিনজন ছাত্রছাত্রী নিয়ে। তিনজন হলেন- প্রাচ্যকলা বিভাগের লেকচারার মো: আব্দুস সাত্তার, ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগের জাকিয়া আজিজ ও মৃৎশিল্প বিভাগের আক্তারুন নাহার। প্রথম পর্যায়ে যারা শিক্ষকতা করেছেন তারা হলেন- সৈয়দ আলী আহসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. সিরাজুল ইসলাম, বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, তৎকালীন জাদুঘরের মহাপরিচালক ড. এনামুল হক ও আব্দুল মতিন সরকার।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হস্তান্তর করা হলে এই প্রতিষ্ঠানের নাম হয় ‘চারুকলা ইনস্টিটিউট’ (১৯৮৩, ১ সেপ্টেম্বর)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্তির পর সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে শুরু হয় অনার্স বা সম্মান কোর্স (১৯৯২-৯৩)। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি চারুকলা অনুষদ নামে পরিচিত।
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন শিল্পশিক্ষার প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেই ক্ষান্ত হননি। তিনি ঢাকায় শিল্প আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘ঢাকা আর্ট গ্রুপ’ নামে একটি শিল্পী সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই সংগঠনের সভাপতি ছিলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন এবং সহ-সভাপতি ছিলেন আনায়ারুল হক, সফিউদ্দিন আহমদ, সৈয়দ আলী আহসান ও অজিত গুহ। সেক্রেটারি ছিলেন কামরুল হাসান। তৎকালীন গভর্নর ফিরোজ খান নুনের স্ত্রী (ইংরেজ মহিলা) এই সংগঠন প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন।

 

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন ইসলামের বিজয়ই বদরের মূল চেতনা : ছাত্রশিবির পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের মৃত্যু : বিশ্বব্যাংক নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’ পুকুরে পাওয়া গেল ১০০ ইলিশ অবন্তিকার আত্মহত্যা : জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবারো নামঞ্জুর

সকল